কুষ্টিয়ার জিকে প্রকল্পের সেচ পাম্প বন্ধ, হুমকিতে বোরো আবাদ - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ১২:৪৯, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

কুষ্টিয়ার জিকে প্রকল্পের সেচ পাম্প বন্ধ, হুমকিতে বোরো আবাদ

ADMIN, USA
প্রকাশিত এপ্রিল ২, ২০২১

কুষ্টিয়া ০২ এপ্রিল ২০২১
পদ্মানদীতে পানি কমে যাওয়ায় দেশের অন্যতম বৃহৎ গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের পাম্প বন্ধ হয়ে গেছে। গত ২৬ মার্চ থেকে এ প্রকল্পের দুটি পাম্পই বন্ধ রয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে প্রকল্প এলাকার প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান।
জিকে সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, গেল সপ্তায় হঠাৎ করে পদ্মানদীর পানির স্তর নেমে যায়। এর ফলে গত ২৬ মার্চ বাধ্য হয়ে তারা সেচ পাম্প বন্ধ করে দেন। তিনি বলেন, সেচ পাম্প চালু রাখতে হলে পদ্মা নদীর সঙ্গে যুক্ত ইন্টেক চ্যানেলে নুন্যতম পানির স্তর ৪.৫ মিটার থাকা দরকার। কিন্তু বর্তমানে পানির স্তর ৪ মিটারে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, পানি সংকটের ফলে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। কার, পানি ৪.৫ মিটার আরএলের নিচে নামলে পাম্প মেশিনের কয়েল ও বিয়ারিংয়ের তাপমাত্রা বাড়ে। এতে করে মেশিনে শব্দ ও ঝাঁকুনি হয়। এই সব সমস্যার কারণেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশনায় পাম্প দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এই কর্মকর্তার দাবি শুষ্ক মৌসুমে উজানের দেশ ভারত গঙ্গা নদীর পানি ফারাক্কা ব্যারাজে আটকে দেয়। গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী ভারত প্রথম ১০ দিন পানি প্রত্যাহার করে। পরের ১০ দিন তারা বাংলাদেশে পানি সরবরাহ করে। শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ এভাবেই গঙ্গার পানির হিস্যা পেয়ে থাকে। বর্তমানে ভারতের পানি গ্রহণের সময় চলছে। এ কারণে পদ্মা নদীতে পানির স্তর নেমে গেছে। ভারত পানি ছেড়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
২০২১ সালের ১৫ ও ১৭ জানুয়ারি সেচ সুবিধা দিতে জিকে সেচ প্রকল্পের দুটি পাম্প চালু করা হয়। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের কৃষকদের এই সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল। এগুলো একযোগে সেকেন্ডে ১ হাজার ২০০ কিউসেক পানি সরবরাহে সক্ষম। চালুর পর থেকে পাম্প দুটি ১০ মাস নিরবচ্ছিন্নভাবে চালানোর কথা ছিল।
এদিকে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেচ পাম্প বন্ধ থাকায় হুমকিতে পড়েছে এ প্রকল্পের আওতাধীন প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। এরই মধ্যে পানির অভাবে ধান ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। কুষ্টি সেচ সম্প্রসারণ বিভাগের সহকারী কমিশনার প্রকৌশলী আইয়ুব আলী জানান, চলতি মৌসুমে জিকে সেচ প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়া জেলার ৫ উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর এবং পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙা ও ঝিনাইদহ জেলার ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, জিকে সেচ প্রকল্পের সেচ পাম্প প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকায় জেলার অনেক বোরো চাষী বিপাকে পড়েছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে ধানের শীষ বের হবে। এ সময় ক্ষেতে সার্বক্ষনিক পানি থাকা দরকার। তিনি বলেন, দ্রুত পানি সরবারহ শুরু না হলে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বেন প্রকল্প এলাকার বোরো চাষীরা।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার কৃষকদের স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা দিতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১ কিলোমিটার ভাটিতে দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ চালু হয় ১৯৬৯ সালে। প্রথম পর্যায়ে চার জেলার ১৩ উপজেলার ৪ লাখ ৮৮ হাজার হেক্টর জমি প্রকল্পের আওতাধীন ছিল। তবে প্রকল্পের পানির উৎস পদ্মা নদীতে দিন দিন পানি সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রকল্পটি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।