ড. শামসুল আলম :: বণিক বার্তায় প্রকাশিত পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী, ভারতীয় কূটনীতিকের প্রকাশিত নিবন্ধের শিরোনাম এটি (আগস্ট ২২, বণিক বার্তা)। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও দেশ-বিদেশের কিছু বুদ্ধিজীবীর কথাবার্তা খুবই তাত্ত্বিক মনে হয়েছে। গত দু-এক মাস ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, বিশেষ করে বাংলাদেশের আইএমএফের কাছ থেকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চাওয়ার ফলে বিভিন্ন মহল থেকে বাংলাদেশ শ্রীলংকার মতো পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে—এ রকম আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। বিষয়টি কেউ কেউ মোটামুটি ধরে নিয়েছে যে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ‘চরম সংকটের’ মধ্যে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়ছে, সে সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় এবং সরকারের কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ যেমন সরকারি বিদেশ সফর বন্ধ, জ্বালানির খরচ বাঁচাতে সরকারি অফিসে বিদ্যুৎ ব্যবহারে কৃচ্ছ্রসাধন, বিলাসপণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিতকরণ, নির্দিষ্ট সময়ের পর দোকানপাট, শপিংমল বন্ধ করা—এর কারণে এ ধারণা আরো প্রসারিত হয়েছে। ভারতীয় কূটনীতিক এ ঋণ চাওয়াকে ‘বেইল আউট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অথচ সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কোনো সংকটজনক পরিস্থিতির মধ্যে নেই কেননা কোনো খাতেই উৎপাদন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়নি। বাংলাদেশ অর্থনীতিতে মন্দা বা সংকট বলা যায় যখন প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয় অন্তত পরপর দুই প্রান্তিক। এ সময়ের সহায়তাকে ‘বেইল আউট’ বা উদ্ধার সহায়তা বলা হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি ব্যয় ও বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আমদানি পর্যায়ে খরচ বেশি হওয়ায় এবং সে অনুপাতে রফতানি ও রেমিট্যান্স না আসায় রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। কিন্তু প্রবৃদ্ধি থামেনি। গত অর্থবছরে আমাদের স্মরণকালের সর্বোচ্চ ৫২ বিলিয়ন ডলার রফতানি হয়েছে। তবে কিছুদিন আগেই খোদ আইএমএফ যখন ঘোষণা করে, ‘বাংলাদেশ কোনো সংকটময় পরিস্থিতিতে নেই এবং বিদেশী ঋণের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশ ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে’, তখন দুশ্চিন্তার কারণ বেশি। আমাদের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা রয়েছে এবং বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ মাত্র জিডিপির ১৪ শতাংশ এবং দেশজ ঋণ গ্রহণের পরিমাণ ২০ শতাংশ। আইএমএফের বিবেচনায় উন্নয়নশীল দেশগুলো দেশজ আয়ের মোট ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ গ্রহণকে নিরাপদ সীমা মনে করে। আমাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে বলেই বহুপক্ষীয় সংস্থাসহ অন্য দেশগুলো আমাদের ঋণ প্রদানে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আইএমএফের কর্মকর্তাদের বক্তব্যে তাই এটা স্পষ্ট বোঝা যায়—‘পৃথিবীর সব দেশই ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে। বাংলাদেশও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে করেছে।’ ‘বাংলাদেশের ঋণখেলাপি হওয়ার পথে যাওয়ার ঝুঁকি খুবই কম।’ গত অর্থবছরে আমরা ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক সাহায্য পেয়েছি, যার ৯৮ ভাগ হচ্ছে ঋণ, অনুদান ২ শতাংশ।
সর্বশেষ বাংলাদেশকে নিয়ে আইএমএফের যে মূল্যায়ন আর্টিকেল ফোর, সেখানেও বাংলাদেশের সামনে ঋণের পরিস্থিতি টেকসই হবে মর্মে জানানো হয়েছে। আগামী কয়েক বছরেও যে বাংলাদেশের ঋণের পরিস্থিতি অনূকূলে থাকবে তা আইএমএফের প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট। কাজেই কিছু আশঙ্কাবাদী অর্থনীতিবিদ যে আগ বাড়িয়ে বলছেন বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের বড় ধাক্কা ২০২৪ ও ২০২৬ সালে আসবে তা নিতান্ত অনুমাননির্ভর। এখানে মনে রাখা দরকার, লেনদেন ঘাটতি গত জুনে ৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। জুলাই-আগস্টের এ পর্যন্ত রফতানি ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় জুলাই মাসেই ২ বিলিয়ন ডলার কমে যাওয়ায় প্রাক্কলন করা যাচ্ছে আগামী জুনেই লেনদেন ভারসাম্য ১০ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হবে (ড. জাঈদী সাত্তার, পিআরআই)। বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ক্রমে বড় হচ্ছে এবং গত অর্থবছরে সাময়িক হিসাবে তা ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। সে সঙ্গে আমাদের মাথাপিছু আয়ও সমানতালে বাড়ছে, যা গত অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে ২৮২৪ ডলার। কাজেই ভবিষ্যতে কী দুর্দশা আসবে না আসবে তা নিয়ে আশঙ্কা না করে বরং বর্তমানের সাময়িক চাপ বা অস্বস্তিকে সামাল দেয়া অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করা যায় ততই দেশ ও জনগণের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
