প্রকাশিত:রবিবার, ০৬ ডিসে ২০২০ ০৮:১২
নিউজ ডেস্ক, নিউইয়র্ক জাতীয় ঐতিহ্যের স্মৃতিবাহী লাকসাম নবাব বাড়ি। ব্রিটিশ আমলের কারুকার্য দিয়ে নির্মিত ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ও নারী আন্দোলনের প্রথম অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেছার স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক এ বাড়িটি চমৎকার একটি স্থাপত্য, যা দক্ষিণ এশিয়ার সৌন্দর্যমন্ডিত বাড়িগুলোর অন্যতম। স্মৃতিবিজড়িত এ বাড়িটি বছরের পর বছর অরক্ষিত থাকলেও সাম্প্রতিক এটিকে আকর্ষণীয় প্রত্নপর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বদলে যেতে শুরু করবে বাড়িটি। সৌন্দর্যমন্ডিত বাড়িটি ঘিরে দেখা দিতে পারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা। কুমিল্লা জেলার লাকসাম পৌরশহরের পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেঁষে অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলাভূমি ঐতিহাসিক নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়ির অবস্থান। ঐতিহ্যের ধারক বাড়িটির নির্মাণসাল নিয়ে মতান্তর রয়েছে। কথিত আছে, উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বিয়ের ১৭ বছর পর তিনি জানতে পারেন তার স্বামী হাছান আলী জমিদারের আরেকজন স্ত্রী রয়েছেন। অসাধারণ ব্যক্তিত্ববান, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, দৃঢ়চেতা নবাব ফয়জুন্নেছা এটি মানতে পারেননি। তিনি পৃথক থাকার জন্য সাড়ে ৩ একর জমির ওপর তার বিয়ের কাবিনের ১ লাখ ১ টাকা দিয়ে এই বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়িটি নির্মাণ করতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে। ব্রিটিশ আমলে সিমেন্ট, রড, চুন ও সুরকি দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বাড়ির পশ্চিম পাশেই ১০ গম্বুজবিশিষ্ট একটি অনিন্দ্য স্থাপত্যশৈলীর পারিবারিক মসজিদ রয়েছে। মসজিদের পাশেই রয়েছে পারিবারিক কবরস্থান, যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন নবাব ফয়জুন্নেছাসহ তার বংশধরেরা।
নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন। তিনি এ বাড়িটিতে বসে পর্দার আড়াল থেকে উপমহাদেশের সব বিচারকাজ সম্পাদন, রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজ, স্কুল-মাদ্রাসাসহ যাবতীয় জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন। কালের বিবর্তনে বাড়িটি ঐতিহাসিক বাড়ি হিসেবে দেশ-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। নবাব ফয়জুন্নেছা মৃত্যুর আগে বাড়িটি ওয়াকফ্ করে যান।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়িটি এতই চমৎকার একটি স্থাপত্য, যাকে মনে করা হয় দক্ষিণ এশিয়ার সৌন্দর্যমন্ডিত বাড়িগুলোর অন্যতম। জাতীয় ঐতিহ্যের স্মৃতিবাহী এ বাড়িটি বছরের পর বছর অযত্ন-অবহেলায় শ্রীহীন হয়ে পড়ে। বাড়ির পাশে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ, গাছপালা, বাগান কিছুই এখন তেমনটা চোখে পড়ে না। ভবনের চারপাশ দেখতে অপরিচ্ছন্ন, চুন-সুরকি-ইট-পলেস্তারা খসে পড়ছে। জায়গায় জায়গায় বেরিয়ে এসেছে জংধরা রড, দরজা-জানালা ভেঙে খুলে পড়ছে, কালি ঝুলে আছে দেয়ালের পরতে পরতে। সর্বত্র যেন মলিনতার ছাপ। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে বাড়িটি যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে সৌন্দর্যমন্ডিত এ বাড়িটিকে ঘিরে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর মালিকানাধীন ৪ একর ৫৩ শতক সম্পত্তি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতরকে সংরক্ষণের দায়িত্ব অর্পণ করেছে, যা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এমন ঘোষণায় লাকসামের সাধারণ মহল আনন্দে উদ্বেলিত হলেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অবৈধ দখলদাররা। এ বাড়িকে আধুনিকায়ন করে আকর্ষণীয় প্রত্নপর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হবে বলে সূত্রে জানা যায়। লাকসামে নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়িকে আধুনিকায়নের জন্য ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের আন্তরিকতায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে। ঐতিহাসিক বাড়িটির সংস্কার হলে পর্যটক হৃদয় সিক্ত করবে। হয়ে উঠবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। বাড়িটির আধুনিকায়ন হলে লাকসামে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। অর্জিত হবে রাজস্ব আয়। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী নারী জাগরণের অগ্রদূত। তার স্মৃতি রক্ষায় ইতিমধ্যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে নবাব বাড়িকে আকর্ষণীয় প্রত্নপর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রায় ৯ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ায় রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হওয়ার পরপরই সংস্কার কাজ শুরু হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রত্নপর্যটনে লাকসাম হবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান।
Head Office :
2152 – B, Westchester Ave,
Bronx, New York 10462
United States Of America.
Tel : 347 656 4623 (News), 718 823 7535 (Office), 929 261 8340 (CEO), 718 823 7538 (Fax).
Email :
report.banglanewsus@gmail.com (News),
riyahdahad@banglanewsus.com (Editorial)
info@banglanewsus.com (Advertisement)
ceo@banglanewsus.com (Event And Others).
First Fully Online Daily For The Worldwide
South Asian Community Jointly Published From
United States Of America, Great Britain
And Canada On Be-Half Of
POSITIVE INTERNATIONAL INC
@ 2014-2020
Developed BY : positiveitusa.com
Design and developed by positiveitusa.com