পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, ভারত উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠী দায়েশ বা আইএসের প্রতি সমর্থন ও উস্কানি দিয়ে পাকিস্তানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ভারত আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে এইসব সন্ত্রাসীরা বেলুচিস্তান প্রদেশের কয়লা খনিতে কর্মরত শ্রমিকদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করছে।
সম্প্রতি বেলুচিস্তানের মাচে কয়লা খনিতে সন্ত্রাসী হামলায় শিয়া মুসলিম শ্রমিক নিহত হওয়ার প্রতিবাদে কোয়েটায় বসবাসকারী শত শত হাজারা শিয়া মুসলমান ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন কোরে ওই অঞ্চলে সংখ্যালঘু শিয়া মুসলমানদের জানমাল রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, ভারত কিংবা পাকিস্তানে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন দেয়ার জন্য সবসময়ই ইসলামাবাদ ও নয়া দিল্লি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের যেখানেই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে তার জন্য নয়াদিল্লি সরাসরি পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে। অন্যদিকে ইসলামাবাদও সেদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উস্কানি দেয়া ও তাদের সমর্থনের জন্য ভারতকে অভিযুক্ত করে আসছে। সম্প্রতি বেলুচিস্তানের কয়লা খনিতে আইএস সন্ত্রাসীদের হামলায় যে ১১ জন শিয়া মুসলিম শ্রমিক নিহত হয়েছে তার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আবারো ভারতকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, পাকিস্তানে নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্যই নয়াদিল্লি এসব জঙ্গি সন্ত্রাসীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরকে অভিযুক্ত করলেও কোনো দেশই তাদের দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এ কারণে দুই দেশের জনমনে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের এসব অভিযোগের বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা হিসেবে দেখা হয়। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই যেকোন ইস্যুতে একে অপরের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারের মাধ্যমে এ অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একে অপরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চালায়। দুই দেশই উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে মোকাবেলা করা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টির জন্য একে অপরকে অভিযুক্ত করে আসছে।
যাইহোক, আইএস ও তালেবানের মত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো দ্বারা বহু দেশ হুমকির সম্মুখীন। এ অবস্থায় ভারত-পাকিস্তানের একে অপরের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ কেবল উগ্র গোষ্ঠীগুলোর মোকাবেলায় সহযোগিতার পথে অন্তরায় হয়ে থাকবে।
প্রায় দুই দশক ধরে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক উত্তেজনা বহুগুণে বেড়েছে এবং এবং এর ফলে কেবল লাভবান হচ্ছে উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।