প্রকাশিত:শনিবার, ১৪ নভে ২০২০ ১২:১১
আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল। শিক্ষার্থীকে তার জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে এ পরীক্ষার গ্রেড দেয়ার ঘোষণা আছে। কিন্তু সেই ফল তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। কারিগরি কমিটি এখন পর্যন্ত চার দফা বৈঠকে বসেছেন। এরপরও চূড়ান্ত করা যায়নি ফল তৈরির মানদণ্ড।
তবে এ নিয়ে প্রাথমিক কাজ থেমে নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল তৈরি সংক্রান্ত উল্লিখিত কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক। তিনি বলেন, ফল তৈরি হবে কিছু মানদণ্ডের ভিত্তিতে, যা নীতিমালা আকারে তৈরি করা হবে। এরপর তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনুমোদনের পরই শুরু হবে ফল তৈরির কাজ।
এক সংবাদ সম্মেলনে ৭ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একইসময়ে তিনি এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে গ্রেড দেয়ার ঘোষণা দেন। এই পরীক্ষার্থীরা ২০১৫ সালে জেএসসি এবং ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করেছে। এবার এইচএসসি ও সমমানে মোট পরীক্ষার্থী ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার এ ফল তৈরি করতে গিয়ে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে প্রথমেই আসে যে দুই পরীক্ষার ভিত্তিতে গড় ফল তৈরি হচ্ছে সেটি। কেননা, জেএসসি পরীক্ষার সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকের বেশিরভাগ বিষয়েরই কোনো মিল নেই। বাংলা, ইংরেজি, আইসিটির মতো তিনটি বিষয়ের সঙ্গে যে মিল আছে, সেটা নিতান্তই প্রাথমিক পর্যায়ের। এটার সঙ্গে এইচএসসির তুলনা ও সম্পর্ক স্থাপন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। অপরদিকে এসএসসি ও দাখিল পাসের পর শিক্ষার্থীদের অনেকেই বিভাগ পরিবর্তন করে। এ ক্ষেত্রে বিজনেস স্টাডিজ ও বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা মানবিক বিভাগে যায়। আবার মাদ্রাসায় দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পাসকরা অনেকে কলেজে ভর্তি হয়ে থাকে। বিভাগ এবং ধারা (মাদ্রাসা ও কারিগরি থেকে কলেজে) পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীদের ফল তৈরিও আরেক চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশ না করে একটি বোর্ডের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা জানান, সাদৃশ্য স্থাপনসহ অন্যান্য সমস্যা থাকার পরও নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ফল তৈরির কাজ তাদের জন্য তুলনামূলক সহজ। কিন্তু জটিলতা তৈরি করেছে গত বছরে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেলকরা, মানোন্নয়ন এবং প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা। এ ছাড়া আছে কারিগরি স্তর, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি, ইংরেজি মাধ্যমের ‘ও’ লেভেল উত্তীর্ণ প্রার্থী। এসব শিক্ষার্থীর ফল তৈরির ক্ষেত্রেও আরেক জটিলতা কাজ করছে। কেননা শেষের তিন স্তরে জেএসসি পরীক্ষা বলতে কিছু নেই। তাদেরকে মূল্যায়নের জন্য দুটি (জেএসসি ও এসএসসি) ফল পাওয়ার সুযোগ নেই। আর গত বছরে বিভিন্ন বিষয়ে ফেল করা, মানোন্নয়ন এবং প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের গ্রেড দেয়ার নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। কেননা, তারা তো একবার এই পরীক্ষা দিয়েছেন। এখন তাদের গত বছরের ফল ফেলে দিয়ে আগের দুই পরীক্ষার ভিত্তিতে গোটা গ্রেড দেয়া হবে না, শুধু ফেলকরা বা ফরম পূরণ করা বিষয়গুলোয় অতীতের নম্বর বা গ্রেড পাওয়ার প্রবণতা দেখা হবে-সেটা নির্ধারণ করা জরুরি। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। এখন এ জন্য নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত দরকার।