নিউজ ডেস্কঃ
যুদ্ধ মানব জাতির জন্য এক কালো অধ্যায়ের নাম। যে নামকে কেন্দ্র করে পৃথিবীকে রক্তাক্ত করে তোলে। প্রাণ বিসর্জন দেয় মুক্তি ও স্বাধীনতা পাগল জাতির বীর সৈনিক ও সন্তান।
তারই ধারাবাহিকতায় ১১ নভেম্বর একটি ঐতিহাসিক দিন। ফ্রান্সে সরকারি ছুটির দিন। প্রতি বছর এই দিনকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সসহ বেশ কিছু দেশে ছুটির দিন পালন করা হয়। কিন্তু কেন ছুটির দিন? এখানে এই দিনের বিশেষ গুরত্ব বা তাৎপর্য রয়েছে। ২৮ জুলাই ১৯১৪ সালে শুরু হওয়া প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধ ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয়।
এই সময় সেন্ট্রাল পাওয়ার বা কেন্দ্রীয় শক্তি পরাজিত হয়। কী পরিমাণ মানুষ মারা গেছে এ নিয়ে নানা সংখ্যা পাওয়া যায়। তবে এটুকু বলা যায় কয়েক কোটি মানুষ নিহত হয়। কয়েক কোটি মানুষ আহত হয় ও অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ হয়। এ যুদ্ধের শেষে রাশিয়ান, জার্মান, অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য ও উসমানি খেলাফত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু যায় নতুন সাম্রাজ্যের অধীনে আর অস্ট্রিয়া, চেক স্লোভাকিয়া, এস্তোনিয়া, হাঙ্গেরি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া এবং তুরস্ক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠে। তিনটি বড় সাম্রাজ্যের পতন হয়। এক উসমানি সাম্রাজ্য ও তুরস্ক ছাড়া বাকি সকল এলাকা ফ্রান্স ও ব্রিটেন ভাগ করে নিয়ে যায়।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত হয় লীগ অব নেশন্স। যার বর্তমান রূপ জাতিসংঘ। যুদ্ধে পরাজিত জার্মানিকে অস্ত্রহীন করে ২৬৯ বিলিয়ন গোল্ড মার্ক জরিমানা করা হয় এবং ১৮৭২ এর যুদ্ধে জার্মান কর্তৃক দখলকৃত আলসাক লরেন ফ্রান্সকে ফেরত দেয়া হয়। এ যুদ্ধের সুযোগে রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের মাধ্যমে জার সম্রাটের পতন হয়ে ক্ষমতায় আসে লেনিনের সমাজতন্ত্র। বিশ্ব পরিস্থিতি ও বিশ্ব মানচিত্রে আসে বিপুল পরিবর্তন। এ যুদ্ধ ছিল পৃথিবীর জন্য এক ভয়াবহ দুর্দিনের কাল। এর আগে এমন আতংক আর দুর্যোগ পৃথিবী প্রত্যক্ষ করেনি। ইতিমধ্যে গুরুত্বের সঙ্গে ফ্রান্স ১১ নভেম্বর প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সমাপ্তি -স্মৃতিচারণার ১০৩তম দিবস পালন করেছে। এই দিনে ফ্রান্স সরকার অধিকাংশ যাত্রায় বাস ও মেট্রো রেল সংক্ষিপ্ত করে দেয়। সরকারি ও আধা সরকারি এবং প্রশাসনের উদ্দ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।