ডেস্ক নিউজ: ভ্রমণের ব্যবহারিক অর্থ নানান রকম। যেমন প্রাতকালীন ভ্রমণ, বৈকালিন ভ্রমণ, নদীর পারে ভ্রমণ, জ্যোৎস্নার আলোয় ভ্রমণ, ট্রেনে-বাসে-উড়োজাহাজে-জলযানে ভ্রমণ ইত্যাদি। আক্ষরিক অর্থে আমরা যেটা বুঝি ভ্রমণ অর্থ বেড়ানো, ঘোরাঘুরি, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া, অর্থাৎ পর্যটন করা। অন্য অর্থে দেশ ভ্রমণ। এছাড়া ভ্রমণ অর্থ যেটা বুঝি, সেটা হচ্ছে চিত্তবিনোদন, পর্যটন ও অবকাশযাপন।
ভ্রমণ মানুষের জীবনে আনে বৃহত্তের আহ্বান। আনে অজানা সৌন্দর্যের সংবাদ। অচেনার সান্নিধ্যে মানুষ পায় বিস্ময়ের শিহরণ। তাই ভ্রমণ শুধুমাত্র দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বিদেশ ভ্রমণও সমানভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে এটাও ঘটনা, মানুষের মধ্যে ভ্রমণের আবশ্যিক দিক নিজের দেশকে জানার, বোঝার, দেখার। নিজের জন্মস্থানের গাঁ-গঞ্জ-শহর-নগর থেকে বেরিয়ে দেশের ও বিদেশের অন্যত্র ভ্রমণের মাধ্যমে জানাটা ভ্রমণের মুখ্য উদ্দেশ্য। তাছাড়া দিনের পর দিন একই পরিবেশের জীবনযাপন থেকে ক্ষণিকের মুক্তি। একটু বৈচিত্র্যের আস্বাদনের উপলব্ধি যে বৈচিত্র্য আমাদের দেয় অপরিসীম আনন্দ।
এই ভূখণ্ডকে জানার জন্য প্রয়োজন দেশ ‘ভ্রমণ’। ইতিহাস ও ভূগোলের বাইরে অবাধ উন্মুক্ত খোলা আকাশের নিচে জীবন্ত দেশটি দেখে, তার অধিবাসীদের
প্রত্যক্ষ স্পর্শ লাভ করে, তাদের জীবনধারা সম্পর্কে আমরা যে জ্ঞান লাভ করি, সেই জ্ঞানই প্রকৃত জ্ঞান। হৃদয়ের প্রসারতা ও মনের গতি আনে ‘ভ্রমণ’। তারই প্রেক্ষাপটে বেরিয়ে পড়লাম নেপাল ভ্রমণে।
কলকাতা থেকে বিমানে সোজা কাঠমান্ডু। কাঠমান্ডু নেপালের রাজধানী ও জনপ্রিয় শহর। কাঠমান্ডুর হোটেলে রাত্রি নিবাস। ভোরবেলায় মাউন্ট এভারেস্ট দর্শনে বেরিয়ে পড়লাম। ৮৮৪৮ মিটার উচ্চতা। এয়ারপোর্ট থেকে গুণা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট। ডান-দিক ও বা-দিক মিলে দশজন-দশজন মোট কুড়িজন যাত্রী। একজন এয়ারহোস্টেস ও একজন পাইলট। ফ্লাইটটি উঠে গেল মাউন্টেন এভারেস্টের চূড়ায়।
ফ্লাইটের জানালা দিয়ে অপূর্ব দৃশ্য। আগে নানানভাবে মাউন্টেন এভারেস্ট দেখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সেগুলো দেখার মধ্যে ছিল অসম্পূর্ণতা। এবার প্রত্যেকটা
পাহাড়ের চূড়ার দৃশ্য হৃদয়ে লেগে থাকার মতো। প্রতিটা ধাপে ধাপে বোঝাচ্ছিলেন এয়ারহোস্টেস ম্যাডাম। খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য এই প্রথম। হিমালয়ের দৃশ্য দেখে অভিভূত। এত সুন্দর হিমালয়ের রূপ, সেটা ভোরের সকালে অনেকটাই উপলব্ধি করতে পারলাম। বরফের জমাট বাঁধে নাকি নভেম্বরের শেষে এবং ডিসেম্বরে। তখন মাউন্ট এভারেস্টের দৃশ্য আরও মনোমুগ্ধকর!
প্রাতরাশ সেরে বেরিয়ে পড়লাম পশুপতি মন্দিরের উদ্দেশে। শোনা যায়, পশুপতি দেবতা নাকি খুব জাগ্রত। মন্দিরটি বলা চলে কাঠমান্ডু শহরের মধ্যেই। তবে মন্দির থেকে এয়ারপোর্ট কাছে। মূলত প্রভু শিবের মন্দির। এটি একটি হিন্দুদের পবিত্র মন্দির। কথিত আছে, একবার শিব ও পার্বতী হিমালয়ের কোলে অবস্থিত বাগমতী নদীর তীরে ভ্রমণ করতে এসেছিলেন যেটা মৃগস্থলি নামে পরিচিত।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।