সিলেটে ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি হচ্ছে - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ১১:০০, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

সিলেটে ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি হচ্ছে

newsup
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
সিলেটে ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি হচ্ছে

নিউজ ডেস্কঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, প্রাণিসম্পদ খাতে সিলেটে ব্যাপক উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কী কী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা সরেজমিনে দেখতে এসেছি। সামান্য যেসব সমস্যা আছে সেসব দূর করে সিলেটে প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হবে। তিনি বলেন, পূণ্যভূমি সিলেটকে প্রধানমন্ত্রী খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল মনে করে বড় বড় প্রকল্প সিলেটে দিয়েছেন। তার অংশ হিসেবে ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।

গত শনিবার সিলেট ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ইনস্টিটিউট স্থাপিত হওয়ায় এখান থেকে শিক্ষার্থীরা লাইভস্টক বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করতে পারবে। ফলে প্রাণিসম্পদ খাতে দক্ষজনবল তৈরির পাশাপাশি দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। যা সিলেটসহ দেশের প্রাণিসম্পদ খাতকে সমৃদ্ধ করবে।

সিলেট নগরীর টিলাগড় আলুরতল এলাকায় সকাল সাড়ে ১০টায় ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. অমলেন্দু ঘোষ, প্রকল্প পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুস্তম আলী প্রমুখ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রাণিসম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম। শ্রমঘন, তুলনামূলক স্বল্প বিনিয়োগ এবং স্বল্প ভূমিতে বাস্তবায়নযোগ্য হওয়ায় দেশে প্রাণিসম্পদ শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। তবে দক্ষ জনবলের অভাবে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে অন্যতম অন্তরায় হয়ে আছে। তাই, দক্ষজনবল তৈরি করতে সিলেটসহ বরিশাল ও লালমনিরহাট জেলায় ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সিলেটে গরু, ছাগলসহ প্রাণিসম্পদের উন্নতজাতের উৎপাদন ও জাত সম্প্রসারণে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ছাগল খামার নতুন করে সংস্কার, বুল স্টেশন স্থাপনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। যা সিলেটসহ সারাদেশে দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

পরে মন্ত্রী পাশেই নির্মাণাধীন বুল স্টেশন পরিদর্শন করেন। কৃত্রিম প্রজনন সম্প্রসারণ ও ভ্রুণ স্থাপন প্রকল্পের আওতায় বুল স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে উন্নত বুল (ষাঁড়) উৎপাদন করে কৃত্রিম প্রজননের জন্য সিমেন উৎপাদন করা হবে। আগে প্রতিটি সরকারি খামার থেকে ষাঁড় বাছুর সাভারে কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন ল্যাব-এ নিয়ে যেতে হতো। সিলেটে বুল স্টেশন স্থাপিত হওয়ায় সিমেন উৎপাদনের জন্য সরাসরি কার্যকর বুল উৎপাদন করা যাবে। এছাড়া, দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে সিলেট বিভাগে কৃত্রিম প্রজননের হার তুলনামূলক কম। এই বুল স্টেশন স্থাপনের ফলে সিলেট বিভাগে কৃত্রিম প্রজননের হার বৃদ্ধি পাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান। এসময় মন্ত্রী সিলেট আঞ্চলিক ও জেলা কর্মকর্তাদের প্রতিনিয়ত উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করা এবং সঠিকভাবে যাতে কাজ হয় তা দেখার পরামর্শ দেন।
পরে মন্ত্রী সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামার পরিদর্শন করেন। ছাগল উন্নয়ন খামার পরিদর্শনকালে মন্ত্রী বলেন, পুনঃসংস্কার করে খামারের সুযোগ সুবিধা ও আয়তন বাড়ানো হয়েছে। এখন খামারে ছাগলের সংখ্যা বাড়িয়ে, সিলেটের ছাগল পালনকারীদের মধ্যে উন্নতজাতের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল সরবরাহ করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
পরে সরকারি দুগ্ধ খামার পরিদর্শনকালে গরুর অযত্ন দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, গরু, ছাগল অবুঝ প্রাণি। এখানে শুধু চাকুরী করলে হবে না, আন্তরিকতার সাথে এসব প্রাণির দেখভাল করতে হবে। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন এবং পরবর্তিতে যেন এমন অবস্থা না দেখেন, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন।

পরিদর্শন শেষে সিলেট সার্কিট হাউসে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

উল্লেখ্য, টিলাগড় আলুরতল এলাকায় ৫ একর জমির উপর ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত হচ্ছে সিলেট ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (এসআইএলএসটি)। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতি বছর ৬০ শিক্ষার্থী ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।