নিউজ ডেস্কঃ সিলেটে দ্রুতগতিতে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ওমিক্রণের সামাজিক সংক্রমণের কারণেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (গত শনিবার সকাল আটটা থেকে গতকাল রবিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) বিভাগে ১ হাজার ৭২টি নমুনা পরীক্ষায় ১৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। যা গত চার মাসের মাসের মধ্যে সর্বেোচ্চ। এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর শনাক্তের হার ছিল ১১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
এরপর থেকে গত ৪ মাসের বেশি সময় ধরে দৈনিক শতাংশের হার ১০ শতাংশের ঘরে পৌঁছেনি। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিভাগে করোনা সংক্রমণ ১ শতাংশের নিচে অবস্থান করছিল। ৬, ১১, ১৪, ১৯ ও ২৬ ডিসেম্বর শনাক্তের হার ছিল শূন্য। ২৯ ডিসেম্বর শনাক্ত ১ শতাংশ অতিক্রম করে। গত এক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে সংক্রমণ। গত শুক্রবার ছিল ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ, বৃহস্পতিবার ছিল ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ, বুধবার ছিল ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ, মঙ্গলবার ছিল ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, সোমবার ছিল ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ, রবিবার ছিল ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ১৪৮ জনের মধ্যে সিলেট জেলার ১২৫ জন। অর্থাৎ মোট রোগীর ৮৪ শতাংশই সিলেট জেলার বাসিন্দা। বাকি ২৩ জনের মধ্যে সুনামগঞ্জে ৭ জন, হবিগঞ্জে ৮ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় ৮ জন রয়েছেন।
সিলেটে এক সপ্তাহের মধ্যে করোনার দ্রুত সংক্রমণের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ঢাকায় ওমিক্রন ছড়িয়েছে। সেখান থেকে সারাদেশে ছড়াচ্ছে। সিলেটে সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে ওমিক্রনই রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সিলেটে ওমিক্রনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন (সামাজিক সংক্রমণ) হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাদের শরীরে জ্বর-সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ আছে তাদের দ্রুত পরীক্ষা করে চিকিৎসার আওতায় আনা উচিত। যত দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আসবেন তত বেশি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।’
হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘অনেকেই ওমিক্রনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো করোনার সব ধরনই বিপজ্জনক। কেউ যদি কিডনির সমস্যা, ডায়বেটিসের রোগসহ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত থাকেন তাদের মৃত্যুর শঙ্কাও রয়েছে। তাই সবাইকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ডাবল মাস্ক পড়তে হবে।’
এদিকে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ও গতকাল শনিবার সকালে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। দুইজনই সিলেট নগরের বাসিন্দা। এদের মধ্যে একজন করোনা প্রতিষেধক টিকার দুই ডোজ গ্রহণ করেছিলেন।
শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে হাসপাতালের আইসিইউতে ষাটোর্ধ্ব এক নারী মারা যান। তিনি গত ১৮ ডিসেম্বরে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অসুস্থ হওয়ার আগেই তিনি দুই ডোজ টিকা নিয়েছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. মিজানুর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন নগরের কুয়ারপাড় ও একজন মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে একজন দুইডোজ টিকা গ্রহণ করেছিলেন।’