সম্পাদকীয়: ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন-২০২৩ সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের বিষয়টি ইতিবাচক। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পারিবারিক কর্তৃত্ব করতে এক পরিবার থেকে তিনজনের বেশি পরিচালক হতে পারবেন না-এমন বিধান রেখে গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভায় ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী প্রস্তাবের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে ঋণখেলাপিদের দেশের বাইরে যেতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়ার বিষয়টিও বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ ঋণখেলাপি হলে তিনি ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না, এমনকি ঋণের অর্থ পরিশোধ করলেও তিনি পরবর্তী পাঁচ বছর পরিচালক হতে পারবেন না। তদুপরি ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিকে ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে এবং এ জরিমানা এককালীন, যা দিতে ব্যর্থ হলে দৈনিক ১ লাখ টাকা করে জরিমানা গুনতে হবে। বলা প্রয়োজন, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেশকিছু শর্ত দিয়েছে, যার মধ্যে ২০২৩ সালে জাতীয় সংসদে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন-২০২১ উত্থাপনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত দশ বছরে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ। খেলাপি ঋণ না কমে বরং দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া। করোনাকালীন প্রায় দুই বছর ধরে খেলাপি ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিতের প্রেক্ষাপটে গ্রাহকরা কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলেও ওই ঋণ খেলাপি না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া আগের খেলাপি ঋণ নবায়নেও দেওয়া হয়েছিল বড় ধরনের ছাড়। এত সব ছাড়ের পরও ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের বিশেষ কোনো হেরফের হয়নি। এ অবস্থায় সংসদে আইনটি পাশ হয়ে যথাযথভাবে কার্যকর হলে ব্যাংক খাতে, সর্বোপরি দেশের অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, আশা করা যায়।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।