মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সব দলকে ধারণ করতে হবে - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সন্ধ্যা ৭:৫৯, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সব দলকে ধারণ করতে হবে

newsup
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২২, ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সব দলকে ধারণ করতে হবে

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি

ডেস্ক নিউজ: আজকাল দুটি শব্দ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। কথার ফাঁকে যেকোনো প্রসঙ্গে এই শব্দগুলোর উল্লেখ প্রায়ই শোনা যায়। দুঃখের বিষয় হলো, অনেককে দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে ঠিক এর বিপরীত কাজ করে যাচ্ছেন।

যেসব কারণে বাংলাদেশের মানুষ তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েছিল এবং তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছে, সেগুলোকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলা যায়। সেখানে প্রথমত আসে নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা। নিজের ভাষা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসহ আলাদা পরিচয় বাঁচিয়ে রাখা। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর হাতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসকারী বাঙালিদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও স্বতন্ত্র সত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনের আত্মাহুতি এবং শুধু উর্দুর সঙ্গে বাংলা ভাষাকেও পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি আদায় এর দৃশ্যমান উদাহরণ।

আর একটি চাওয়া ছিল, বৈষম্যের অবসান। বাঙালি সম্প্রদায় যারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস করত, তাদের সরকারি দায়িত্বপূর্ণ পদ ও কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন করা হতো। তাদের প্রতি পক্ষপাতমূলক অন্যায় আচরণ, অবিচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, শোষণ, বঞ্চনা ইত্যাদির ফলে বাঙালিরা পাকিস্তানের অন্য নাগরিকদের তুলনায় নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করত।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা হিন্দুধর্মাবলম্বী ছিল, তাদের সাধারণ অন্যান্য বাঙালির তুলনায় অধিকতর বৈষম্যের শিকার হতে দেখা গেছে। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা উপরিউক্ত সমস্যা সমাধানে প্রথমত দাবি উত্থাপন করে স্বায়ত্তশাসনের। অর্থাৎ নিজেরা নিজেদের শাসন করবে পাকিস্তানি রাষ্ট্রকাঠামোর ভেতরে থেকে।

এ প্রত্যাশা পূরণের সংগ্রাম শুরু হয়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বলপ্রয়োগের মাধ্যমে সেই দাবি দমিয়ে রাখতে নানান উদ্যোগ গ্রহণ করে। একপর্যায়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের কাছে এটা স্পষ্ট হয় যে স্বকীয়তা রক্ষা, বৈষম্যের অবসান এবং নানা ধরনের সামাজিক অন্যায়-অবিচার থেকে মুক্তির জন্য তাদের একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রকাঠামো প্রয়োজন; যার শাসন ও পরিচালন ভার নিতে হবে তাদের নিজেদের হাতে; এ ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই। সে কারণে বাঙালি জাতি অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে পাকিস্তান ভূখণ্ডের পূর্ব পাকিস্তান অংশ আলাদা হয় এবং সেখানে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের অভ্যুদয় হয়।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশটির নাম দেওয়া হয় ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’। অর্থাৎ বাংলাদেশের জনগণের নিজেদের শাসন করার অধিকারসহ একটি সার্বভৌম ভূমি, যেখানে বাঙালিরা নিজেদের বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা নিয়ে সব ধরনের বৈষম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার পরিপন্থী কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত থাকবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।