নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব-২০২১’ উপলক্ষে গতকাল বুধবার এক বাণীতে এ আহ্বান জানান।
প্রতি বছরের মতো এবারও আজ বৃহস্পতিবার ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব-২০২১’ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ এখন মাছে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, উদ্বৃত্তও বটে। এ অর্জন জাতির জন্য গৌরবের।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যান। জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে।’
‘এ বছর আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার নেতৃত্বাধীন সরকার শুরু থেকেই কৃষি খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। কৃষি খাতে ভর্তুকি এবং কৃষি ঋণের পরিমাণ অনেক গুণ বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে তৃতীয় ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। কেবল ধান নয়, দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও রফতানি আয়ে মৎস্য খাতের অবদান আজ সর্বজনস্বীকৃত।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২০ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যমতে, মিঠা পানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে প্রথম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আবহমান গ্রামবাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দায়িত্বশীল পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং এর সুফল যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভোগ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পর্যটন শিল্প বর্তমান বিশ্বে শ্রমঘন এবং সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নসহ দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটনের গুরুত্ব অবশ্যম্ভাবী।’
তিনি এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘বর্তমান করোনা মহামারির মধ্যেও রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আমি আশা করি, পদক্ষেপ বাংলাদেশ ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব’র মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পর্যটন শিল্প ও ইলিশের গুরুত্ব ব্যাপক প্রচার করবে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি অবদান রাখবে।’
তিনি ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।