প্রকাশিত:শুক্রবার, ১৬ অক্টো ২০২০ ০১:১০
‘পুলিশের নির্যাতনে’ মারা যাওয়া যুবক রায়হানের সঙ্গে সেই দিন রাতে কী ঘটেছিল তার বর্ণনা দিলেন প্রত্যক্ষদর্শী এক সিএনজি চালক। ওই চালক ও তার আরেক সঙ্গীর দুটি সিএনজি অটোরিকশাতেই সেই রাতে টহল দেয় সিলেটের বন্দর বাজার ফাঁড়ির দুটি পুলিশ টিম। এর মধ্যে অটোরিকশাতেই রায়হানকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই অটোরিকশা চালক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শনিবার দিবাগত (১২ অক্টোবর) রাতে সিলেট নগরীর কাষ্টঘর এলাকার একটি সুইপার কক্ষ থেকে রায়হানকে বের করে নিয়ে আসে পুলিশ। এর আগে নগরীর মাশরাফিয়া রেস্টুরেন্টের সামনে অজ্ঞাত দুইজন লোক পুলিশকে এসে খবর দেয়, কাষ্টঘরের গলিতে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
অটোরিকশা চালক জানান, পুলিশ গিয়ে একটি সুইপারের কক্ষ থেকে রায়হানকে ডেকে বের করে। সেখানে কোনো ছিনতাই বা রায়হানকে গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়নি। ওই গলি থেকে রায়হানকে বের করে দ্বিতীয় (ওই চালকের সঙ্গীর) অটোরিকশাযোগে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ। তখন সুস্থ শরীরেই ছিলেন রায়হান। এসময় রায়হান পুলিশের তর্কে লিপ্ত হন এবং বলেন- আমি কোনো ছিনতাইকারী বা অপরাধী নই।
রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে নিয়ে যাওয়ার পর দুই অটোরিকশা চালক ফাঁড়ির বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে সকালে রায়হানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই দুই চালকের মধ্যে একজনের অটোরিকশাতে করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
অটোরিকশা চালক আরও জানান, হাসপাতালে নেয়ার পর রায়হানের অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়। এর আগে ফাঁড়ি থেকে রায়হানকে বের করার সময় তার হাঁটুর নিচে ও হাতের আঙ্গুলে আঘাতের চিহ্ন দেখেন ওই চালক। এসময় চালক দুই পুলিশ সদস্যকে বলতে শুনেন- ‘এমন নির্মমভাবে কেউ কাউকে মারে।’
এ ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে পরিবারের অভিযোগ ওঠে রায়হান পুলিশের নির্যাতনে মারা যায়। পরে ওইদিন রাতেই রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনায় বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
নিহত রায়হান আখালিয়া নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের পুত্র। সিলেট নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করতেন রায়হান। শনিবারও তিনি যথারীতি দায়িত্ব পালন করে। ওইদিন রাতে তিনি বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা ছিলেন উদ্বেগে।
নিহতের চাচা মো. হাবিবুল্লাহ জানান, ভোররাত চারটার দিকে রায়হান একজন পুলিশ সদস্যের ফোন দিয়ে তার মায়ের মোবাইলে কল করে বলে, ‘আমারে বাঁচাও, ১০ হাজার টাকা লইয়া তাড়াতাড়ি ফাঁড়িতে আসেন।’
এরপর পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত হন রায়হানকে বন্দর বাজার ফাঁড়িতে আটকে রাখা হয়েছে।
মো. হাবিবুল্লাহর দাবি, কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে পাশের ফাঁড়িতে রায়হানের সন্ধানে গেলে ডিউটিরত কনস্টেবল তাকে জানান- ‘সবাই ঘুমে। সকালে আসেন। এ সময় ১০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ফাঁড়িতে যেতে বলা হয়।
নিহতের চাচা বলেন, পরে ৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে ফাঁড়িতে গেলে পুলিশ বলে রায়হান অসুস্থ। ওসমানী মেডিকেলে যান। এরপর মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে এসে দেখেন রায়হানের লাশ। এই ঘটনায় নগরীতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
হাবিবুল্লাহ বলেন, রায়হানের পায়ের তলা ও হাঁটুর নিচসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার হাতের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ফাঁড়ির ভেতর ‘পুলিশ নির্যাতন’ করে তাকে হত্যা করেছে বলেও অভিযোগ তার।
এদিকে রায়হানের শরীরে অতিরিক্ত আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ডা. শামসুল বলেন, রায়হানের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। এসব কারণেই তার মৃত্যু হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে।
Head Office :
2152 – B, Westchester Ave,
Bronx, New York 10462
United States Of America.
Tel : 347 656 4623 (News), 718 823 7535 (Office), 929 261 8340 (CEO), 718 823 7538 (Fax).
Email :
report.banglanewsus@gmail.com (News),
riyahdahad@banglanewsus.com (Editorial)
info@banglanewsus.com (Advertisement)
ceo@banglanewsus.com (Event And Others).
First Fully Online Daily For The Worldwide
South Asian Community Jointly Published From
United States Of America, Great Britain
And Canada On Be-Half Of
POSITIVE INTERNATIONAL INC
@ 2014-2020
Developed BY : positiveitusa.com
Design and developed by positiveitusa.com