আমাদের যা রিজার্ভ তা দিয়ে অনায়াসে এখন পাঁচ-ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী যা পর্যাপ্ত এবং স্বস্তিকর কারণ তা হলো সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ হলে সাধারণত সেটি যথেষ্ট বলে ধরে নেয়া হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কিছুটা কমে যাওয়ার কারণ হলো এর আগের বছর (২০২০-২১) এবং পরবর্তী সময়ে বিদেশে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা অনেক কম ছিল। তবে গত বছর (২০২১-২২) প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক বিদেশে যাওয়ায় চলতি বছর জুলাই থেকে প্রবাসী আয় অধিক পরিমাণে আসতে শুরু করেছে। গত জুলাইয়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় পাওয়া গিয়েছে, যা বিগত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাছাড়া আগস্টের প্রথম ১০ দিনেও প্রবাসী আয় ছিল ৮১৩ মিলিয়ন ডলার। বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে এ অর্থ বছরে তা ২৫-২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। জুলাই ও আগস্টে রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে, বরং বাড়ছে। অন্যদিকে রফতানি জুলাইয়ে গত বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানির জন্য একই মাসে এলসি খোলা কমেছে ৩১ শতাংশ। রেমিট্যান্স বেড়েছে ১২ শতাংশ। তাই সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়েও অনেক আলোচনা বিতর্ক হচ্ছে। এটা অবশ্যই অনস্বীকার্য, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে অর্থনীতিতে একটা সামগ্রিক প্রভাব পড়েছে। যেহেতু ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত এবং নিকট ভবিষ্যতে কোনো কিছুই অনুমান করা মুশকিল, তাই সরকার বাধ্য হয়েই চাপ সামলাতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করেছে। যেহেতু সরকার নিজে থেকেই সরকারপ্রধানের নেতৃত্বে কৃচ্ছ্রসাধন শুরু করেছে, তাই জনগণকে এটা এক ধরনের বার্তা যে তারাও যেন কৃচ্ছ্রসাধনে উদ্যোগী হয়। সরকার এখন উদ্যোগী হয়ে কীভাবে মূল্য কমানো যায় সে উপায় খুঁজছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া থেকে কীভাবে সস্তায় তেল আমদানি করা যায় তার পন্থা খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামীতে কম দামে জ্বালানি পাওয়া গেলে তা অবশ্যই সমন্বয় করা হবে।
বাংলাদেশ রফতানিতে সাফল্য অর্জন করলেও অনেক বিশেষজ্ঞ সরকার রফতানি বহুমুখীকরণে জোর দিচ্ছে না বলে মতামত দিয়ে থাকেন। এটা সত্য, বাংলাদেশের রফতানির বড় অংশ তৈরি পোশাক খাত। এটা আমাদের বোঝা উচিত রফতানি বহুমুখীকরণ শুধু কয়েক বছরের বিষয় নয়, আমাদের পোশাক খাত আজ যে অবস্থানে এসেছে তা কয়েক দশকের সরকারি নীতি-পৃষ্ঠপোষকতা ও তুলনামূলক সস্তা শ্রমের ফসল। সরকার অনেক দিন থেকেই রফতানি বহুমুখীকরণে সহায়তা দিয়ে আসছে। আমরাও দেখতে পাচ্ছি কৃষি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, হোম টেক্সটাইল, ইলেকট্রনিকস, আইসিটি প্রতিটি সেক্টরে ১ বিলিয়ন ডলার রফতানি ছাড়িয়ে গেছে। আগামী দু-এক বছরের মধ্যে হালকা প্রকৌশল পণ্যে ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশের শিল্প ও রফতানি খাত যে বহুমুখী হচ্ছে তা ভারতীয় কূটনীতিক সর্বজিত চক্রবর্তীও এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন।
