বিশেষ প্রতিবেদন: বছর ঘুরে আবারও আসছে বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। কিন্তু অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের মেলা নিয়ে চিন্তায় আছে সব মহল। লেখক, পাঠক আর প্রকাশকদের এই মিলনমেলায় সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কাগজের উচ্চমূল্য। এ কারণে বাড়ছে বইয়ের দামও। ফলে বইমেলা এলেও বিক্রিবাট্টা নিয়ে সন্দিহান প্রকাশকরা।
তারা বলছেন, সারাবছর বইমেলার অপেক্ষায় থাকেন প্রকাশক ও লেখকরা। ব্যবসা ছাড়াও অনেকটা বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই বই প্রকাশ করেন তারা। তবে কাগজের উচ্চমূল্যে এবার কপালে ভাঁজ পড়েছে তাদের। যার প্রভাব পড়ছে বইয়ের উপরেও, গতবছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ছে বইয়ের দাম। এমন দাম বৃদ্ধিতে পাঠক বই কেনার বিষয়ে কতটা আগ্রহী হবে তা নিয়ে সন্দিহান তারা।
অবসর প্রকাশনীর প্রকাশক ফজলুর রহমান আলমগীর বলেন, ‘কাগজের দাম বেড়েছে, তার ওপর চাহিদা অনুযায়ী কাগজও পাওয়া যাচ্ছে না। কাগজের দাম প্রকাশকদের অস্তিত্বে নাড়া দিছে। বইতো আর চাল-ডালের মতো না, যে কিনতেই হবে। সংসারের সব খরচ মিটিয়ে যা উদ্বৃত্ত থাকে, সেটা দিয়ে মানুষ বই কেনে। সেখানে বইয়ের দাম বেশি হলে, মানুষ বই কিনবে কীভাবে? আমার মনে হয় না এবারের বইমেলার অবস্থা ভালো হবে। আশা করেছিলাম, কাগজের দাম কমবে, তবে তেমন কোনও লক্ষণ দেখছি না।’
অধিকাংশ প্রকাশনা সংস্থায় কমিয়েছে নতুন বইয়ের সংখ্যা, প্রতিষ্ঠানভেদে যা ২০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নতুন প্রকাশনা সংস্থাগুলো। কবিতা প্রকাশনীর প্রকাশক নজরুল হায়দার বলেন, ‘কাগজের দাম বেশি থাকায় এবছর নতুন বই আসছে ১৫-২০টা, আর পুরাতন প্রকাশনা থাকছে ৩০-৪০টি। যেখানে গতবছর ৪৫টা নতুন বই প্রকাশ করেছিলাম। কাগজের জন্য বই ছাপাতে আমাদের বিশাল সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। বিশেষ করে আমরা যারা নতুন প্রকাশক, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। আগে যে বইটা করতে ১৮-২০ হাজার টাকা খরচ হতো, সেখানে এখন খরচ হচ্ছে ৩০-৩৫ হাজার টাকা, কাগজের দাম বেশি, প্লেটের দাম বেশি। বইয়ের দাম বাড়বে স্বাভাবিক, আমাদের বই ফরমা প্রতি ২০ টাকা বাড়বে, অন্যরা কী করবেন জানি না।’
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।