প্রকাশিত:সোমবার, ০৭ ডিসে ২০২০ ০৭:১২
নিউজ ডেস্ক,নিউইয়র্ক: ভিটামিনসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বা সাপ্লিমেন্টসমূহ কি করোনা সংক্রমণ রুখতে পারে? বা পরে কি এই রোগের উপসর্গগুলো কমাতে?
এ নিয়ে বেশ ক’টি গবেষণা চলছে। এর অনেকগুলোরই ফল বেশ আশাব্যঞ্জক।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম ভালো থাকা করোনা প্রতিরোধের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাই শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে হবে। প্রাকৃতিক উৎসের পাশাপাশি সাপ্লিমেন্ট বা সম্পূরক উৎস থেকে এগুলো গ্রহণের মাধ্যমে সেটি করা যায়।
তবে কোনো নির্দিষ্ট ধরনের ভিটামিন বা পুষ্টি অতিরিক্তি পরিমাণ না নিতে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। কেননা তা করলে শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
তাদের মতে, সাপ্লিমেন্ট নেওয়া তার জন্যেই ভালো, যার শরীরে এর ঘাটতি আছে।
হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের এপিডেমায়োলজি এন্ড নিউট্রিশনের প্রফেসর ওয়াল্টার উইলেট বলেন শরীরে কোনো পুষ্টির ঘাটতি থাকলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে। তাই সেই ঘাটতি পূরণ শরীরের জন্য ভালো।
গাড়ির উদাহারণ দিয়ে প্রফেসর উইলেট বলেন, “ধরুন, কোনো গাড়ির একটি টাকা নষ্ট হয়ে গেছে।এখন আপনি যদি আরেকটি চাকা লাগান, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত চাকা, অর্থাৎ চারটির জায়গায় পাঁচটি চাকা লাগাতে যান তাহলে কিন্তু আপনার সমস্যা হয়ে যাবে।”
“অর্থাৎ এর কোনো জিনিস অতিরিক্ত নিলেই যে আপনার লাভ হবে তা না,” বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “পুষ্টির ঘাটতি থাকলে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খান এবং সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি নিন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক হবে। কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্তি নিলে, তাতে কোনো লাভ নেই।”
তার পরামর্শ, ঘাটতি পূরণে অনেকেরই মাল্টি-ভিটামিন ও মাল্টিমিনারেলস নেওয়া ভালো। তা তাকে সুরক্ষা দেবে।
তবে তা করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কোভিড ছড়ানোর আগেই অনেকের তা করা উচিত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সেটি করা আরো জরুরি।
কারো যদি কোভিড হয় তাহলে তার শরীরের পুষ্টি চাহিদার দিকগুলো নিয়ে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলা উচিত।
করোনা ভাইরোসের বিরুদ্ধে খাদ্য ও পুষ্টির গুরুত্ব নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, তার মধ্যে সবার আগে আসে ভিটামিন সি’র কথা।
ভিটামিন সি’তে যে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে, তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তা শরীরের প্রদাহও কমায়।
নিউট্রিশন জার্নালের একটি পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ভিটামিন সি কোভিড প্রতিরোধ করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টি বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকায় প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেককে দৈনিক ৭৫ থেকে ১২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যে মায়েরা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ায় তাদের বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণের দেওয়া হয়েছে।
এজন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও শাকসবজি খেতে বলা হয়েছে।
তবে প্রতিদিন ২০০০ মিলিগ্রামের ওপর ভিটামিন সি মাথাব্যথা, অনিদ্রা, ডায়রিয়া, বুক জ্বলাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।
এ কথা সবার জানা যে ভিটামিন ডি হাড় শক্ত করে এবং তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
সাধারণত খাদ্যবস্তুতে এটি পাওয়া যায় না। ত্বকে নিচে সূর্যালোকের প্রভাবে এটি তৈরি হয়। তারপর এটা বৃক্কে বা কিডনিতে সঞ্চিত হয়ে শরীরের কাজে লাগে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণবয়স্কদের মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশের শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি রয়েছে বলে জানা যায়।
এই বছরের শুরুতে ইউরোপের ২০ দেশের ওপর চালানো এক সমীক্ষায় দেখা যায়, যাদের শরীরের ভিটিামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে, কোভিডে তাদের মৃত্যুহার বেশি।