ইদানীং কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবং ২২ আগস্টের নিবন্ধকারসহ অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন (হয়তো চীন বাংলাদেশ বাণিজ্য ও উন্নয়ন গভীর সম্পর্ককে লক্ষ্য করেই এসব লেখা), বাংলাদেশ শিগগির শ্রীলংকার মতো চীনের ঋণের ফাঁদে পা দেবে। এ ধারণাটি একেবারেই অমূলক। শুধু চীন নয়, বাংলাদেশ অন্য কারো দ্বিপক্ষীয় দেশের ঋণের জালে পা দেবে না। বাংলাদেশ শ্রীলংকার মতো চীনকে কোনো বন্দর ১০০ বছরের জন্য লিজ দেয়নি। গত অর্থবছরের ঋণের তথ্য থেকে দেখা যায়, আমরা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ পেয়েছি। এর পর আছে জাপান, বিশ্বব্যাংক, রাশিয়া ও চীন। জাপান বাংলাদেশের পরম বন্ধু। দ্বিপক্ষীয়ভাবে স্বাধীনতার পর থেকে জাপানের কাছ থেকে আমরা সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি। শেষ পর্যায়ে এসে জাপান সব সুদ মাফ করে দেয়। বৈদেশিক ঋণের জন্য আমরা সবসময়ই বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলোকে অগ্রাধিকার দিই। আমরা এ কঠিন সময়ে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহযোগিতা চাচ্ছি। কোনো নির্দিষ্ট দেশের কাছে চাওয়া হয়নি। আমরা নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তিমত্তায় পদ্মা সেতুর মতো বড় সেতু তৈরি করেছি। কারো দয়া বা দাক্ষিণ্যে আমরা এটা করিনি। কারিগরি সহযোগিতা আর আর্থিক সহযোগিতা এক নয়। বাংলাদেশ কারো সঙ্গে চায়না কার্ড বা ভারত কার্ড কিংবা আমেরিকা কার্ড, রাশিয়া কার্ড খেলায় আগ্রহী নয়। সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রেখে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভই হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের মূল লক্ষ্য।
এটাও বলা হচ্ছে, সরকার যেভাবে দাবি করছে অর্থনৈতিক অবস্থা আসলে ততটা ভালো নয়, এসব বক্তব্য তথ্য সমর্থিত নয়। আসলে এ মূহুর্তে তেল রফতানিকারক কিছু দেশ ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশের অবস্থা স্বস্তিদায়ক নয়। নগর পুড়লে দেবালয় এড়ায় না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সবাই কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ১২টি দেশের নাম উল্লেখ করেছে, যারা বিপত্সীমার মধ্যে রয়েছে। ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট ২৫টি দেশের নাম উল্লেখ করেছে যারা উচ্চ ঋণ ঝুঁকিতে রয়েছে। কই সেখানে তো বাংলাদেশের নাম নেই? তাহলে কেন বলা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ বিপর্যস্ত’? আইএমএফ বলছে বাংলাদেশের অর্থনীতি রেজিলিয়েন্ট।
সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়েও অনেক আশঙ্কাবাদী প্রশ্ন তুলছেন। প্রায় দেড় যুগ বাংলাদেশের অর্থনীতি যে স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হতে পেরেছে, এর মূলে রয়েছে সামগ্রিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় মুনশিয়ানা। ২০০৭-০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দা, ২০১১ সালের জ্বালানি তেলের সংকট, কভিড-১৯-এর সময় মন্দা, সব বৈশ্বিক অভিঘাত বাংলাদেশ সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি কয়েক বছরে তৈরি হয়নি। এ ভিত্তি দেড় দশকের সরকার, জনগণের অদম্য চেষ্টা ও টিকে থাকার মানসিকতার ফসল। বিগত দশকে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সে ভিত্তিকে আরো সুসংহত করেছে। তাছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এক দশক আগেই অধিকাংশ সামাজিক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ (বিশ্বব্যাংক)। সম্প্রতি পাকিস্তানি পত্রিকা ডেইলি নিউজে একটি নিবন্ধ লেখা হয়েছে, ‘শ্রীলংকা ও পাকিস্তান: লেসন ফ্রম বাংলাদেশ মডেল।’ সেখানে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক সংকট এড়িয়ে চলার শ্রীলংকা ও পাকিস্তানকে ‘বাংলাদেশ ইকোনমিক মিরাকল’ মডেল অনুসরণ করা উচিত। এ মাসে প্রকাশিত পাকিস্তানের আরো একটি পত্রিকা দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের নিবন্ধে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কৃতিত্ব দেয়া হয়েছে। গত মাসের শেষ দিকে প্রকাশিত ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের ডেভিড পিল্লিং লিখেছেন, বাংলাদেশের দ্রুত সমৃদ্ধি আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে। বর্তমানে আর্থিক ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিকূলতা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশ একটি উন্নয়ন সাফল্য। মুশকিল হলো, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্থান ও সাফল্যের কথা আমাদের বিদেশী অর্থনীতিবিদদের কাছে শুনতে হয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট এ সাময়িক অস্বস্তিতে বাংলাদেশের ‘অর্থনীতি বিপর্যপ্ত’ হয়েছে এটা সঠিক চিন্তাপ্রসূত নয়, হতে পারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আইএমএফের ভাষায় বলতে হয়, ‘চলমান বৈশ্বিক সংকটে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার শক্তি বাংলাদেশের আছে।’
ড. শামসুল আলম: একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও প্রতিমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।