নদী ভাঙ্গন রোধে যুবকদের বাঁধ নির্মাণ - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সকাল ৭:২৬, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

নদী ভাঙ্গন রোধে যুবকদের বাঁধ নির্মাণ

ADMIN, USA
প্রকাশিত মে ১০, ২০২০
নদী ভাঙ্গন রোধে যুবকদের বাঁধ নির্মাণ

 

সম্পা মিত্র,শ্রীপুর,মাগুরা:

অনেক আগে থেকেই নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৬ নং কাদিরপাড়া ইউনিয়নের দোরাননগর মধ্যপাড়া গ্রামটি । শত শত একর জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এবছর বর্ষা আসার আগেই শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। এখন প্রয়োজন বাঁধ নির্মানের। কিন্তু করোনার এই বিপর্যয়ে এবার শ্রমিকের বড়ই সংকট। তাই এই এলাকার যুবকদের নিয়ে গঠিত সংগঠন “আমরা স্বপ্নবাজ” স্বেচ্ছায় নিজেদের অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমে গ্রামকে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ইতোমধ্যে শুরু করেছেন বাঁধ নির্মান কাজ। নদী ভাঙ্গন রোধে এখন প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন যুবক প্রতক্ষ্যভাবে বাঁধ নির্মান কাজে অংশগ্রহন করছেন। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে যুবকেরা ব্যতিক্রমধর্মী এবং অনুকরনীয় এই অনন্য উদ্যোগ গ্রহন করায় এলাকাবাসী তাদের উৎসাহ দিতে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

আজ রবিবার(১০ মে)সকালে সরেজমিন গ্রামটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় অনেক যুবকছেলে বাঁধ নির্মানের কাজ করছেন। এসময় “আমরা স্বপ্নবাজ” সংগঠনের সভাপতি অসীম কুমার মন্ডল এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এখন শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর। তাই নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে গ্রামকে রক্ষা করতে বাঁধ নির্মান করার জন্য আমরা এলাকার যুবকেরা নিজেদের অর্থে বেশ কিছু বাঁশ কিনেছি। তাছাড়া এলাকায় যাদের বাঁশ আছে, তাদের কাছ থেকেও বাঁশ নিয়েছি। এভাবে তিন শতাধিক বাঁশ জোগাড় করেছি। আবার যাদের বাঁশ নেই তাদের কাছ থেকে টাকা জোগাড় করেছি। এইভাবে আধা কিলোমিটারের মধ্যে আমরা ইতোমধ্যে তিনটি বাঁধ নির্মান করেছি। এখন আরো অন্তত: দুটি বাঁধ নির্মান করা প্রয়োজন। কিন্তু নিজেদের অর্থায়নে আর কতোইবা করা যায়। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তাদের এই কাজের তদারকি করছেন এলাকার বয়স্ক মানুষেরা।

দোরাননগন গ্রামের প্রবীন ব্যাক্তি রনজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের এলাকার যুবক ছেলেরা যা করছে, তা এক কথায় অনন্য। তিনি বলেন, প্রতিবছর গড়াই নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তারা অন্যত্র গিয়ে বসতি গড়ে তুলেছেন। তিনি আরো বলেন, নদী ভাঙ্গনের কারণে ইতোমধ্যে শত শত একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওপারে বালিয়াকান্দি এলাকায় চর পরে নতুন গ্রাম গড়ে উঠছে, আর আমদের গ্রামের অনেক জমিজমা নিচিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, গত বছর ২০১৯ সালে মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে  কিছু অংশে  জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করা হলেও অধিকাংশ এলাকা এখোনো ঝুঁকিতে রয়েছে।

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকেৌশলী মো: সারোয়ার জাহান আজ রবিবার সকালে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, জরুরী ভিত্তিতে কাজ করার জন্য আমরা ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। এলাকার যুবকদের স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মানের কথা জেনে তিনি তাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।