প্রকাশিত:বুধবার, ০৬ জানু ২০২১ ০৫:০১
শেরপুর প্রতিনিধি:
ঝরণার শান্ত শীতল জলের শ্রোতধারা বইছে এক টানা। এর চার পাশে ছোট বড় পাহাড়ি টিলা। ঝরণা আর টিলার সৌন্দর্য্যে অপরূপ লীলাভূমি যেন ঐশ্বরিক স্বপ্নপুরি। ঝরণার কুল ঘেঁষেঁ নানা কারুকার্য্যে সাঁজানো এলাকা। নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাসে গ্রামটিতে যোগ হয়েছে সৌন্দর্য্যরে নতুন মাত্রা। গভীর মমতা আর ভালবাসায় গড়া উপজাতিদের বর্ণিল জীবনধারা। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য্যময়ী নিঝুম অরণ্য হারিয়াকোনা গ্রামটি এতোদিন ছিল অন্ধকারে। এখন বিদ্যুতের আলো আলোকিত। তবে যোগাযোগ, ও স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নের অভাবে ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাসীরা। সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।
জানা যায়, শ্রীবরদী শহর হতে হারিয়াকোনার দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৪ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ। চলেনা বড় কোনো যানবাহন। এর উত্তর ও পূর্বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পোড়াকাশিয়া। দু’দেশের সীমানা পিলার নাম্বার ১০৯৩/১০৯৪। আড়াই কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এ গ্রামে অর্ধশত টিলা ভূমি। ৪/৫শ পরিবারের বসবাস। বেশিরভাগ গারো, কোচ, হাজংসহ খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীর। এটি নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকা। এখানে গীর্জা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুটবল খেলার মাঠ, কয়েকটি মুদি ও চায়ের দোকান রয়েছে। রোববারে গীর্জায় ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। উপাসনা ও ধর্মীয় কাজ সেরে মেতে ওঠেন আলোচনায়। এদিন যেন ওদের মিলনমেলা। গ্রামের সড়কের দু’পাশে প্রাকৃতিকভাবেই গাছের লতাপাতায় ঘেরা। প্রবেশ করতেই মনে হবে প্রকৃতি যেন আগন্তককে স্বাগত জানাচ্ছে। তবে আজো পৌঁছেনি আধুনিকতার ছোঁয়া। গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি পাহাড়ের ওপরে। দূর থেকে মনে হবে যেন আকাশ ছোঁয়া কুটির। এখানের ৮৫% লোক কৃষির ওপর নির্ভরশীল। ওদের চেহারাতেই বোঝা যায় প্রকৃতির সাথে লেনদেন যেন বহুদিনের।
স্থানীয় বাসিন্দা কর্ণিয়া সাংমা বলেন, বৈচিত্র্যময় গারো পাহাড়ের গভীর অরণ্য এ গ্রামটি আগে ছিল অন্ধকারে ঢাকা। এখন বাড়ি বাড়ি জ্বলছে বিদ্যুৎতের আলো। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এবার বিদ্যুৎ পেয়ে খুশি গ্রামবাসীরা। তবে যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য সেবা নাজুক। গ্রামের লোকজনের দিন কাটে খুব কষ্টে। বন্যহাতির অভয়ারণ্য গ্রামের ঝোঁপ জঙ্গঁলে। আগে বন্যহাতির হামলায় ক্ষতি হয়েছে ফসল ও ঘরবাড়ির। হাতির সাথে লড়াই ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। এখন বিদ্যুৎতের আলোতে কমেছে হাতির উপদ্রব। সাবেক ইউপি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মিঃ ভূপেন্দ্র মান্দা বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ। এ জন্য উৎপাদিত পন্য বাজারজাতে লাভের অংশ পরিবহন খাতে খরচ হচ্ছে। তার মতো অনেকেই শোনান নানা সমস্যার কথা। কৃষক পনোয়েল সাংমা জানান, কেউ অসুস্থ্য হলে উপজেলা সদরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হয়। অনেকের সামর্থ্য না থাকায় চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা বলেন, কৃষকেরা ধান চাষের পাশাপাশি আদা, হলুদ, শিমুল আলু, আম, কাঠাল, লিচু, কলা, সুপারি, আনারস, কচু, বেগুন ও শসাসহ বিভিন্ন শাক সবজি চাষ করেন। এতে ওদের মনে বাসা বেঁধেছে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার জানান, বিদ্যুৎতের কারণে এখন তারা সেচ সুবিধা পাবেন। কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। তারা শাক সবজি ও ফল মূল চাষ করে ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছেন। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করে কয়েক বছরে দেখছেন স্বচ্ছলতার মুখ। কেউবা গবাদি পশু পালন করে শূন্য থেকে খামার মালিক। সম্প্রতি বিদ্যুৎ সংযোগ হওয়ায় তাদের উন্নয়নে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। এখন যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন হলে দ্রুত বদলে যাবে তাদের ভাগ্য। তারাও এগিয়ে যাবে সমানতালে। এমনটাই মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ সচেতন মানুষরা।
Head Office :
2152 – B, Westchester Ave,
Bronx, New York 10462
United States Of America.
Tel : 347 656 4623 (News), 718 823 7535 (Office), 929 261 8340 (CEO), 718 823 7538 (Fax).
Email :
report.banglanewsus@gmail.com (News),
riyahdahad@banglanewsus.com (Editorial)
info@banglanewsus.com (Advertisement)
ceo@banglanewsus.com (Event And Others).
First Fully Online Daily For The Worldwide
South Asian Community Jointly Published From
United States Of America, Great Britain
And Canada On Be-Half Of
POSITIVE INTERNATIONAL INC
@ 2014-2020
Developed BY : positiveitusa.com
Design and developed by positiveitusa.com