স্বপ্নের বাইপাস এখন মরণফাঁদ - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, ভোর ৫:১৭, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

স্বপ্নের বাইপাস এখন মরণফাঁদ

ADMIN, USA
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০

মোরশেদ আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম) :
চট্টগ্রামের পটিয়ার যানজট নিরসনে পটিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের দাবি ছিল বাইপাস সড়ক নির্মাণ। সেই স্বপ্ন পূরণ করে ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে স্বপ্নের বাইপাস সড়ক এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে! গত দশ মাসে এই সড়কে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক।
সর্বশেষ গত ৩০ আগষ্ট বিকালে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা একটি মালবাহী ট্রাক বাইপাস বাকখালী মোড়ে দুই বাইসাইকেল আরোহী মামাত-ফুফাত ভাইকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তারা প্রাণ হারান।
এই সড়কে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এসব দুর্ঘটনার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ দায়ী করছেন জনসাধারণের অসাবধানতা ও অসচেতনতাকে। অন্যদিকে, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অপরিকল্পিতভাবে সড়ক নির্মাণ ও মহাসড়কের ক্রসিংগুলো অপরিকল্পিত। যে কারণে এত দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। আর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বলছেন, দুর্ঘটনারোধে গাড়ির উচ্চগতি বন্ধে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পটিয়ার অদূরে ইন্দ্রপুল এলাকা থেকে চক্রশালা গিরিশ চৌধুরী বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার বাইপাস মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দীর্ঘ সড়কটি নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর পটিযা- ১১ আসনের সংসদ সদস্য শামশুল হক চেীধুরী ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন। এরপরই শুরু হয় সড়কটির নির্মাণকাজ। শেষ হয় ২০১৯ সালের ৩০ জুন। এবং সর্বসাধারনের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ১০ই আগষ্ট।
এই সড়কে ৬টি ঝুঁকিপূর্ণ পযেন্ট রয়েছে, এই পয়েন্ট গুলোতেই বেশি দূর্ঘটনা ঘটছে। পয়েন্ট গুলো হল: বাইপাসের আনোয়ারা রাস্তার মাথা, বৈলতলী সড়ক, ভাটিখাইন, কচুয়াই ইউনিয়নের ফারুকীপাড়া, পৌর সদরের বাকখালী, করল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় রাস্তা। এছাড়াও সড়কে বাতির ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়িত চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। কিশোর গ্যাং অভিনব ফাঁদ বুনে রেখেছে। সন্ধার পর এই সড়ক দিয়ে কেও চলাচল করলে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে সব কিছু।
পটিয়ার বাইপাস সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে জানিয়ে স্থানীয়রা বলেন, চট্টগ্রাম কক্সবাজার-আরাকান মহাসড়কের যানযট নিরসনে বাইপাস সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভুৃমিকা রাখছে। তবে সড়ক বিভাগের কিছু অপরিকল্পনাও রয়েছে। সড়ক বিভাগের অপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তারা বলেন, পৌরসভার যে লিংক রোডগুলোর (সংযোগ সড়ক) ওপর দিয়ে বাইপাস মহাসড়কটি নির্মাণ হয়েছে সেই লিংক রোডগুলোর প্রবেশ মুখ অপরিচ্ছন্ন ও বন্ধ। মহাসড়ক দিয়ে কোনো যানবাহন আসছে কিনা, লিংক রোড থেকে সেটি দেখা যায় না। যার কারণে লিংক রোড দিয়ে বাইপাস সড়কে প্রবেশের মুহূর্তেই দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। অধিকাংশ দুর্ঘটনা এভাবেই হয়েছে। দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার উপায় কী- এমন প্রশ্নে তারা জানান, লিংক রোডের সংযোগ মুখের স্থাপনাগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। মহাসড়ক দিয়ে কোন যানবাহন আসছে তা যেন দেখা যায়। এছাড়া জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে। মহাসড়কে উঠেই শতভাগ ¯িপ্রডে গাড়ি চালানো যাবে না। এছাড়া চালকদের গাড়ির গতিরোধে পুলিশের মোবাইল টিমকে জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তবেই দুর্ঘটনা কমে আসবে।
পটিয়া কচুয়াই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসীম বলেন, বাইপাস সড়কটি নির্মাণ হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। ক্রসিংগুলো পরিকল্পনাহীন। এখন সেগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। মূলত এ কারণেই বাড়ছে দুর্ঘটনা।
পটিয়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি বিমল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘বাইপাসে পথচারী ও যাত্রীরা সতর্ক হলে এই দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। চালক ও জনগনের সচেতনতা শতকরা ৮০ ভাগ দূর্ঘটনা কমাতে পারে’।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।