১১টি সীমান্তবর্তী জেলায় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সকাল ১০:৫১, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

১১টি সীমান্তবর্তী জেলায় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী

newsup
প্রকাশিত জুন ৩, ২০২১
১১টি সীমান্তবর্তী জেলায় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী

নিউজ ডেস্কঃ  দেশে করোনার সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিশেষ করে অন্যান্য জেলার চেয়ে সীমান্তের ১১টি জেলায় সংক্রমণ শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। এসব জেলার হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেনসহ অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রী মজুত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সীমান্তবর্তী যেসব জেলায় করোনা রোগী বাড়ছে, সেখানকার প্রশাসন স্থানীয়ভাবে লকডাউনসহ কিছু বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করছে। গতকাল নওগাঁ পৌরসভাসহ কয়েকটি উপজেলা এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। খুলনা নগরের তিন থানা এলাকায় দোকানপাট বন্ধসহ বিধিনিষেধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসন সন্ধ্যা সাতটা থেকে পরের দিন সকাল আটটা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বের না হওয়াসহ বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে।

করোনা রোগী বাড়তে শুরু করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরে সীমান্তবর্তী আরও সাতটি জেলা লকডাউন করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটি। জেলাগুলো হচ্ছে নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও খুলনা। এ ছাড়া কক্সবাজার, ফেনী ও সিলেট জেলাতেও সংক্রমণ বাড়ছে।

গতকাল বুলেটিনে অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে শনাক্তের হার অন্য যেকোনো জেলার তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে। গত ২৬ মে শনাক্তের হার ছিল ৯ দশমিক ১১ শতাংশ।

সে দিন ১ হাজার ৪৯৭ জন রোগী চিহ্নিত হয়। তারপর তিন দিন সংক্রমণের সংখ্যা খানিকটা কম ছিল। এরপর আবার সপ্তাহের শেষে এসে ৩১ মে এবং ১ জুনে শনাক্তের সংখ্যা ১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। এর মানে সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ৯০ ভাগই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বাকি ১০ শতাংশ রোগীর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে এবং তাঁদের অনেকেরই অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে। তিনি বলেন, এসব জেলায় পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সারা দেশে প্রায় ১ হাজার ৫৮৯টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা এবং ১ হাজার ৪৬৯টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর সরবরাহ করা হয়েছে।

সীমান্তবর্তী নওগাঁ জেলায় করোনা সংক্রমণের হার প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। গত ২০ মে থেকে গতকাল পর্যন্ত করোনা শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়ে নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলার সাপাহার, পোরশা ও মান্দা উপজেলায় বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ গতকাল এ ঘোষণা দেন।

জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ বলেন, গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে নওগাঁয় করোনা সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের ওপরে। জেলার মধ্যে নওগাঁ পৌরসভা ও সীমান্তবর্তী উপজেলা নিয়ামতপুরে দুই সপ্তাহ ধরে করোনার সংক্রমণের হার প্রায় ৫০ শতাংশ। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় গতকাল রাত ১২টা থেকে লকডাউন দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নতুন বিধিনিষেধ জারি করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। এ সময় রাজশাহীর শপিং মলগুলো বন্ধ থাকবে, সন্ধ্যা সাতটা থেকে পরের দিন সকাল আটটা পর্যন্ত ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না, রেস্তোরাঁয় বসিয়ে ক্রেতাদের খাওয়ানো যাবে না, কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি উন্মুক্ত স্থানে সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।

খুলনা নগরের সদর, সোনাডাঙ্গা ও খালিশপুর তিন থানা এলাকায় দোকানপাট বন্ধসহ কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। ৪ জুন থেকে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। খুলনা জেলা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদত বলেন, লকডাউন হচ্ছে না। তবে তিন থানায় সাত দিন ওষুধ, কাঁচাবাজার ছাড়া সারা দিন দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাত দিন পর যদি পরিস্থিতি সে রকম উন্নতি না হয়, তাহলে কঠোর সিদ্ধান্ত হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৪ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৮৮ জনের। গত ৩৩ দিনের মধ্যে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। দেশে এ পর্যন্ত মোট করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৪ হাজার ২৯৩।

করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ২৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।