প্রকাশিত:বুধবার, ০৩ আগ ২০১৬ ১১:০৮
রহিম বাদশা, চাঁদপুর ॥
চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী লবণ শিল্পে ধস নেমেছে। এক সময় ৪০টি লবণ মিল থাকলেও এখন তা ৪টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। এতে একদিকে বেকারত্ব হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক শ্রমিক অপরদিকে মাত্র শতাধিক শ্রমিককে স্বল্প পারিশ্রমিকে জীবনধারণ করতে হচ্ছে। যে ক’টি লবণ মিল চালু রয়েছে তাও চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
নৌপথকে ঘিরে একসময় বেশ কর্মচাঞ্চলতা ছিল দেশব্যাপী খ্যাত চাঁদপুরের পুরানবাজারের ঐতিহ্যবাহী লবণ শিল্প। সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল থেকে আমদানিকৃত কাঁচা লবণ এখানকার বিভিন্ন লবণ মিলে প্রক্রিয়াজাত করে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হতো। এখন সেই ঐতিহ্যে ভাটা পড়েছে।
চাঁদপুরের পুরানবাজার এলাকায় ৪০টি লবণ মিল ছিল। এর মধ্যে ৪টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি ৩৬টি লবণ মিল নিয়মিত চালু ছিল। এসব চালু মিলে আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদনের জন্য ইউনিসেফের সহযোগিতায় বিসিক প্রতিটি লবণ মিলে সাড়ে ৭ লাখ টাকা মূল্যের আয়োডিন মিশ্রিত মেশিন বিনামূল্যে প্রদান করে। মেশিনের মাধ্যমে লবণের আয়োডিন মিশ্রণ করে উৎপাদিত লবণ বাজারজাত করা হতো। এসব মিল থেকে উৎপাদিত লবণ একটু কালচে বর্ণের হওয়ায় ভোক্তারা এ লবন ক্রয়ে বেশি একটা আগ্রহ দেখায় না। বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি ও মেশিনের মাধ্যমে তীর, টাটা, মোল্লা, পূবালী লবণগুলো হাইড্রো কেমিক্যাল দিয়ে লবণ সাদা করে বাজারজাত করছে। সাদা বর্ণের হওয়ায় এসব লবণের প্রতি সাধারণ ভোক্তারা বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। যার ফলে চাঁদপুরের লবণ শিল্পের ব্যবসা দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর একের পর এক লবণ মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ যাবৎ ৩৬টি লবণ মিলের মধ্যে ৩২টি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এ সব বন্ধ মিলে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।
চাঁদপুরে লবণ শিল্পে ধস নামায় আগ্রহ হারিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গুটি কয়েক ব্যবসায়ী এই শিল্পের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। সরকারিভাবে অর্থ সহায়তা না পাওয়া, নদীপথে পণ্য পরিবহনে বেশি সময় ব্যয়সহ নানা কারণে এই ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
লবণ মিলের শ্রমিকরা জানায়, গুটি কয়েক লবণ মিল চালু থাকলেও ভালো নেই শ্রমিকরা। জীবন বাঁচানোর তাগিদে এই শিল্পের সাথে জড়িত থাকা শ্রমিকরা বিভিন্ন সময়ে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কম মজুরীতে জীবনধারণ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে লবণ মিলের কর্মরত শ্রমিকদের। এরপরও জীবন বাঁচানোর তাগিদে তারা এখনো লবণ মিলে কাজ করছেন।
বিসমিল্লাহ সল্ট ফ্যাক্টরীর পরিচালক হাজী মো. বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারী জানান, উৎপাদিত লবণ একটু কালচে হওয়ায় উন্নত প্রযুক্তিতে উৎপাদিত সাদা লবণের সাথে প্রতিযোগিতার বাজারে তাদের টিকে থাকতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক ঋণও পাওয়া যাচ্ছে না নদী ভাঙ্গনের অজুহাতে। যার কারণে আমাদের মিলগুলো যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
জনতা লবণ মিলের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া লবণ মিলের যন্ত্রাংশগুলো এখন অলস অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এসব যন্ত্রাংশ অলস পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বন্ধ লবণ মিলে নেই শ্রমিকদের কর্মচাঞ্চলতা। যে কয়েকটি মিল চালু রয়েছে তা চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। পুরানবাজারের ঐতিহ্যবাহী লবণ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় ব্যাংক ঋণ ও সরকারি সহায়তার প্রয়োজনের কথা জানালেন তিনি।
চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, যে কয়েকটি মিল চালু রয়েছে সেগুলো চালাতেও হিমশিম খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। পুরানবাজারের ঐতিহ্যবাহী লবণ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় ব্যাংক ঋণ ও সরকারি সহায়তার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Head Office :
2152 – B, Westchester Ave,
Bronx, New York 10462
United States Of America.
Tel : 347 656 4623 (News), 718 823 7535 (Office), 929 261 8340 (CEO), 718 823 7538 (Fax).
Email :
report.banglanewsus@gmail.com (News),
riyahdahad@banglanewsus.com (Editorial)
info@banglanewsus.com (Advertisement)
ceo@banglanewsus.com (Event And Others).
First Fully Online Daily For The Worldwide
South Asian Community Jointly Published From
United States Of America, Great Britain
And Canada On Be-Half Of
POSITIVE INTERNATIONAL INC
@ 2014-2020
Developed BY : positiveitusa.com
Design and developed by positiveitusa.com