উত্তর আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তরের নকশা’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি : ‘সাজে ও সংগীতে ষাটের দশক
উত্তর আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তরের নকশা’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি : ‘সাজে ও সংগীতে ষাটের দশক
ADMIN, USA
প্রকাশিত জানুয়ারি ১০, ২০২০
নিউইয়র্ক : প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তরের নকশা’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির আয়োজন ছিল ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে। অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘সাজে ও সংগীতে ষাটের দশক’। ভিন্ন সংস্কৃতির মাঝেও এখানকার বাঙালিরা কয়েক ঘণ্টার জন্য যেন ফিরে গিয়েছিলেন ষাটের দশকে। বাঙালির রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিল্প ও সাহিত্যের সবচেয়ে উজ্জ্বল দশক বলা চলে এই সময়কে। সেই সময়ের বাংলা সিনেমার যারা শীর্ষ নায়িকা সেই সুচিত্রা সেন, কবরী, শবনম সেজে এসেছিল অনেকেই। মোট ৪৩ জন প্রতিযোগী অংশ নেন সেরা সাজের প্রতিযোগিতায়। বিচারকদের রায়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম হন কান্তা কবির। রানার্সআপ হন রুবিয়া খান।
অনুষ্ঠানে সাজের প্রতিযোগিতা ছাড়াও ৬৫ ঊর্ধ্বদের নিয়ে ছিল ফেসবুক ইমো প্রতিযোগিতা। নারীদের পাশাপাশি পুরুষেরাও এসেছিলেন ষাটের সাজে। তাঁদের নিয়ে সংক্ষিপ্ত কলেবরে একটি আয়োজনের চেষ্টা করা হয়। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার নতুন সংযোজন ‘অণুগল্প’-এরও উদ্বোধন হয় এদিন। ছিল পুরুষদের সুদর্শন প্রতিযোগিতা।
বিকেল সাড়ে চারটায় অনুষ্ঠানস্থল ভরে যায় প্রতিযোগীদের উপস্থিতিতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে লক্ষ্য করা গেছে উৎসাহ উদ্দীপনা। উত্তরের নকশার বিভাগীয় প্রধান মনিজা রহমান উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘ষাটের দশক বাঙালির জীবনের সেরা অধ্যায়। ষাটের দশকের কথা উল্লেখ করা হয়। উত্তম-সুচিত্রা কিংবা রাজ্জাক-কবরীর সিনেমা দেখেননি এমন দর্শক এখানে পাওয়া যাবে না। আমাদের রাজনৈতিক জীবনেরও সন্ধিক্ষণ ছিল এই দশক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দশকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বাঙালি। সেই ঐক্যের ফসল আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।’
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। নিউইয়র্কের রিয়েল্টর ও সংগঠক শায়লা আজিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
তানভীর শাহীনের মিউজিক কম্পোজিশনে প্রতিযোগীরা একে একে মঞ্চে প্রবেশ করেন। বিচারকদের মধ্যে ছিলেন—অভিনেত্রী কুমকুম হাসান, উপস্থাপক খাইরুল ইসলাম, মডেল ও অভিনেত্রী মিলা হোসেন, নৃত্যশিল্পী প্রিয়া ডায়েস, সংগীত শিল্পী কাবেরী দাস, সংগীত শিল্পী রুকসান আরা ও অলিম্পিয়ান সালমা ফেরদৌস।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রথম হন কান্তা কাবির ও রানার্সআপ হন রুবিয়া খান। তৃতীয় পুরস্কার পান আটজন। তৃতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন—মাধবী, রূপা খানম, কামরুন্নাহার, শাম্মী আক্তার, ইভা চৌধুরী, ছন্দা খান, সাদিয়া আখন্দ ও মমতাজ মুন্নী। বিশেষ পুরস্কার পান রওশন হাসান, ফরিদা ইয়াসমীন, রোমেনা লেইস, আইরিন রহমান, খাদিজা পারভীন, জাহিদা আলম, লুসি হাসান, দিমা নেফারদিতি, আনোয়ারা আনা, চমক ইসলাম ও কাজী আরজু।
এ ছাড়া রওশন সোনিয়া, ফেরদৌসী রহিম, রাজিয়া চৌধুরী, তাহরিনা পারভীন, নিশাত, শিমু আফরোজা, জ্যোতি আফরিন ও চম্পা সেনকেও পুরস্কৃত করা হয়।
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদানে সহযোগিতা করে শিপার এয়ার সার্ভিস, আইন প্রতিষ্ঠান লিগ্যাল নেটওয়ার্কের নিরু নীরা। আটটি শাড়ি স্পনসর করেন আনা রিয়েল এস্টেটের প্রধান আলী শিকদার। প্রধান অতিথি শায়লা আজিম, সালমা ফেরদৌস, জাকিয়া ফাহিম, রূপা খানম ও মাকসুদা আহমেদও স্পনসর করেন এ অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী শহীদ হাসান, শাহ মাহবুব, তানভীর শাহিন, তাহমিনা শহীদ পুরোনো দিনের গান গেয়ে মাতিয়ে রাখেন পুরো সন্ধ্যা।
অনুষ্ঠানে কেক কেটে অনুগল্প পাতার উদ্বোধন করা হয়। এ নিয়ে বক্তব্য রাখেন লেখক ও সাংবাদিক শেলী জামান খান। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী।