ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে তুরস্ক
০১ আগ ২০২১, ০৬:৪৬ অপরাহ্ণ

নিউজ ডেস্কঃ
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে চার দিন ধরে চলা দাবানাল আরও বিস্তৃত হয়েছে। দমকা বাতাস আগুনের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
বহু ঘরবাড়ি ও কৃষিক্ষেত আগুনে পুড়ে গেছে এবং হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে গেছেন। দাবানলের তীব্রতা এত বেশি যে, তুরস্কের আনতালিয়া ও মারসিন প্রদেশ থেকে ধোঁয়া গ্রিস পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, যার দূরত্ব দাবানলের স্থান থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার।
এরই মধ্যে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় ১৭ প্রদেশের অন্তত ৭০ এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে আজিয়ান সাগর উপকূলবর্তী পর্যটন নগরী মারমারিসের। সেখানকার বেশ কয়েকটি রিসোর্টে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা।
দেশি বিদেশি বহু পর্যটক ও স্থানীয় অধিবাসীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টুরিস্টদের নিরাপদ স্থানে সরাতে তুর্কি কোস্টগার্ডকে সহায়তা করছে ব্যক্তিগত বোট ও ইয়টগুলো। এর মধ্যেই বোডরাম শহরের তিনটি পাঁচতারকা হোটেল খালি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে, তুরস্কের কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, মানাওগাতের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের আকসেকি এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার সময় ৮২ বছরের এক বৃদ্ধের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া গেছে। এছাড়া, মানাওগাতের ২০ কিলোমিটার পূর্বের আরেকটি এলাকায় খুঁজে পাওয়া গেছে আরো দুই জনের মৃতদেহ। আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে একটি বিমান, একটি ড্রোন, ১৯টি হেলিকপ্টার, প্রায় ২৫০টি যান এবং ৯৬০ জন কর্মী।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, যেসব এলাকায় বাড়িঘর আগুনের গ্রাসে চলে যেতে পারে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে বেশকিছু বাড়িঘর, কার্যালয় ভবন, ফার্ম, কৃষিজমি, গ্রিন হাউজ এবং যানবাহনও।
দেশি-বিদেশি অগ্নিনির্বাপক পাঁচটি বিমান, ৪৫টি হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে এক হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী।
তুরস্কের কৃষি ও বন মন্ত্রী বেকির পাকদেমিরলি জানিয়েছেন, গত চার দিনে ৯৮টি দাবানল শুরু হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে ৮৮টিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
দেশটির উপকূলীয় প্রদেশ আদানা, ওসমানিয়ে, আনথাইলিয়া, মেইসিন ও পশ্চিম উপকূলীয় প্রদেশ মুগলায় দাবানল অব্যাহত আছে।
পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান মানবগাতের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত সব বাড়ি পুনর্নির্মাণের ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এরদোগান বলেছেন, আজারবাইজন, রাশিয়া, ইউক্রেন ও সর্বশেষ ইরান থেকে অগ্নিনির্বাপক বিমান এসে পৌঁছার ফলে দাবানল নেভানোর কাজ অনেকটা সহজ হয়েছে।
উপগ্রহ থেকে নেওয়া ছবিতে দেখা গেছে, আনথাইলিয়া ও মেইসিন প্রদেশের দাবানল থেকে ছড়িয়ে পড়া ধোঁয়া দেড়শ কিলোমিটার দূরে সাইপ্রাস দ্বীপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
তপ্ত গ্রীষ্মের সময় তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে দাবানল দেখা গেলেও এবারের আগুন অনেক বড় অংশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে।