রাশিয়া এবং চীন জোট দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য আনবে - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ২:১০, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

রাশিয়া এবং চীন জোট দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য আনবে

newsup
প্রকাশিত জুলাই ২, ২০২২
রাশিয়া এবং চীন জোট দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য আনবে

সম্পাদকীয়: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহু বছর ধরেই পৃথিবীতে তার প্রভাব ধরে রেখেছে। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের সামরিক, অর্থনৈতিক উত্থান এবং আরেক পরাশক্তি রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক এবং ক্রমশ তাদের আধিপত্য বিস্তার আমেরিকাকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। এটা এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ। এক সময় রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই স্নায়ুযুদ্ধ চলেছিল বহু বছরব্যাপী। এখন তা নতুন রূপ পেয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও প্রতিযোগিতায় রয়েছে চীন-অস্ট্রেলিয়া। এ অঞ্চলের দ্বীপগুলো এত দিন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের প্রভাব বলয়ের মধ্যেই ছিল বলে মনে করা হতো। সম্প্রতি সলোমন দ্বীপপুঞ্চের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তির পর গত শনিবার সামোয়ার সঙ্গেও চুক্তি করেছে চীন। রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের ডামাডোলে এমনিতেই উত্তেজনা চরমে রয়েছে। এর মধ্যেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে এই ঘটনা। ভূ-রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সমুদ্রপথ। সাগরের পথ, বিশাল মৎসভাণ্ডার, সম্পদ এবং কৌশলগত অবস্থান ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় কোনো দেশই এখন সমুদ্রে অন্য দেশের আধিপত্য মেনে নিতে রাজি নয়। ফলে উল্লেখিত অঞ্চলে নতুন করে প্রতিযোগিতা এবং সমীকরণ তৈরি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকারও কূটনীতিতে এ অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সাথে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া মিলে গঠন করেছিল ‘কোয়াড’ নামে একটি জোট। এটি চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপ নামেও পরিচিত। বলা যায়, এই জোট গঠনের একটি বড় লক্ষ্য হলো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রম অগ্রসরমান আধিপত্য ঠেকানো।
এই মুহূর্তে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এরই মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো কোয়াডের দ্বিতীয় সম্মেলন। যুদ্ধের সময় এই সম্মেলন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, এবারের সম্মেলনে কোয়াড ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বড় অঙ্কের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। যদিও এ জোটের আরো বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রযুক্তি ও করোনা মহামারী ইত্যাদি। এ সম্মেলনে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সমুদ্র রাজনীতিও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে বিধ্বংসী সুনামির পর একটি অংশীদারিত্ব গ্রুপ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল কোয়াড। এরপর ২০০৭ সালে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে কোয়াডকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেন। প্রায় ১০ বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০১৭ সালে এটি সক্রিয় হতে শুরু করে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পরে জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র কোয়াড শক্তিশালী করণের মাধ্যমে মূলত চীনের দৃঢ় পদক্ষেপের মোকাবিলা করতে চায়। চীনের সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং একে অপরকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যেই এ জোট গঠিত হয়েছে। আধিপত্যবাদ শব্দটি দ্বারা সাধারণত বোঝানো হয় প্রভাব বিস্তার করা। নিজের কর্তৃত্ব যে কোনো উপায়ে বজায় রাখার একটি কৌশল। নিজেকে সুরক্ষিত রেখে আধিপত্য বিস্তারের কৌশল বেছে নেওয়া হয়। এটি যেমন প্রতিটি দেশে সামাজিক শৃঙ্খলা বাধাগ্রস্ত করে তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রভাব বিস্তার করে। বিভিন্ন জোট গঠনের মাধ্যমে এই বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। রাশিয়া এবং চীন জোট দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য আনবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।