কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) :
কিছুদিন আগেই সুন্দর পৃথিবীর জন্য সমান তালে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিল বাংলাদেশের সমগ্র জাতি। শত বছরের মহাবিপর্যয়ের পথিমধ্যে হঠাৎ করেই এ যেন থমকে যাওয়া। প্রতিবন্ধকতার সেই রোগের নাম কোভিট-১৯।করোনাভাইরাসের সৃষ্ট মহামারীর কারণে জাতি আজ মুখোমুখি হয়েছে অভাবনীয় এক সংকটে।করোনাভাইরাসের এক আঁতুড়ঘরে কঠিন ঝুঁকির মাঝেও ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করেনিরলসভাবে কাজ করছেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ।
বীরদর্পে ছুটে চলছেন কৃষক তথা কৃষকের মাঠে।তারা করোনা পরবর্তী খাদ্য চাহিদা পূরণ ও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কিশোরগঞ্জের ৯ টি ইউনিয়নের কৃষকের দ্বারে দ্বারে ফসল উৎপাদন, আধুনিক প্রযুক্তির যান্ত্রিকসরঞ্জাম বিতরণ,সরকার ঘোষিত আউশের প্রণোদনা বিতরণ, উঠোন বৈঠক,বিভিন্ন প্রদর্শনী পরিদর্শনকৃষক প্রশিক্ষণ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রার্দুভাবের মাঝেও সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলায়ও জীবনের ঝুকি নিয়ে তারাও কৃষক কৃষির জন্য নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। করোনাভাইরাস মানুষের সবকিছু কেড়ে নিলেও, প্রকৃতির মাঝে দেখা দিয়েছে অভাবনীয় আশীর্বাদ। উৎপাদিত ফসলের বাম্পার ফলন ও ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।করোনা ভাইরাসের ঝুকিতে থাকা দেশের বিভিন্নস্থানের মতো কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ইতিপূর্বে করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি সনাক্তও হয়েছে। শনাক্তের মাঝেও যেন গত ১৭ই আগস্ট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান নিজেই করোনায় আক্রান্ত হন।এমন দুর্যোগের মাঝেও উপজেলার ৬ লক্ষাধিক মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে খাদ্য নিরাপত্তার সৈনিক হিসাবে দেশ বাঁচাতে লড়াই করছেন কৃষকের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কৃষি বিভাগ। কৃষি বান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আবাদি জমি ফেলে না রেখে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এই নির্দেশনা কে যথাযথ অনুসরণ করে এই মুহুর্তে তারা মাঠে অবস্থান পূর্বক জমিতে ,সার ও বালাই ব্যবস্থাপনাসহ করণীয় বিষয় সম্পর্কে কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান করছেন। করোনা ভাইরাস জনিত চলমান দূর্যোগকালিন সময়েও কৌশলগত পদক্ষেপ সমূহ বাস্তবায়ন করে কিশোরগঞ্জে প্রতিটি বসতবাড়ির আঙ্গিনায় নিরাপদ সবজি চাষ ও সম্ভাব্য স্থানেআদা ও হলুদ চাষের ব্যবস্থা করা,প্রতিটি বাড়ির ,পুকুরপাড় ও রাস্তার পাশে নিরাপদ সবজি চাষে কৃষকদের কে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বসতবাড়ির আঙ্গিনা ও আশেপাশে সম্ভাব্য স্থান কমলা, মালটাপেয়ারা,লেবু, পেঁপে ও অন্যান্য ফল চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করণসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। আর কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আপৎকালীন দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার জন্য কৃষকরাও যেন কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন। অবারিত সবুজের মাঠ দেখলে বোঝা যায় গত বছরের চেয়েও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে হচ্ছে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানশাহ মোঃ আবুল কালাম বারী পাইলট বলেন,সরকার চলতি করোনাভাইরাস সৃষ্ট দুর্যোগে মাঠে কাজ করা ডাক্তার, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নিয়ে এসেছেন। এটা অত্যান্ত মহৎ,উদার ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এই সময়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে উপজেলা কৃষি বিভাগসরকারের নির্দেশনা মেনে নিজেদের পেশায় নিয়োজিত আছেন। কৃষকের ক্ষেতও যখন করোনার ঝুকিতে ঝুঁকিপূর্ণ,এমতাবস্থায় কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দ কৃষকদের দোরগোড়ায় কৃষি সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মানবিক কারণে কৃষি বিভাগকেও সরকারের ঘোষিত স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনা দরকার। এতে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজ করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, কৃষকের ক্ষেত পরিদর্শন, কৃষকগণকে পরামর্শ প্রদান, প্রশিক্ষণ ও মাঠ পরিদর্শন করা এবং নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি ও প্রেরণে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দ করোনার ঝুঁকিতে সময় কাটছে, এমনকি এ যাবৎ অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তথাপি সকলভীতিউপেক্ষা করে দেশ ও জাতির সেবায় কৃষি বিভাগের পক্ষ হতে আমরা নিরলস সেবা দিয়ে চলেছি এবং আশা করছি জনবান্ধব সরকারের সুদক্ষ পরিকল্পনায় দেশের খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকবে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।