সিলেটের লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ২:১২, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

সিলেটের লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

ADMIN, USA
প্রকাশিত আগস্ট ২৫, ২০২০
সিলেটের লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

সিলেটসহ সারাদেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নবায়নের জন্য সরকারের বেঁধে দেয়া সময় শেষ হয়েছে রোববার মধ্যরাতে। রোববার (২৩ আগস্ট) রাত ১২টার মধ্যে যারা নিবন্ধন ও লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে পারেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে যে হাসপাতালগুলো লাইসেন্স নবায়ন বা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেনি, তার চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হবে- এমনটা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র। তবে এ ক্ষেত্রে ‘কঠিন শর্তগুলো’ বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণে কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করা হতে পারে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে লাইসেন্স নেওয়া ও নবায়নের জন্য অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি চালু হয়। কিন্তু তাতে কোনও একটি শর্ত যদি পূরণ না হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশন হয় না, নবায়নও হয় না। সিলেটের অনেকে ঠিকমতো শর্ত পূরণ করতে না পেরে আবেদন করেনি বলেও জানা গেছে।

সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে ৫৮টি, ব্লাড ব্যাংক রয়েছে ৩টি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ৬৫টি।

এর মধ্যে কতটির লাইসেন্স ঠিক আছে এবং কতটি নবায়নের জন্য আবেদন করেছে এর পরিসংখ্যানের ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান আজ মঙ্গলবার সিলেটভিউ-কে বলেন, এই তালিকাটা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদনের শেষ তারিখ ছিলো ২৩ আগস্ট। কারা আবেদন করেছে আর কারা করেনি এই তালিকা চূড়ান্ত করতে একটু সময় লাগবে।

যারা করেনি তাদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুননিবন্ধনের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত কঠিন রয়েছে। এগুলোর বিবেচনায় ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে একটু শিথিলতার নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে। তবে এ ক্ষেত্রে যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় বা সরকারি নির্দেশনাকে উপেক্ষা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, সিলেট প্রাইভেট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বলছেন- লাইসেন্স নবায়ন ও গ্রহণের বেঁধে দেয়া সময় (২৩ আগস্ট পর্যন্ত ) যথেষ্ট নয়। এছাড়াও বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের ২০১৭/২০১৮ইং সাল পর্যন্ত মেয়াদ থাকাবস্থায় পুনরায় নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়েছে। যা ২০২১ সাল পর্যন্ত সরকারি সকল ফি জমা দেওয়া হয়েছে। ৩ বছর ধরে নবায়নের জন্য অপেক্ষায় আছি আমরা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সিলেট স্বাস্থ্যবিভাগ ও প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করে আসলেও মূলত অধিদপ্তরের কালক্ষেপনের কারণে আমরা নবায়ন নিয়ে বেকায়দায় পড়েছি। স্বাস্থ্য বিভাগ লাইসেন্স নবায়নে ট্রেড লাইসেন্স,পরিবেশ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আবশ্যক করেছে, যা এই সংকটকালীন পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত সময়ে সংগ্রহ করা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি।

এছাড়া প্রতিটি ছাড়পত্র ও নবায়নের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে কয়েকগুন। অপরদিকে ৫০ শয্যার হাসপাতালের ট্রেড লাইসেন্স ফি ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ হাজার টাকা ও প্রতি বছর নবায়ন ফি ৪০ হাজার টাকা , পাশাপাশি নতুন করে রেজিষ্ট্রেশন ফি এক কালীন ৪০ হাজার টাকা ধার্য করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।

প্রাইভেট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স ও নবায়নের সময়সীমা আরো বাড়ানোর দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

এ বিষয়ে গত ১৭ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনও করে সিলেট প্রাইভেট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এসোসিয়েশন।

অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, সিলেটসহ সারা দেশের অর্ধেকেরও বেশি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ। আর লাইসেন্সই নেই শতকরা ১০ শতাংশের। লাইসেন্স ছাড়াই এসব হাসপাতাল-ক্লিনিক বাণিজ্য করছে বছরের পর বছর। মূলত ২০১৮ সালের পরই দেশের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স করা এবং নবায়নে শিথিলতা আসে বলেও দাবি করে অধিদফতর।।

তবে এজন্য জনবল সংকটও কিছুটা দায়ী বলে মন্তব্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে কেবল নোটিশ ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া ছাড়া আর কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে না স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরও বলছে, তাদের জনবল সংকটের কারণে এ সমস্যায় পড়তে হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।