নিত্য আয়ের মানুষের, নিত্য ক্ষুধার জ্বালা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৪:৩৯, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

নিত্য আয়ের মানুষের, নিত্য ক্ষুধার জ্বালা

ADMIN, USA
প্রকাশিত মে ৯, ২০২০
নিত্য আয়ের মানুষের, নিত্য ক্ষুধার জ্বালা

 হবিগঞ্জ থেকে :

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নিত্যআয়ের লোকজন কর্মের অভাবে উপার্জনহীন হয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। গণপরিবহনের সাথে জড়িত নিত্যআয়ের লোকজন ক্ষুধারজ্বালা অনুভব করছেন। রিকশা, সিএনজি, টমটম, ম্যাক্সি, পান দোকানী ও ফুটপাথের দোকানীসহ এসব পেশার সহিত সম্পৃক্ত মানুষজন অতীব দুঃখ-কষ্টে, অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।

বৈশ্বিক করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থবির হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব। পৃথিবীর শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো বিমর্ষ হয়ে পড়েছে, চিকিৎসাবিজ্ঞানে জগৎ বিখ্যাত দেশগুলোও এ ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক উদ্ভাবনে হিমশিম খাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সংক্রমন ও বিস্তার থেকে জনগণকে নিরাপদে রাখতে দেশে জেলা উপজেলা পর্যায়ে রাস্ট্র কর্তৃক লকডাউন আরোপ করা হয়েছে।বৈশ্বিক করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষনা করে জনগণকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।

এতে দেশের সমস্ত গণপরিবহন বন্ধ হওয়ার সাথে স্থানীয় গণপরিবহন ও নিত্যআয়ের লোকজনের রুটিরুজীও বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরী প্রয়োজন ব্যতিত কারোরই  ঘর থেকে বের হওয়ার উপায় নাই। ফলে গণপরিবহনসহ খেটেখাওয়া নিত্যআয়ের লোকজন কর্মহীন ও উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ধীরে ধীরে প্রকট হওয়ার কারণে লকডাউনের মেয়াদও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপার্জনহীন অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনাগত দুর্দশার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ওইসব পেশার লোকজন। বর্তমানে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে এসব নিত্যআয়ের লোকজনের।

শায়েস্তাগঞ্জের দাউদনগর গ্রামের পান দোকানী হেলাল উদ্দিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, পান দোকান করে নিত্যদিন তার ২/৩শ টাকা রোজগার হতো। বর্তমানে কর্মহীন হয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কটে তার। একই সময়ে কথা হয় পৌরসভার বাগুণিপাড়া গ্রামের রিক্সা চালক জনাব আলীর  সাথে,  তিনি বলেন, রোজগারের আশায় রিক্সা নিয়ে বসে আছি কোনো যাত্রীর দেখা নাই। করোনাভাইরাস আতঙ্কে মানুষ ঘর থেকে বের হতে না পারায় তাদের আয়-রোজগারও কমে গেছে। ফলে পরিবার নিয়ে এসব নিত্যআয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগে আছেন।

নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা বলেন, বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে সবার মতো তিনিও নিজ গৃহে আবদ্ধ অবস্থায় আছেন, সমাজে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো বড় অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো ত্রাণ গ্রহন করার মতো অবস্থায় উপনীত হলেও সামাজিক অবস্থান ও বংশ মর্যাদা রক্ষার্থে তারা তা করতে পারছেন না। প্রাতিষ্ঠানিক, রাষ্ট্রিয় বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক সকল প্রকারের সাহায্য সহযেগীতা থেকে বঞ্চিত হয়ে তারা নিদারুণ অনটনে দিনাতিপাত করছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা আরো বিপাকে পড়েছেন।

এ সমাজে বসবাসরত মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির অভাবী মানুষগুলোকে খোঁজে বের করে মানবিক সাহায্য সহযোগীতা পৌঁছে দেয়ার মতো মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষের খুবই অভাব। অব্যাক্ত বেদনা উপলব্ধি করে সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করার মানুষ দেশে তৈরী হবে কবে?  মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষরা হচ্ছে সবচেয়ে বড় অভিনয় শিল্পী, কারন তারা ভাল না থাকলেও, প্রতিনিয়ত ভাল থাকার অভিনয় করে থাকে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।