রহিম শিকদার,সহকারী শিক্ষক,হবিগঞ্জ সদর,হবিগঞ্জ
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পাঠ চুকিয়ে চাকুরি নামক যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করতে করতে অবশেষে ঠাঁই হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। চাকুরি বড় কিংবা ছোট হোক প্রত্যেকটি ছেলে-মেয়ে একটি সপ্ন নিয়ে স্ব- স্ব কর্মস্থলে প্রবেশ করে। সপ্ন সারতি হয়ে আমিও আর দশজনের মতো আত্মনিয়োগ করি তথাকথিত ব্রত পেশায়। শিক্ষকতায় মহান ব্রত আর এক বুক সপ্ন নিয়ে ২০১৮ সালের ১ লা অক্টোবর সহকারী শিক্ষক হিসেবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার পদার্পণ। তখন পর্যন্ত আমি জানতাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারি ইন্সট্রাকটর পদে পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে। মন তখন পুলকিত হলো এইভেবে যে, দৃষ্টিকর্তা চাইলে একদিন আমিও নিজেকে অফিসার পদে পদায়ন করতে পারব। প্রধান শিক্ষক,সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার,সহকারি ইন্সট্রাকটর পদে সহকারী শিক্ষক দের জন্য ৫০% বিভাগীয় কোটা বহাল রয়েছে এবং ৪৫ বছর পর্যন্ত একজন প্রার্থী বিভাগীয় কোটা বলে আবেদন করতে পারবে কি
সাম্প্রতিককালে সহকারি শিক্ষকদের গ্রুপসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখতে পাচ্ছি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কেবল প্রধান শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রার্থীতা বহাল রেখে সহকারী শিক্ষকদের বাতিল করা হয়েছে। হাজার হাজার সহকারী শিক্ষকদের সপ্ন আজ ভুলন্ঠিত অধিদপ্তরের বৈষম্যমূলক বেড়াকলের পদতলে পৃষ্ট হয়ে। দেশের বেশিরভাগ সহকারি শিক্ষক তরুন আরো স্মার্টভাবে বললে আপডেটেট, এই মেধাবী সহকারী শিক্ষকের সপ্নকে বাধাগ্রস্থ করে একটা দেশের শিক্ষাব্যবস্থা কিভাবে সামনে এগিয়ে যাবে আমার বুঝে আসে না। অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রক মহোদয়গণরাই বা কোন পরিসংখ্যান বলে বা কোন চিন্তা থেকে এ ধরণের রুপ রেখা প্রণয়ন করেন কর্তাগণই ভাল জানেন। আসলে এটা নীতিমালার পরিবর্তন নয়, এটি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতি কর্তাদের বিদ্ধেষী মনোভাব পোষণ। আমি প্রধান শিক্ষকদের কে ছোট করে বলছি না, তুলনামুলক দিক থেকে সহকারি শিক্ষকগণ প্রধান শিক্ষকগণ এর চেয়ে অনেক বেশি এনার্জেটিক,আধুনিক। চিন্তা- চেতনায়, মননে,কাজে শিক্ষাদানে সবকিছুতে সহকারী রা এগিয়ে আছে, তাহলে প্রধান শিক্ষক শুধু বিভাগীয় কোটা বলে পদোন্নতি পাবে আর সহকারী শিক্ষক বঞ্চিত হবে,এ বৈষম্য কেনো থাকবে?? তাহলে কি বুঝবো সহকারী শিক্ষক প্রশাসনিক কাজ চালানোর জন্য যোগ্য নয়,তাই যদি হয় সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় কিভাবে ৩৮ তম বিসিএস এ শিক্ষা ক্যাডারে মনোনীত হয়, উপর মহলে প্রশ্ন রইল। মোটকথা সহকারী সিক্ষক আজ চরম বৈষম্যের স্বীকার। বেতন বৈষম্যের কথা আজ নাই বা বললাম। তাই প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ আর কাল ক্ষ্যাপন না করে আসুন সবাই এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলি।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।