
ঢাকা প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে অব¯’ানরত বিদেশী নাগরিক, দূতাবাস ও অন্যান্য কর্ম¯’লের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে গঠিত কোর কমিটির প্রথম বৈঠক আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি ঢাকায় হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন দেশের অনুরোধ, প্রস্তাব ও পরামর্শ পর্যালোচনা করবে। একই সাথে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে আইন প্রয়োগকারী সং¯’া, সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সং¯’া অর্থাৎ আন্ত:বাহিনীর কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করবে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, ডিজিএফআই, এনএসআই, পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সং¯’াগুলোর প্রধানরা উপ¯ি’ত থাকবেন।
এতে হোলি আর্টিজান, শোলাকিয়ায় জঙ্গি আক্রমণ ও কল্যাণপুরে জঙ্গি বিরোধী অভিযানসহ দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরি¯ি’তি বিশ্লেষণ করা হবে। একই সাথে বিভিন্ন দূতাবাস থেকে নিরাপত্তা বৃদ্ধি, কূটনীতিক ও বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প কর্মকর্তাদের জন্য বুটেলপ্রুফ গাড়িসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার অনুরোধ এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সহায়তার প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হবে। এতে বিদেশীদের নিরাপত্তায় সরকারের কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় বিদেশী নাগরিকদের ব্যাপক হতাহতের পর ঢাকায় অব¯ি’ত বিভিন্ন দূতাবাস কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে। জাপান তাদের কূটনীতিক ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেবল গুলশান, বনানী বা বারিধারা নয় বরং সমগ্র বাংলাদেশে বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তা চেয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, জাপান বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে। এই অনুমতি দিতে সরকারের কোনো আপত্তি থাকার কথা না। কেননা যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে এই ধরনের গাড়ি ব্যবহার করছে।
হোলি আর্টিজানে গত ১ জুলাই সন্ত্রাসী আক্রমণে সাতজন জাপানি নাগরিকসহ মোট ২০ জন জিম্মি নিহত হয়েছেন। নিহত জাপানিদের মধ্যে ছয়জনই জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সং¯’ার (জাইকা) অর্থায়নে ঢাকায় বাস্তবায়নাধীন মেট্রোরেল প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। নিহত জিম্মিদের মধ্যে আরো ছিলেন নয়জন ইতালি, একজন ভারতীয়, একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক ও দুইজন বাংলাদেশী।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিসিদার নেতৃত্বে গঠিত একটি কাউন্সিল আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রকল্পগুলোতে নেয়া নিরাপত্তা ব্যব¯’া পর্যালোচনা করছে। সম্প্রতি মঙ্গোলিয়ায় অনুষ্ঠিত আসেম (এশিয়া-ইউরোপ বৈঠক) সম্মেলনের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে কাউন্সিলের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা চান।
শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে অব¯’ানরত জাপানসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সামরিক বাহিনীকে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা সরাসরি আমার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। কেবল নিরাপত্তা বাহিনী নয়, সার্বিকভাবে জনগনকে সাথে নিয়ে এই সন্ত্রাসী হামলার জবাব দি”েছ বাংলাদেশ।
জাপানের সিনিয়র উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেইজি কিহারা গত সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে দেয়া এক অন্ত:বর্তী প্রতিবেদনে বিদেশে কর্মরত জাপানি নাগরিকদের নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্ট দেশের পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপ জোরদার করার আহবান, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জর“রি প্রয়োজনে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার মহড়ার ওপর গুর“ত্ব দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রকল্পগুলোতে কর্মরতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাপানের বুলেটপ্রুফ গাড়িসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করা প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।