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক যুগান্তরকে বলেন, কারিগরি কমিটির বিশেষজ্ঞ সদস্যদের সঙ্গে চার দফা বৈঠকে বেশকিছু নির্দেশনা এসেছে। সেগুলোই আমরা নীতিমালা আকারে এক জায়গায় গোছাচ্ছি। আমাদের বহু ক্যাটাগরির শিক্ষার্থী আছে। নিয়মিত বাদে অন্য পরীক্ষার্থীদেরও আমরা গ্রেড দেব। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ জন্য যেসব যৌক্তিকতার আলোকে নীতি ঠিক করা দরকার-সেটা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ তা অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, নীতিমালা তৈরিতে এক মাস পার হলেও থেমে নেই শিক্ষার্থীদের অতীতের দুই পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের দুই পরীক্ষার আলোকে মূল্যায়নের লক্ষ্যে গ্রেড পুঞ্জীভূত করা হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীর ‘তথ্য ঘাটতি’ নেই। বাকিদের ‘মিসিং ডেটা’ ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে মানোন্নয়ন, এক বা একাধিক বিষয়ে কিংবা সব বিষয়ে ফেলকারী, কারিগরি-মাদ্রাসা-ইংরেজি মাধ্যম-উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আছে। এই আট গ্রুপকে মোটা দাগে দু’ভাগ করা হয়েছে। একটি (নিয়মিত) গ্রুপকে শুধু তার এসএসসির ফলের ভিত্তিতে নম্বর প্রাপ্তির প্রবণতা থেকে মূল্যায়নের প্রস্তাব আছে। গত বছর সব বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের নিয়মিতদের কাতারে নেয়ার প্রস্তাবও আছে। এক বা একাধিক বিষয়ে ফেলকরা শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে দুটি প্রস্তাব আছে। একটি হচ্ছে, গত বছরের আংশিক ফল ফেলে দিয়ে তাদেরকে অতীতের দুই পরীক্ষার ফলের আলোকে নিয়মিতদের মতোই মূল্যায়ন করা। আরেকটি হচ্ছে, শুধু ফেলকরা বিষয়গুলোকে মূল্যায়নের জন্য বিবেচনা করা। আর যারা আদৌ জেএসসি পরীক্ষা দেয়নি, তাদেরকে শুধু এসএসসিতে নম্বর প্রাপ্তির প্রবণতা থেকে মূল্যায়ন করা।
উল্লেখ্য, মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে নিয়মিত ১০ লাখ ৭৯ হাজার ১৭১ জন। অনিয়মিতদের মধ্যে এক বিষয়ে ফেলকরা ১৬ হাজার ৯২ জন, ২ বিষয়ে ফেলকরা ৫৪ হাজার ২২৪ জন, সব বিষয়ে ফেলকরা ৫১ হাজার ৩৪৮ জন, মানোন্নয়ন ১৬ হাজার ৭২৭ জন এবং প্রাইভেট পরীক্ষার্থী ৩৩৯০ জন। সাতটি বিষয়ে ১৩টি পত্রে পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজির দুটি এবং আইসিটির একটিসহ ৫ বিষয়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাসহ সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়। বাকিগুলো বিভাগভেদে পছন্দমতো ঐচ্ছিক বিষয় থাকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে আট সদস্যের কমিটি কাজ করছে। এতে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের প্রতিনিধি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সদস্য হিসেবে রাখার ঘোষণা আছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এতে যুক্ত হননি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
Head Office :
2152 – B, Westchester Ave,
Bronx, New York 10462
United States Of America.
Tel : 347 656 4623 (News), 718 823 7535 (Office), 929 261 8340 (CEO), 718 823 7538 (Fax).
Email :
report.banglanewsus@gmail.com (News),
riyahdahad@banglanewsus.com (Editorial)
info@banglanewsus.com (Advertisement)
ceo@banglanewsus.com (Event And Others).
First Fully Online Daily For The Worldwide
South Asian Community Jointly Published From
United States Of America, Great Britain
And Canada On Be-Half Of
POSITIVE INTERNATIONAL INC
@ 2014-2020
Developed BY : positiveitusa.com
Design and developed by positiveitusa.com