নিউজ ডেস্কঃ
আগামী ১৯ জুলাই থেকে করোনা সংক্রান্ত সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা ভাবছে ব্রিটিশ সরকার। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে আইনি বিধিনিষেধ আরোপ না করে বিষয়টিকে জনগণের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধের ওপর ছেড়ে দিতে চাইছে দেশটি। এমনকি মাস্ক পরা না পরার বিষয়টিও নাগরিকদের ইচ্ছাধীন রাখতে চায় কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সাংবাদিক অ্যান্ড্রু মারের উপস্থাপনায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এসব কথা জানিয়েছেন দেশটির আবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক।
রবার্ট জেনরিক বলেন, মাস্ক নিয়ে একেকজন একেকরকম ভাববেন তবে আস্থাভাজন নাগরিকরা ভালোর চর্চাই করবেন।
তবে স্কটিশ সরকার মনে করে, মাস্কের ‘চলমান প্রয়োজন’ থাকবে। দেশটির একজন মুখপাত্র বলেন, আগামী ৯ আগস্ট সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে। তবে আশা করা হচ্ছে মানুষ গণপরিবহন এবং দোকানে মাস্ক ব্যবহার করবে।
যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হলেও স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং আয়ারল্যান্ড সরকার নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি অনুযায়ী চলছে।
ওয়েলসের মন্ত্রী মিক অ্যান্টোনিও বলেন, ওয়েলসের অবস্থা ক্রমশ স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। ১৫ জুলাই এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আগামী ১৯ জুলাই থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে কিনা এ বিষয়ে ব্রিটিশ মন্ত্রী জেনেরিক বলেন, টিকা কার্যক্রমের জন্য সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ এসেছে আমাদের সামনে। এ জন্য টিকা কার্যক্রমকে ধন্যবাদ জানানো উচিত।
তবে বিধিনিষেধ তুলে নিলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এখন একটি নতুন সময়ে প্রবেশ করতে হবে। যেখানে ভাইরাসে সঙ্গেই বসবাস করা শিখতে হবে। আমরা সতর্কতা অবলম্বন করব এবং সবাই ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব নেব।
মাস্ক পরা বিষয়ক বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত যদি আসে তাহলে আপনি মাস্ক পরবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রবার্ট জেনরিক বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে মাস্ক পরতে আমার ভালো লাগে না।’
সাক্ষাৎকারে রবার্ট জেনরিক নাগরিকদের পুরোপুরি টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
তবে যুক্তরাজ্যের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সংগঠন ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর চেয়ারম্যান ডা. চান্দ নাগপাল বিবিসিকে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে এখন করোনা সংক্রমণের যে পরিস্থিতি, তাতে আগামী দুই বা তিন সপ্তাহের মধ্যে বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হলে তা শুধু একটি মারাত্মক ভুল নয়, বরং আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।’
উল্লেখ্য, পরিসংখ্যান ভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ৪৯ লাখ ৩ হাজার ৪৩৪ জন আর মোট মারা গেছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ২২২ জন।
দেশটিতে গত রোববার নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ২৪৮ জন এবং মারা গেছেন ১৫ জন। যা গত ২৮ দিনে করোনা শনাক্তের রেকর্ড। নতুন রোগীদের অধিকাংশই ডেলটা ধরনে আক্রান্ত।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।