নিউজ ডেস্কঃ
অন্ধকার রাত। হাসপাতালের ছাদ থেকে উড়ে গেল একটি ড্রোন। ব্যস্ত নগরীর গাড়ির শব্দে ড্রোনের শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছিল। ব্যস্ত নগরীর রাস্তাঘাট, উঁচু অ্যাপার্টমেন্ট, দোকানপাট আর অফিসের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া ড্রোনটি বহন করছিল একটি মূল্যবান জিনিস, মানব ফুসফুস।
ড্রোনের নানামুখী ব্যবহার নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। আগে ড্রোন বলতে শুধু মনুষ্যবিহীন যুদ্ধবিমান বোঝালেও বর্তমানে চালকবিহীন ড্রোনের সাহায্যে সিনেমার শুটিং থেকে শুরু করে খাবার ডেলিভারি পর্যন্ত দেওয়া হয়। এবার এই ড্রোন দিয়ে রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য ফুসফুস উড়িয়ে নিয়ে গেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার টরন্টো শহরে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে এই ঘটনা ঘটে। সফল অস্ত্রোপচারের পর ওই রোগী বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।
কিউবেকভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইউনিডার বায়োইলেকট্রনিকস ওই কার্বন ফাইবার ইলেক্ট্রিক ড্রোন নির্মাণ করেছে। স্বচালিত হলেও চিকিৎসক আর প্রকৌশলীরা উড্ডয়নের পর ড্রোনটির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রেখেছিলেন বলে এএফপি জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টরন্টোর ওয়েস্টার্ন হাসপাতাল থেকে ফুসফুস উড়িয়ে নেওয়া হয় এক কিলোমিটার দূরের টরন্টো জেনারেল হাসপাতালে। সাড়ে ১৫ কেজি ওজনের ড্রোনটির ওই পথ পাড়ি দিতে সময় লেগেছে ১০ মিনিটের কম সময়। ড্রোনের সঙ্গে যুক্ত একটি হিমায়িত কালো কন্টেইনারের ভেতর ফুসফুসটি রাখা ছিল। ওই হিমায়িত কন্টেইনার ফুসফুসের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করেছে বলে ইউনিডার বায়োইলেকট্রনিকসের প্রকৌশলী মাইকেল কার্ডিয়াল জানিয়েছেন।
প্রতিস্থাপনের জন্য বিভিন্ন অঙ্গ সাধারণত বিমানে এবং গাড়িতে স্থানান্তর করা হয়। তবে এই প্রথম ড্রোনের সাহায্যে কোনো মানব ফুসফুস পরিবহণ করা হলো বলে ইউনিডার বায়োইলেকট্রনিকস জানিয়েছে। অবশ্য এর আগে ২০১৯ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ড্রোনের মাধ্যমে কিডনি পরিবহণ করা হয়।
যানজট এড়িয়ে দ্রুততম সময়ে অঙ্গ স্থানান্তর করার জন্য হাসপাতালগুলো ড্রোন ব্যবহার শুরু করছে বলে এএফপি জানিয়েছে।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।