প্রকাশিত:শনিবার, ০৫ সেপ্টে ২০২০ ০৭:০৯
পরিস্কার নীল আকাশ। আকাশজুড়ে ভেসে বেড়ায় খন্ড খন্ড সাদা মেঘ। কখনও থেমে থেমে হয় বৃষ্টি। সবুজ মাঠ। কোমল, শান্ত-স্নিগ্ধ প্রকৃতি। পুকুর-খাল-বিল-নদী-নালায় স্বচ্ছ পানি। সেই স্বচ্ছ পানিতে শাপলা ফুলের পাগল করা মিষ্টি হাসি যেন কোনো সুন্দরী রমণীর হাসির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের।
বাংলাদেশের ছয় ঋতুচক্রের তৃতীয় ঋতু হল শরৎ। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস শরৎকাল। আসলে অনুপম সৌন্দর্যের ঋতু শরৎ। শরৎকালে প্রকৃতিতে বিরাজ করে এক অপার্থিব সৌন্দর্য। ঋতুর রাজা যদি হয় বসন্ত, তাহলে শরৎকে বলা হয় ঋতুর রাণী। হ্যাঁ, শরৎ ঋতুর রাণীর মর্যাদা পাওয়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। শরতে ফোটে শিউলী, জবা, কামিনী, জুঁই, কেয়া ইত্যাদি ফুল। তাছাড়া শাপলা-শালুক-পদ্ম আর কাশফুলের ছোঁয়ায় প্রকৃতি যেন জেগে উঠে নব উদ্যমে। এককথায় অসাধারণ সৌন্দর্যে ভরপুর ঋতুর রাণী শরৎ।
প্রকৃতিতে শরতের অপরূপ রুপ দেখে যুগে যুগে মুগ্ধ হয়েছেন কবি-সাহিত্যিকরা। তাইতো সৌন্দর্যের কবি জন কিটস তাঁর ‘ওড টু অটাম’ কবিতায় শরৎবন্দনা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘কুয়াশা এবং রসাল ফল ফালাদির ঋতু/ যৌবনপ্রাপ্ত সূর্যের পরম বন্ধু’ (ভাষান্তরঃ জয়নুল আবেদিন)।
ইংরেজি সাহিত্যের রোমান্টিক যুগের কবি জন কিটস তার ‘শরৎ সঙ্গীত’ কবিতার ২য় স্তবকে শরৎ ঋতুকে কোনো এক সুন্দরী রমণীর সাথে তুলনা করেছেন। কবি বলেন, “তোমাকে কে দেখেনি এ শস্য ভাণ্ডারের মধ্যে?/ মাঝে মাঝে তোমাকে পাওয়া যায় মুক্ত মাঠে/ তুমি অন্যমনা হয়ে বসে থাকো শস্য মাড়াইয়ের মঞ্চে/ তব আললিত চুল, দোলে যে মৃদুল, কুলার বাতাসে/ অথবা অর্ধকর্ষিত ক্ষেতে গভীর ঘুমে তুমি মগ্ন।” (ভাষান্তরঃ জয়নুল আবেদিন)।
কবিতার শেষ স্তবকে তিনি সৌন্দর্যের ঋতু শরৎকে অনুপ্রেরণা দেন এই বলে, “কোথায় বসন্তের গান? হ্যাঁ, কোথায় গেল?/ তাদের কথা চিন্তা করো না/ তোমারও সেরকম সঙ্গীত আছে/ যখন মেঘ ফুটে উঠে, নরম বর্ণিল দিনে।” (ভাষান্তরঃ জয়নুল আবেদিন)
শরৎ ঋতুকে ভালোবেসে, অনুপ্রেরণা দিয়ে কবি বলেন, বসন্ত ঋতুর সৌন্দর্যের কথা যেন না ভাবে শরৎ। কারণ শরতেরও তো নিজস্ব সৌন্দর্য রয়েছে যা বসন্তের চেয়ে কোনোভাবেই কম নয়।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর অসংখ্য রচনায় প্রকৃতির জয়গান গেয়েছেন, জয়গান গেয়েছেন শরৎ ঋতুর। তাইতো তিনি বলেন ‘শরৎ, তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি/ ছড়িয়ে গেল ছাড়িয়ে মোহন অঙ্গুলি/ শরৎ, তোমার শিশির-ধোওয়া কুন্তলে/ বনের পথে লুটিয়ে পড়া অঞ্চলে/ আজ প্রভাতের হৃদয় ওঠে চঞ্চলি।’
শরৎকালের প্রকৃতি ও জ্যোৎস্না রাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, ‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরির খেলা/ নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা/ ওগো শেফালি বনের মনের কামনা/ সকল বন আকুল করে শুভ্র শেফালিকা/ আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ/ শিউলি সুরভিত রাতে বিকশিত জ্যোৎস্নাতে/ শরৎ প্রাতের প্রথম শিশির প্রথম শিউলি ফুলে/ হৃদয় কুঞ্জবনে মঞ্জুরিল মধুর শেফালিকা/’
বলা যায়, রবীন্দ্রনাথের অসংখ্য রচনায় শরৎকালীন প্রকৃতির অপরূপ রূপ কাব্য-সাহিত্যে চিরন্তন হয়ে আছে। ঋতুর রাণী শরৎ অবসাদগ্রস্ত মনে নতুনভাবে প্রেরণা যোগায়। শরৎ যেমন প্রকৃতিকে অপরূপ রূপে সাজিয়ে দেয় তেমনি শরৎ মানুষের ক্লান্তি মোচন করে এনে দেয় নতুন প্রাণ। শরতের মাঠে আমন ধানের সবুজ চারা, কাশবন আর জ্যোৎস্না রাতে প্রিয়জনকে নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার বাসনা যেন প্রবল হয়।
Head Office :
2152 – B, Westchester Ave,
Bronx, New York 10462
United States Of America.
Tel : 347 656 4623 (News), 718 823 7535 (Office), 929 261 8340 (CEO), 718 823 7538 (Fax).
Email :
report.banglanewsus@gmail.com (News),
riyahdahad@banglanewsus.com (Editorial)
info@banglanewsus.com (Advertisement)
ceo@banglanewsus.com (Event And Others).
First Fully Online Daily For The Worldwide
South Asian Community Jointly Published From
United States Of America, Great Britain
And Canada On Be-Half Of
POSITIVE INTERNATIONAL INC
@ 2014-2020
Developed BY : positiveitusa.com
Design and developed by positiveitusa.com