তানভীর আনজুম আরিফ : একদিকে ব্রিটেনের বর্তমান অবস্থা বেশ খারাপ। স্টুডেন্ট ভিসায় (স্পাউস সহ) রেকড সংখ্যক মানুষ আসার পরেই মূলত শুরু হয়েছে কাজের সংকট। কাজ পাচ্ছেন না খোদ ব্রিটিশরাই।
অন্যদিকে, ওয়ার্ক পারমিট বা কেয়ারার ভিসায় যারা এসেছেন তাদের অনেকেরই কাজ নেই। দেশ থেকে এখানে কর্মী আসার আগেই অনেক কেয়ারহোম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের গুনতে হচ্ছে ১৮-২৫ হাজার পাউন্ডের লোকসান।
আমার পরিচিত বন্ধু-আত্নীয় স্বজন সহ যারাই এসেছে প্রায় সবাই ওয়ার্ক পারমিট কিংবা কেয়ারারে সুইচ করে ফেলছেন। আবার বর্তমানে ওয়ার্ক পারমিটে যারা আছেন তাদের অবস্থাও যে খুব বেশী ভাল তা কিন্তু নয়। বরং মালিক পক্ষ অনেক কর্মীকে কাজ দিতে পারছেন না।
সুতরাং দুঃবিষহ জীবন যাপন করছেন অনেকেই। কেননা কাজ না থাকলেওত দৈনন্দিন খরচ থেমে নেই।
এটা জেনে,বুঝে,দেখে অনেকেই আসছেন।আগামীতেও আসবেন। এই আসাটা বন্ধ হবে না।
আবার অনেক জেনোইন স্টুডেন্টের ভিসা রিজেক্ট হচ্ছে,ব্যান হচ্ছে। সেমিস্টার ডেফার হচ্ছে। আরও কত কী?
একবার দেশের বাহিরে চলে আসবার চিন্তা মাথায় ঢুকে গেলে সেটা কখনোই বের করতে পারবেন না। অনেকাংশে
দেশের বাহিরে আসাটা-পড়তে আসার চেষ্টাটা একটা যুদ্ধের মত।
একটা সময় আমি ভাবতাম কেবল আমার একারই হয়তো কোথাও কোন কিছু হচ্ছেনা। আর এতে করেই মনটা বিক্ষিপ্ত থাকত প্রায়শই।
একটা পর্যায়ে আইএলটিএস করবার সিন্ধান্ত নিলাম। বাহিরে গিয়ে কোথাও পড়া আমাকে দিয়ে হবে না দেখে বাসায়ই একজনকে নিয়োগ করলাম। যে পড়াতে আসত সে প্রায় সমবয়সী।
একদিন চা খেতে খেতে তার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলাম। তার কথা শুনে আমি প্রায় হতবাক!!
ভাবতে লাগলাম আইএলটিএস’এ ৬.৫-৭ পাওয়া ছাত্রের অবস্থা যদি এমন হয় তাহলেত আমাদের কথা হিসেবে রেখেই লাভ নেই। যদিও লন্ডনে তার যাবার ইচ্ছে নেই দেখে সে লন্ডনের জন্য আবেদন করেনি। তবে কানাডা-আমেরিকা -অস্ট্রেলীয়ার জন্য বহুবার আবেদন করে কোন না কোন ছোট ভূলের জন্য রিফিউজ হয়েছে। তবুও তার চেষ্ঠা থেমে নেই।
আর আমার গল্পটা ছিল খানিকটা ভিন্ন। লন্ডন স্থায়ী হবার প্রসেসটা একটু জটিল থাকায় আমি বরাবরের মতই সেনজেন যে কোন দেশের প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম। তবে আমার আব্বা-আম্মার ইচ্ছে ছিল লন্ডনে পাঠানোর। কেননা এখানে আমার আত্মীয় স্বজন সবাইকে আছেন।
আমাকে যে আইএলটিএস করিয়েছে সে অতীতে কানাডা,ইউএস’এর মত দেশে বারবার রিজেক্ট হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মহান আল্লাহ্ তা’আলা তার রিজিকে রেখেছেন আমেরিকা, আর আমার ইউকে। বর্তমানে সে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আমেরিকা আর আমি ৫ বছরের ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে লন্ডনে। আমার টিকিট কাটা শেষে তার ইউএস’র ভিসা হয়েছে। গতমাসে সে সেখানে চলে গেছে। গত সাপ্তাহে ফোনে কথা হল।
অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যাক্তির মানসিক ,পারিপাশ্বিক এবং আর্থিক যুদ্ধের গল্প আলাদা। কেউ কোটি টাকা ব্যাংকে রেখেও ছেলে-মেয়েকে দেশের বাহিরে পাঠাতে পারছে না কেবল মাত্র সুযোগের অভাবে। আবার কেউ টাকার জন্য দেশের বাহিরে যাবার চিন্তা করেও কুলাতে পারছেন না।
নোট-
( যেকোন কিছুর জন্য হাজারো চেষ্ঠা করে লাভ হবে না যদি সেটা কপালে না থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় অনেককিছু অটোমেটিক হয়ে গেছে আপনি টেরই পাচ্ছেন না। সবকিছু মহান আল্লাহ্ তা’আলার উপর কেননা তিনি সময়-প্রয়োজন বুঝে সবকিছু দেন। আমাদের কেবল মহান আল্লাহ্ তা’আলার উপর বিশ্বাস আর ভরসা রাখতে হবে।)
-পবিত্র জুম্মার দিন সবার ভাল কাটুক ❤️
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।