তমাল ভৌমিক, নওগাঁ :
নওগাঁয় পুরোদমে চলতি রোপা আমন মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। জেলার মাঠের পর মাঠ এখন পাকা ধানের সোনালী চাদরে মোড়ানো। পরপর চার বারের বন্যায় ক্ষতি হওয়ার পরও কৃষি বিভাগ মনে করছে জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলায় ধানের ব্যাম্পার ফলন হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ হাজার ১শ’ ১৫ মেট্রিক টন অতিরিক্ত চাল উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ফলে জেলায় মোট ৬ লাখ ৫২ হাজার ২শ’ ৯০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এদিকে জেলার কৃষকরা আমন ধানের ব্যাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে খুশি হয়েছে। বর্তমানের প্রতি মণ ধান পারিজা ৯৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা, সুগন্ধি আতব ১ হাজার থেকে ১১শ’ টাকা, স্বর্ণা ৯শ’ ২০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা। মহাদেবপুর উপজেলার সরস্বতীপুর নওহাটা মোড়ে কৃষক আবাউল হক, রহিম উদ্দিনসহ অন্যরা জানান, কিছুটা কাঁচা অবস্থায় ধানের ভালো দাম পাওয়ায় তার মতো সব কৃষকরাই খুশি হয়েছে। একই ভাবে ধানের ভালো দাম পেয়ে কৃখকরা আগামিতে ধান চাষে আরো আগ্রহী হবেন।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি খরিপ-২/২০২০-২০২১ মৌসুমের রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উন্নত ফলনশীল উফশী জাতের ১ লাখ ৬৮ হাজার ১শ’ ৭০ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ২৯ হাজার ৮০ হেক্টর এবং হাইব্রীড জাতের ২শ’ ৫০ হেক্টর। জেলায় প্রায় ৬০ ভাগ ধান কাটা মাড়াই শেষে হয়েছে।
উপজেলা ভিত্তিক ধার্যকৃত লক্ষমাত্রা ছিল নওগাঁ সদরে ৯ হাজার ৭শ’ ৫০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ২৮ হাজার ৩শ’ ৩৫ হেক্টর, পতœীতলায় ২৮ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর, ধামইরহাটে ১৯ হাজার ৭শ’ ৯০ হেক্টর, রানীনগরে ১৮ হাজার ৮৫ হেক্টর, আত্রাইয়ে ৫ হাজার ১শ’ ৩০ হেক্টর, বদলগাছিতে ১৩ হাজার ৭শ’ ৭০ হেক্টর, সাপাহারে ১২ হাজার ৭৫ হেক্টর, পোরশায় ১৬ হাজার ৬শ’ ৯৫ হেক্টর, মান্দায় ১৫ হাজার ৭শ’ ৫৫ হেক্টর এবং নিয়ামতপুরে ২৯ হাজার ৬শ’ ৬৫ হেক্টর জমিতে।
কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়। কৃষি বিভাগ এই পরিমান জমিতে হেক্টর প্রতি গড়ে ৩ দশমিক ১০ মেট্রিকটন হিসেবে ৬ লাখ ১২ হার্জা ৭শ’ ১৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ জানান, জেলায় পরপর চার বারের বন্যায় ৫ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমির ধান সম্পন্নভাবে বিনষ্ট হয়ে যায়। বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার পর জেলায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৮শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান উৎপাদন নিশ্চিত হয়। ইতিমধ্যে ৬০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। গড়ে হেক্টর প্রতি চালের আকারে উৎপাদিত হয়েছে ৩ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন। এতে জেলায় মোট ৬ লাখ ৫২ হাজার ২শ’ ৯০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা নিশ্চিত হয়েছে যা ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ হাজার ১শ’ ১৫ মেট্রিক টন বেশি।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।