ডেস্ক রিপোর্ট,ঢাকা: ঈদুল ফিতরের সময়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ারই আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তাই করোনা হাসপাতালগুলোতে কোনো ছুটি থাকবে না৷ এই সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চাপিয়ে দেয়নি৷ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, এই মহামারির সময় আমরা ঈদ বা ছুটির কথা চিন্তা করছি না৷ আমরা চিন্তা করছি মানুষকে কিভাবে সেবা দেয়া যায়৷ মানুষকে কিভাবে সুস্থ রাখা যায়৷ সর্বোচ্চ ডেডিকেশন দেখানোর এটাই সময়৷ রোগীদের চিকিৎসাই হবে এবারের ঈদ৷
মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৩২০টি বেডে এখন করোনা রোগী আছেন ৩০৭ জন৷ চিকিৎসক এবং নার্স মিলিয়ে আছেন ৯০০ জন৷ স্বাভাবিক সময়ে অর্ধেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ছুটি পেতেন৷ কিন্তু এবার শত ভাগেরই ছুটি বাতিল৷ হাসপাতালের করোনা ফোকাল পার্সন অধ্যাপক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, দুই-একজন ঈদের ছুটি চেয়েছিলেন ৷ তাদের বলেছি আমরা সবাই বেঁচে থাকলে অনেক ছুটি পাবেন৷ অনেক ঈদ করতে পারবেন৷
ঢাকা মহানগরে এখন ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল ১২টি৷ আর ঢাকার বাইরে সব জেলায় সরকারি হাসপাতালে করোনা ইউনিট করা হয়েছে৷ করোনা টেস্টের জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে ৪১টি সেন্টার করা হয়েছে৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান জানান, এই ঈদে আমরা করোনা হাসপাতাল তো বটেই সাধারণ স্বাস্থ্যসেবাও যাতে ব্যাহত না হয় সেই ব্যবস্থা নিয়েছি৷ সেখানেও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো চিকিসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ছুটি পাবেন না৷ আর করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোও খোলা থাকবে৷ আসলে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে না আসা পর্যন্ত আমরা চিকিৎসা সেবাকে জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করছি৷ স্বাস্থ্য প্রশাসনও সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে৷ এবার ঈদ হলো করোনা রোগীর চিকিৎসা৷
নিয়ম অনুযায়ী করোনা চিকিৎসার সাথে জড়িত চিকিৎসক নার্সরা বাসায় যেতে পারেন না৷ তারা টানা ১০ থেকে ১৪ দিন ডিউটি করে পরবর্তী ১৪ দিন নির্ধারিত হোটেল বা কোয়ারান্টিন সেন্টারে আইসোলেটেড থাকেন৷ যাদের করোনা সংক্রমণ ধরা পরে তাাদের আলদাভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়৷ বাকিরা আবার কাজে যোগ দেন৷ বাংলাদেশে এভাবেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা চিকিৎসায় নিয়েজিত আছেন৷ কুয়েত মৈত্রী হাসাপতালের তত্ত্বাবধায়ক শাহাব উদ্দিন জানান,আমাদের হাসপাতালে ২০০ বেড রয়েছে করোনার জন্য৷ চিকিৎসক ১২৭ জন এবং নার্স ১২৩ জন৷ তারা কেউই সাধারণত বাসায় যান না৷ আমাদের ব্যবস্থাপনায়ই হোটেলে থাকেন৷ তাদের খাবার দাবারও আমরাই সরবরাহ করি৷ ১৪ দিন কোয়ারিন্টিনে থাকার পর ছয় দিন বাসায় পরিবারের সাথে থাকার কথা থাকলেও চিকিৎসকদের আমরা এখন সেই সুযোগ দিতে পারছি না৷
বাংলাদেশে করোনায় ন মৃত্যু ও আক্রান্তর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে৷ গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ২১ জন৷ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪৯৷ ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৬০২ জন৷ এপর্যন্ত মোট আক্রান্ত ২৩ হাজার ৮৭০ জন৷
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।