স্পেনের ২০০ কোভিড রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাদের ৮০ শতাংশের ভিটামিন ডির ঘাটতি রয়েছে। এই গবেষণাটি অক্টোবরে জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল এনডোক্রাইনোলজি এন্ড মেটাবোলিজমে ছাপা হয।
কোডিভ রোগীদের ওপর ভিটামিন ডির প্রভাব নিয়ে আরেকটি সমীক্ষা আছে। ভিটামিন ডির সাপ্লিমেন্ট দেওয়া দেওয়া হয়নি এমন ২৬ জন রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তাদের অর্ধেককেই আইসিইউতে নিতে হয়। এদের মধ্যে মারা যান ২ জন। আর ভিটামিন ডি দেওয়া ৫০ জন রোগীর মধ্যে আইসিইউতে নিতে হয় একজনকে। তবে তাদের কেউই মারা যায়নি।
হুইলেট বলেন ভিটামিন ডি কোভিডের সুরক্ষায় সবচেয়ে কার্যকরী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তির ৬০০ আন্তর্জাতিক একক ভিটামিন ডি লাগে। যদিও মতভেদ আছে, তবু গড়ে একেকজন মানুষের ২০০০ থেকে ৪০০০ পেলে সে নিরাপদ।
শরীরের ৪০ শতাংশ খোলা রেখে প্রতিদিন ২০ মিনিট রোদে থাকলে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। গাঢ় গায়ের রংয়ের মানুষের আরেকটু বেশি সময় থাকতে হয়।
খাবারের মধ্যে তৈলাক্ত মাছ ছাড়াও দুধ ও শস্যজাত খাদ্যে ভিটামিন ডি আছে। যদি ঘাটতি থাকে, তাহলে সম্পূরক ভিটামিন ডি নেওয়ার পরামর্শ ডাক্তারদের।
উইলেট বলেন মাল্টিভিটামিন নিলে ঘাটতি পূরণ হওয়ার কথা। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে ভিটামিন ডি বেশি যেন না হয়ে যায়। কেননা সূর্যের আলোর নিচে বেশি থাকলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ ক্যান্সার হতে পারে।
সাপ্লিমেন্ট ৪০০০ এককের বেশি নেওয়া যাবে না। নিলে তা বিষক্রিয়া হতে পারে।
এছাড়া কোভিডের মোকাবেলায় মেলাটোনিনের কথাও বলছেন তারা। এটি এক ধরনের হরমোন। দিনের বেলায় বাইরে গেলে, স্বাভাবিক কাজকর্ম করলে এটি তৈরি হয়। এটি ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয়।
বর্তমান সময়ে জীবনাচরণে পরিবর্তন আসায় মানুষের ঠিক সময়ে ঘুম হচ্ছে না। প্রাকৃতিক ঘড়ির সাথে, অর্থাৎ দিনে কাজ আর রাতে ঘুম হচ্ছে না। ফলে মেলাটোনিন তৈরি হচ্ছে না। অনেকেরেই অনিদ্রার সমস্যা, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের নভেম্বরের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মেলাটোনিনের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কোভিড সংক্রমণে কমিয়েছে। গবেষণাটি পিএলওএস বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ দিনের অন্তত দু’ঘন্টা বাইরে সূর্যর আলোয় প্রাকৃতিক আলোর মধ্যে কাটাতে হবে। যাতে তার প্রাকৃতিক ঘড়িটি ঠিক থাকে। রাত যথাসময়ে ঘুম হয়।
এছাড়া আছে জিঙ্ক, যা শরীরে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসরে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। মদ্যপান অতিরিক্ত না করলে সবজি থেকেই মানুষের প্রচুর জিঙ্ক পাওয়ার কথা।
জিঙ্ক করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করতে পারে কি না তা নিশ্চিত হতেও প্রচুর গবেষণা চলছে।
উইলেট বলেন, জিঙ্ক স্বল্পতা কমানোটা প্রয়োজনীয়। তবে অতিরিক্ত নেওয়া সমীচীন নয়। নারীদের ৮ মিলিগ্রাম দরকার। পুরুষের ১১। স্বাস্থ্যকর খাবারে পর্যাপ্ত রয়েছে। সামুদ্রিক খাবার, মাছ, এবং গরু, মুরগীর মাংসে প্রচুর জিঙ্ক আছে। আরো পাওয়া যায় শিম, বাদাম, তৈলবীজ, খাদ্যশস্য ও দুধে।
সীডারস সিনাই মেডিকেল সেন্টারের সুজান ক্যাসেল বলেন, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হলো – ভালো খাওয়া ও সক্রিয় থাকা।
তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অতিরিক্ত হলেও কিছু জটিলতা আছে। তিনি বলেন কম যেমন ভালো না,তেমনি বেশিও ভালো না।
Head Office :
2152 – B, Westchester Ave,
Bronx, New York 10462
United States Of America.
Tel : 347 656 4623 (News), 718 823 7535 (Office), 929 261 8340 (CEO), 718 823 7538 (Fax).
Email :
report.banglanewsus@gmail.com (News),
riyahdahad@banglanewsus.com (Editorial)
info@banglanewsus.com (Advertisement)
ceo@banglanewsus.com (Event And Others).
First Fully Online Daily For The Worldwide
South Asian Community Jointly Published From
United States Of America, Great Britain
And Canada On Be-Half Of
POSITIVE INTERNATIONAL INC
@ 2014-2020
Developed BY : positiveitusa.com
Design and developed by positiveitusa.com