কলারোয়া (সাতক্ষীরা) থেকে:
কলারোয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকেরা চরম প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি। তাদের
ভাষায় ‘ভালো নেই’ তারা।
চরম দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাদের দিন। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে সার্বক্ষণিক
পড়ে থাকতে হচ্ছে ফসলী মাঠে। কাঁদা জল থেকে ভেজা ও আংশিক নষ্ট হওয়া ধান
বাড়ি আনার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
ভুক্তভোগি কৃষকরা জানান- গত ৭ মে সন্ধ্যা রাতের ঝড় ও বৃষ্টিতে ভেসে গেছে
কৃষকের স্বপ্ন। মাঠে পানির উপর ভাসছে কৃষকের ঘাম ঝরানো কষ্টের ফসল- পাঁকা
ধান। পানি থেকে পাকা ধান কাটতে ও কেটে রাখা ভেজা ধান বাড়িতে আনতে কৃষকের
অন্তহীন পরিশ্রম করতে হচ্ছে। ধান ও বিচালি বাঁচাতে এখন মরিয়া কৃষক।
তারা বলেন- ‘একদিকে শ্রমিক সংকট অন্যদিকে কৃষকের পাঁকা ধান ঘরে তুলতে দিন
রাত এক করছেন তারা। পানিতে দাঁড়িয়ে কাঁটতে হচ্ছে ধান। ভেজা ধান বাড়িতে
এনে ঝাড়তে হচ্ছে। ধান বাঁচাতে পারছেন কোন ভাবে, কিন্তু বিচুলি বাঁচাতে
পারছেন না। যার কারণে গরুর খাবার সংকট লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিচুলি বিক্রির
টাকাও আর হবে না তাদের। মানুষের খাবার বাঁচাতে গরুর খাবার নষ্ট হচ্ছে সব
মিলিয়ে কৃষক ও কৃষি এখন ঝুকির মুখে।’
‘কৃষক বাঁচলে, দেশ বাঁচবে’ কথাটি এখন মাঠের সকল কৃষকের মুখে। তারা বলছেন
কৃষকেরা আজ চরম বিপদে। বৈরী আবহওয়ার কারণে কৃষকের ফসল মাঠে নষ্ট হচ্ছে।
সঠিক সময়ে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। তবে গুটি কয়েক ছাড়া এখনো পর্যন্ত
সরকারি বা স্বেচ্ছেসেবী কোন সংগঠনের দেখা মেলেনি বিভিন্ন এলাকার কৃষকের
পাশে।
একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অন্য দিকে শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকের ঘাম
ঝরানো কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। কৃষকেরা সরকারি বা
স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের সাহায্য কামনা করছেন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে কৃষি
এবং কৃষক ঝুকির মুখে পড়বে বলে আশংকা কৃষকেরা।
জয়নগরের কৃষক সুদর্শন মন্ডল ও জয়দেব ঘোষ জানিয়েছেন- ‘আমরা কৃষকেরা এখন
ভালো নেই। ঘরে মানুষ/গরু উভয়ের খাবার সংকট। এদিকে গত ৭ তারিখে হওয়া জল ও
ঝড়ো হাওয়া ধান সহ অন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।ধানের জমিতে পানি জমে
গিয়েছে। যার কারণে ধান পানিতে দাঁড়িয়ে কাটতে হচ্ছে। ধান কোন রকমে সংগ্রহ
করা গেলেও বিচালি বাঁচানো যাচ্ছে না। এদিকে গরুর খাবার সংকট বিচালি নষ্ট
হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা কৃষকেরা এখন চরম মুহুর্তে দিন কাটাচ্ছি।’
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।