ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের স্থপতি ইশতিয়াক আহমেদ
০৪ মে ২০২০, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ণ

আকবর হায়দার কিরন:
রোকেয়া আপা সারাদিন ব্যস্ত ছিলেন নিউইয়র্কে এবং তাঁকে সেই সন্ধ্যায়ই ট্রেনে ফিরতে হবে ওয়াশিংটন। যথারীতি আমি আমার পরম শ্রদ্ধেয় আপাকে যখন ম্যানহাটন পেন স্টেশন নিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন ইশতিয়াক ভাইকে নিয়ে অনেক গল্প হয় রাস্তায়। আপা ট্রেন ছাড়বার আগেই খুব তিনি সিরিয়াসলি বলিছেলেন, ইশতিয়াক ভাইজানের শরীরটা তেমন ভালো নেই, তুমি সহসা তাঁকে অবশ্যই দেখতে আসবে। পরদিন সকালেই খবর পেলাম আমাদের সবার প্রিয় ভাই সেই রাতেই তিনি পরলোক গমন করেছেন।

ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের সূচনা হয় প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসেবে ইশতিয়াক আহমেদকে নিয়ে। তার আগে, প্রায় ৫০ সালের দিকে তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানের সংবাদ পড়তেন ইশতিয়াক ভাই। তিনি ভিওএ বাংলা বিভাগের জন্য উপমহাদেশ থেকে সবচেয়ে মেধাবী প্রায় দু’ডজন বেতার সাংবাদিক ওয়াশিংটনে নিয়োগ করেন। পুরো ভয়েস অব আমেরিকায় বাংলা বিভাগটি ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল।

ইশতিয়াক আহমেদ ভাইজান ঢাকা থেকে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগে তিনি তাঁর স্ত্রী ফারহাত ভাবীসহ আমেরিকা আসেন। সবাই ভয়েস অব আমেরিকা ফ্যান ক্লাব ফেডারেশন নিয়ে তখন আমাদের কি যে উৎসাহ এবং উদ্দীপনা ছিলো! তখন আমাদের সাথে খ্যাতিমান ও জনপ্রিয় সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরী ভাই ফ্যান ক্লাবগুলোকে উৎসাহ জোগাতেন। একবার আমরা ভাবীসহ ইশতিয়াক ভাইকে নিয়ে দারুন একটি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলাম গিয়াস কামাল ভাইয়ের বাসায়। আমাদের ভিওএ ফ্যান ক্লাবের জন্য সেই সন্ধ্যার কথব স্মৃতিময় হয়ে আছে। ঠিক পরদিনই ইশতিয়াক ভাইয়ের একটা বিশেষ জরুরি কাজ ছিলো ঢাকায়। ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতে হবে সোনারগাঁ হোটেলে। সেদিন অনেকেই ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। সেদিন ব্যস্ততার মাঝেও ইশতিয়াক ভাইয়ের সাথে তাঁর হোটেল রুমে বেশ কিছুটা সময় কেটেছিল। ঘটনাক্রমে গিয়াস কামাল ভাইয়ের তখনও ইন্টারভিউ হয়নি। ইশতিয়াক ভাইকে বিশেষ অনুরোধ করেছিলাম এই মানুষটির জন্য। গিয়াস কামাল ভাইয়ের ঊর্ধতন বাসস ( বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ) কর্মকর্তার পাশাপাশি বলেন ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিনিধি হলেন। তখন টেলিফোনে ঢাকা থেকে প্রতিদিন সংবাদ পাঠাতেন।

ঢাকায় তোলা প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগের একটি সাদাকালো ছবি পেয়েছি, যা অনেকটা ঐতিহাসিক বটে। আমার স্মরণ ছিলনা যে সেটি তোলেছিলেন ইউসিস-এর ফটোগ্রাফার আব্দুল কাদের। ডান দিক থেকে পর পর দাঁড়িয়ে ছিলেন সরকার কবির উদ্দিন, সৈয়দ আসাদুজ্জামান বাচ্চু ( ইউসিস এর চীফ এডিটর), সাথে আমি, ভাবী ফারহাত আহমেদ ও ইশতিয়াক আহমেদ, তারিক খান ও আমেরিকান কালচারাল সেন্টারের ভিওএ স্টুডিওর দায়িত্বে নিয়োজিত আব্দুল হাই খান।

ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০০৯ সালে ওয়াশিংটনে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হন। রোকেয়া হায়দার আপা অফিসিয়ালি আমাকে ছাড়াও ঠিকানার তখনকার সম্পাদক সাইদুর রব, নর্থ আমেরিকা এনটিভির প্রধান সৈয়দ হোসেন