জাফরুল সাদিক, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) ঃ
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা ও বাঙালী নদীর চরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। সে সাথে কাটামাড়াই এ ব্যাস্ত সময় পার করছে চাষীরা। বাজারে দাম ভাল থাকায় চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। বাদামের ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে এখন ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় সরগরম হয়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস ও চাষীরা জানান, যমুনা ও বাঙালী নদীর অসমতল চরের এসব জমিতে সেচ নির্ভর অন্য কোন ফসল করা সম্ভব পর না হওয়ায় চাষীরা ব্যাপক ভাবে বাদাম চাষে ঝুঁকে পড়েন। সারিয়াকান্দিতে এবছর ৭শ ৫০হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার বাদাম চাষী বৃদ্ধি পেয়েছে। আশি^ন- কার্তিক মাসে বীজ বপন করে চৈত্র- বৈশাখ মাসে বাদাম কাটামাড়াই করা হয়। বীজ বপনের পর হতেই আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। কর্নিবাড়ী ইউনিয়নের ইন্দুরমারা চরের চাষী আলমগীর হোসেন ৩বিঘা,বাছেদ মিয়া ১ বিঘা,সোহেল ব্যাপারি ১ বিঘা,কাজলার ছালাম ব্যাপারী ৬ বিঘা, হাসেম আলী ২০শতক,বোহাইল ইউনিয়নের ধারাবর্ষা চরের মানিক মিয়া,কাসেম মিয়া হাসেম মিয়া ২বিঘা ও চন্দনবাইশা ইউনিয়নের টেকামাগুড়া চরের চাষী খয়বর প্রামানিক ৮বিঘা, রশিদ মুন্সী ৩বিঘা,মাছির পাড়ার তফিজ আকন্দ ২বিঘা, আব্দুল আকন্দ ৯ বিঘা ও আজিজার রহমান ১০ জমিতে বাদামের আবাদ করেছেন। তারা জানান,এবার ৭০/৮০ টাকা কেজি দরে বীজ ক্রয় করি। প্রতি বিঘা জমিতে ৩ থেকে ৪কেজি বীজ বপন করতে হয়।নিড়ানী ও কোন প্রকার চাষছাড়াই কাটামাড়াইসহ মোট ২হাজার থেকে আড়াই হাজার ’টাকা খরচ হয়েছে । প্রতি বিঘা জমিতে ৮/১০ মন করে বাদাম উৎপন্ন হতো ।এবার আবহাওয়া অনুকুলে নাথাকায় যেসকল কৃষক জমিতে সেচ দেয়নি সেখানে ৪/৫ মন করে বাদাম পাওয়া যাচ্ছে। ইন্দুরমারা চরের বাদাম চাষী আলমগীর হোসেন,বাছেদ মিয়া,সোহেল ব্যাপারি,আব্দুল আকন্দ, আজিজার রহমান বলেন, বৃষ্টি না থাকার কারনে বাদামের ফলন কম হয়েছে ।যে যে বাদাম চাষী জমিতে যতœ নিয়েছেন সার প্রয়োগ করেছেন তাদের ফলন বাম্পার হয়েছে।গতবারের তুলনায় এবার বাদামের দাম বেশি হওয়ায় লাভও এবার বেশি হবে। কাটা মাড়াইয়ের পর উপজেলা বিভিন্ন হাটে-বাজারে প্রতি মন বাদাম ১হাজার ৮শ’ হতে ২হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চরের বাদাম ব্যাবসায়ী জামাল আকন্দ,হজরত প্রাং,আমিনুল ইসলাম,আলমগীর হোসেন জানান,আমরা প্রতি মন বাদাম ১হাজার থেকে ১ হাজার২শ টাকা দরে ক্রয় করে থাকি।আমাদের চর থেকে বাদাম ক্রয় করা ,ঘোড়ার গাড়ী ভাড়া,নৌকা ভাড়া,লেবার খরচ,কুলি খরচ,পশ্চিম পাড়ের গাড়ী ভাড়া দিয়ে তেমন লাভ টিকে না। অল্প পরিশ্রমে চাষীরা চরের পতিত পরা জমিতে বাদামের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, বাদাম চাষে যেসব চাষীরা যতœ নিয়েছেন তাদের ফলন বাম্পার হয়েছে । গতবছরের তুলনায় গড়ে এবার ফলন অনেক বেশি হয়েছে। বাদামের বাম্পার ফলন এবং দাম বেশি হওয়ায় যমুনা ও বাঙালী নদীর চরাঞ্চলের চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।