ওজোন পার্কে বাংলা সিডি প্যাপ’র নতুন শাখা ‘কাচারি ঘর’ উদ্বোধন করেন আবু জাফর মাহমুদ - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৩:৫৩, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

ওজোন পার্কে বাংলা সিডি প্যাপ’র নতুন শাখা ‘কাচারি ঘর’ উদ্বোধন করেন আবু জাফর মাহমুদ

newsup
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩
ওজোন পার্কে বাংলা সিডি প্যাপ’র নতুন  শাখা ‘কাচারি ঘর’ উদ্বোধন করেন আবু জাফর মাহমুদ

হাকিকুল ইসলাম খোকন,সিনিয়র প্রতিনিধিঃ পর্বত শৃঙ্গ হিমালয় সম উচ্চতায় শির উঁচু করে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে হোম হেলথ কেয়ার ব্যবসায় যাত্রা শুরু করেছেন আবু জাফর মাহমুদ। দীর্ঘ এক যুগেরও অধিক সময় ধরে নিরলস প্রচেষ্টায় মানব সেবায় প্রতিষ্ঠিত এই ব্যবসায়কে কাঙ্খিত লক্ষ্যে নিয়ে গেছেন তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও লেখক আবু জাফর মাহমুদের প্রতিষ্ঠান এখন বিস্তৃতি লাভ করেছে বহু শাখা-প্রশাখায়।খবর বাপসনিউজ।

বাংলা সিডিপ্যাপ ও আলেগ্রা হোম কেয়ার সার্ভিস নিউইয়র্ক স্টেটের স্বাস্থ্য সেবা ক্ষেত্রে একটি সুপরিচিত নাম। যার মাধ্যমে আবু জাফর মাহমুদ ব্যক্তিগত সাফল্যের পাশাপাশি স্থানীয় বয়োজেষ্ঠ্যদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন নিজেকে। তার প্রতিষ্ঠানের সেবার মান স্পর্শ করেছে স্বপ্নের হিমালয় শৃঙ্গকে। বাংলা সিডি প্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার সার্ভিসকে তিনি সম্প্রতি পৌছে দিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির ওজোন পার্কের বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকায়।

ওজোন পার্কের নতুন শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিলো ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায়। স্থানীয় ১১২৭ লিবার্টি এভিন্যুতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি কার্যত পরিণত হয় বাংলাদেশীদের মিলন মেলায়। বিপুল সংখ্যক বয়স্ক নারী-পুরুষ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। শীতার্ত সন্ধ্যায় উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে বিশালকায় নতুন অফিসে। সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া নতুন শাখায় নামকরণ করা হয়েছে-“কাচারি ঘর।”বাংলাদেশী মিডিয়ায় সম্পাদক ও সাংবাদিকদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে করে তুলে মর্যাদাপূর্ণ। তিন হাজার বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট নতুন অফিস উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এণ্ড সিইও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। জমকালো ওই আয়োজনে কংগ্রেসম্যান হাকীম জেফরিস, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলমযান শেখর কৃষ্ণান ও নিউইয়র্ক স্টেট এর অ্যাসেম্ব্লি উইমেন জেনিফার রাজকুমারের পক্ষ থেকে বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়।

অনুষ্ঠানে আবু জাফর মাহমুদের হাতে শুভেচ্ছাবার্তা তুলে দেন নিউইয়র্ক সিটি থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ এর নির্বাচিত কাউন্সিল উইমেন বাংলাদেশি কমিউনিটির গর্বের পরিচয় সাহানা হানিফ। বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. এম ওয়াজেদ এ খান ,সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, টাইম টিভি ইউএসএ’র প্রধান নির্বাহী আবু তাহের, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাগর ও বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা আহমেদ শরীফ,নিউইয়র্কের বিভিন্ন গণমাধ্যমের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা। এছাড়াও হুমায়ুন কবীর, ডা. মনজুর আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবর উদ্দিনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ।
অফিস উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতার পর আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমার সার্থকতা, বাংলাদেশে আমরা সবাই পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে সেবা ভালোবাসা ও পারস্পারিক সম্মানবোধ ও সামাজিক মূল্যবোধ শিখেছি এবং আমরা তা বহন করে চলেছি। আমেরিকান সমাজ এখন আমাদের নিয়েই। আমাদের জন্মভূমিতে মানুষের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা ও কল্যাণকামনা, এটিই মানুষের মানবিক অস্তিত্ব। এই অস্তিত্ব নিয়েই বাংলাদেশি আমেরিকান সমাজ আমরা গড়ছি। তিনি বলেন, আমরা লড়াই করে একটা রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছি। যখন আমাদের পায়ে জুতো ছিল না, অস্ত্র দেখলেও ভয় পেতাম, সেই তরুণ যুবকরা যুদ্ধ করে রাষ্ট্র জন্ম দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্য ও উন্নত দেশ আমেরিকায় এসেছি। এখানে আমাদের যা কিছু সুন্দর, যা কিছু ,মানবিক তা নিয়ে এসে প্রমাণ করেছি, ভালোবাসা ছাড়া কোনো ‘কেয়ার’ বা যত্ন নেই। আমাদের জন্মের সময় জীবন মৃত্যুর এক কঠিন চ্যালেঞ্জ পার করেন আমাদের মায়েরা। এই সত্য সবার জন্যই এক। জন্মের পর যারা আমাদের সেবা দিয়েছেন, আদর যত্ন করেছেন, কোলে নিয়েছেন, তারা তো কেউ কোনো অর্থ নেননি। তাহলে তারা কিসের বিনিময়ে এসব করেছেন? এটিই পারিবারিক মর্যাদা ও ভালোবাসার এক ঐতিহ্য। সেই ভালোবাসা ও মর্যাদাসহই আমরা এখানে এসেছি।

নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশিদের মাঝে হোম কেয়ার সেবার সূচনাকালের কথা তুলে ধরে আবু জাফর মাহমুদ বলেন, যখন হোম কেয়ার শুরু করেছি, নিউইয়র্ক স্টেট এর সিলেবাস নিয়ে কাজ করা শুরু করেছি। শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করেছি। প্রশিক্ষণের ভেতর একটি দিন আলাদা করে আমি প্রশিক্ষনার্থীদের পারিবারিক মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। এটিই তাদের প্রশিক্ষণ। এছাড়া আমাদের সন্তানদের বাংলাদেশি রাখতে পারবো না। এটি ছাড়া পারিবারিক বন্ধন সুরক্ষা করতে পারবো না। এটি ছাড়া আমরা পরিবার প্রথা ধরে রাখতে পারবো না। আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য রক্ষা করেই আমেরিকার সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে প্রয়াস, সেটিকে আমি যুদ্ধ হিসেবে নিয়েছি। এসঙ্গে জনাব জাফর, পবিত্র ও হালাল উপার্জনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, হোম কেয়ারের একটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম। আমরা বিশ্বাস করি, এটি অত্যন্ত কল্যানমুখি একটি উদ্যোগ। এখানে বাণিজ্য মহান স্রষ্ঠার সঙ্গে।

সতের বছর আগে আমি যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছি, সেখানে ‘বাংলা’ নামটি রেখেছি। এটা আমার ভাষা ও সংস্কৃতি। এটি রক্ষা করে আজ এতদিন পরে মুক্তিযুদ্ধের বায়ান্ন বছরে এসে ঘোষণা দিয়েছি, আমার জাতির শ্লোগান হবে “জয় বাংলাদেশ”। এটিই আমাদের পরিচয়। এটিই তুলে আনতে হবে। আমাদের মুরুব্বিরা এই শ্লোগান না দিতে পারলেও এটি আমাদের দায়িত্ব। আমাদের পূর্বসূরি মুরুব্বিদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার কোনো কমতি নেই। তিনি বলেন, অতীতের কোনো নেতা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী তাদের সমালোচনা করা আমার উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ নয়। রাষ্ট্রকে ভালোবাসার, রাষ্ট্রের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানানোর প্রতিজ্ঞা যেহেতু আমাদের আছে, এই শক্তিশালী প্রত্যয়ই আমাদের অস্তিত্বগত সম্মান বাড়াবে। পৃথিবীর যেখানে যাই, আমরা বাংলাদেশি, আমেরিকায় আমরা বাংলাদেশি আমেরিকান।

নতুন অফিস পরিসরের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি আমাদের ’কাচারি ঘর’। এখানে আপনারা যেকোনো অনুষ্ঠান করবেন। আপনাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন। এখানে বাণিজ্যের কোনো সম্পর্ক নাই। এখানে সপ্তাহে সাতদিন অবিরাম সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবল নিয়োগ করা হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের দায়িত্বশীলরা তাদের সেবা কার্যক্রম চালাবে। আপনাদের খোঁজ রাখবে। পাশে থাকবে। তিনি স্থানীয় সম্পাদকবৃন্দ ও গণমাধ্যমের সকল সাংবাদিকদের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, তারা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রবাসী জীবনের ভালোমন্দ তুলে ধরছেন। এটি তাদের শুধু ব্যবসা নয়, এটি তাদের ভালোবাসা ও দায়িত্ব। এখানে তারা অবিচল। তারা সবাই বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের কার্যক্রমের সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন, এটি আমাদের অনেক বড় পাওয়া।

সাংবাদিকবৃন্দ নিউইয়র্কে বাংলাদেশি সমাজে মানব সেবার প্রশ্নে আবু জাফর মাহমুদ ও তার হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ও স্বচ্ছ ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তিনি এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যা বাংলাদেশিদের জন্য অনন্য এক আশ্রয়। তারা বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের উত্তরোত্তর আরো সমৃদ্ধি ও কর্মপরিধির বিস্তৃতি কামনা করেন।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশের কৃতি শ্যূটার ও আমেরিকায় বাংলাদেশি সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি এস এম ফেরদৌস ও সাংবাদিক আদিত্য শাহীন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের সেবা কার্যক্রম বিষয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে দূর দূরান্ত থেকে আগত ব্যক্তিবর্গ বিশেষ করে সম্পাদক, প্রকাশক ও সাংবাদিকদের উপস্থিতি, যথার্থ মুল্যায়ণ প্রদানসহ আন্তরিকতা প্রদর্শনের জন্য বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।