নিউজ ডেস্কঃ
দুর্গম এলাকায় অন্ধকারে আলোর মশাল হাতে পথ চলেন পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার মো. রুবেল মিয়া। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অদম্য রুবেল গড়ে তুলেন শিশু-কিশোর ও তরুণদের জন্য ‘উপকূল পাঠাগার’। তার স্বপ্নযাত্রায় সঙ্গী হন গ্রামের আরও কয়েক তরুণ। কিন্তু সমস্যা হলো, পাঠাগার হলেই সবাই হুড়মুড় করে বই পড়তে আসবে—এমন তো না-ও হতে পারে। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে রুবেলের হার না মানা মনোভাব নিয়ে শুরু হয় নতুন স্বপ্নের বীজ বোনা।
বর্তমানে তাদের পাঠাগারে অনেক তরুণ ও শিশু-কিশোর আসে নিয়মিত পাঠচক্রে। দক্ষিণ বাংলার কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর মধ্যখানে ছোট জনপদ মঠবাড়িয়া। মঠবাড়িয়া সদর থেকে ফসলের মাঠের বুক চিরে আঁকাবাঁকা পথ চলে গেছে বেতমোর গ্রামে, সেখানেই দেখা মিলবে এই পাঠাগারের। পিচঢালা পথের দু’পাশে গাছের সারি। বাতাসে যেন ছড়িয়ে পড়ছে সবুজের ঘ্রাণ। গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের বইপড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতেই তিনি গড়ে তোলেন এই পাঠাগার। যে পাঠাগার আজ অন্ধকার দূর করে আলো ছড়াচ্ছে দুর্গম এলাকায়। বই পড়তে শিশুরা যেন গড়িমসি না করে সেই ব্যবস্হাও করেছে ‘উপকূল পাঠাগার’ কতৃর্পক্ষ। পাঠকের জন্য পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, টেক্সট বইয়ের পাশাপাশি সৃজনশীল শিক্ষার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং ‘পড়াই আনন্দ’—এই বার্তা তরুণ ও শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে পাঠাগারটি।
বই পড়ার পাশাপাশি শিশুরা সেখানে শিক্ষামূলক খেলনা দিয়ে খেলাধুলা, শিক্ষামূলক ভিডিও দেখা, কম্পিউটার চালনাসহ করতে পারবে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন। ফলে শুধু বই পড়াই নয়, পাঠক পাচ্ছে কারিগরি শিক্ষায়ও দক্ষ হওয়ার সুযোগ। অনেক শিশু রয়েছে, যারা বই পড়তে ভালোবাসে। তবে নিয়মিত বই কিনে পড়ার সুযোগ নেই; তাদের জন্য সহজে বই পড়ার সুযোগ করে দিতেই উপকূল পাঠাগারের এই প্রয়াস। এখানে আরও আছে বিনোদনের নানা আয়োজন। তাই বলা যায়, পাঠাগারটি স্হানীয় শিশুদের মধ্যে পাঠাভ্যাস তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
পাঠাগারটির উদ্যোক্তাদের একজন সুমন বলেন, ‘আমরা শুরুতে কিছুসংখ্যক বই দিয়ে শুরু করেছিলাম। ধীরে ধীরে আমাদের বইয়ের সংখ্যা বাড়ছে।’ পাঠাগার থেকে বই বাড়িতে নিয়েও পড়ার সুযোগ রয়েছে। সপ্তাহে ৫ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকে পাঠাগারটি।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।