পানতুমাই গ্রামটির অবস্থান সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জয়ন্তিয়া পাহাড়ের পাদদেশে। পানতুমাই
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পরিচ্ছন্ন সবুজ গ্রাম। অপরূপ এই গ্রামটির নামের আগে নয়নাভিরাম অপূর্ব নান্দনিক চোখজুড়ানো সব বিশেষন ব্যবহার করেও
এর সৌন্দর্য বিশ্লেষণ শেষ হবে না। পাহাড়ঘেষা আঁকাবাঁকা ছাঁয়াঘেরা রাস্তা চারিদিকে সবুজ অরণ্য পাহাড়ঘেষে প্রবাহিত পাহাড়ী পিয়াইন নদী গ্রামের শেষে সীমান্ত বরাবর পাহাড়ের পাদদেশে ঘন সুপারীর বাগান পাশে অবারিত সবুজ খেলার মাঠ। চমৎকার সবুজ এই দৃশ্য দেখে মনে হয় এ যেন সুইজারল্যান্ড বা অস্ট্রিয়া র কোন সবুজ গ্রাম।সত্যি এ এক অপরূপ মোহনীয় দৃশ্য। পানতুমাই গ্রামের শেষ প্রান্তে বাংলাদেশ সীমান্তের কুল
ঘেষে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড় বেয়ে বাংলাদেশের পানতুমাইয়ের দিকে নেমে এসেছে এক অপরূপ শুভ্র জলের ঝর্ণাধারা। ঝর্ণাটির স্থানিয় নাম ফাটাছড়া ঝর্ণা।কেউ কেউ ডাকেন বড়হিল মায়াঝর্ণা মায়াবতী নামে। ভৌগলিক ভাবে ঝর্ণাটির অবস্থান ভারতে।পানতুমাই
থেকে উপভোগ করা যায় এর অপরূপ সৌন্দর্য। তাই বাংলাদেশীরা অনেক এটাকে পানতুমাই ঝর্ণা নামে ডাকেন।ঝর্নার উপরে ভারতীয় অংশে রয়েছে একটি
সেতু। সেখানে দাড়িয়ে ভারতীয় পর্যটকরা ঝর্ণা এবং
বাংলাদেশের সৌন্দর্য অবলোকন করেন।ঝর্নার পাশে রয়েছে বি এস এফ চৌকি।পানতুমাইয়ে কোন বিজিবি ক্যাম্প বা ফাঁড়ি নেই।তাই বাংলাদেশীদের সীমান্ত রেখার কাছাকাছি যাওয়া বিপদ জনক। জয়ন্তিয়া পাহাড় বেয়ে আঁকাবাঁকা লীলায়িত উচ্ছল
ভঙ্গিমায় তীব্র বেগে সঠিক নাম না জানা ঝর্নার জল রাশি এসে মিশছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে পাহাড়ী পিয়াইন নদীতে।শাঁ শাঁ শব্দে ছিটকে পড়ে তুলে ধরছে
তার রূপের মাধুরী।যা এক কথায় অপূর্ব। পানতুমাই গ্রামের সৌন্দর্য এক সময় লোকচক্ষুর আড়লে ছিল।এই ঝর্নার সুবাদে গ্রামটির নাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশে বিদেশে।পানতুমাইয়ের সৌন্দর্যের শেষ নেই।পাহাড়ঘেষা আঁকাবাঁকা রাস্তা এখানকার বৈশিষ্ট্য।
ছাঁয়া সবুজ পথে হাঁটতে হাঁটতে সহজেই মন হারিয়ে যায় প্রকৃতির মাঝে।
পানতুমাইয়ে এখন সারা বছর জুড়ে পর্যটকদের আনাগুনা থাকলেও বর্ষাকালে পানতুমাই ভ্রমনের মজাই আলাদা।ঐ সময় ঝর্নার এবং পিয়াইন নদীর
পরিপূর্ণ রূপ অবলোকন করা যায়। পানতুমাই যেতে হবে সিলেট শহর থেকে।প্রাইভেট কার
মাইক্রো বা সি এন জি অটোতে যাওয়া যায়।সময় লাগবে প্রায় ২/৩ ঘন্টা। পানতুমাইয়ে রাত যাপনের সুবিধা নেই।তাই সকালে গিয়ে বিকালে ফিরে আসতে হবে।পানতুমাইয়ের কাছাকাছি মাতুরতল বাজার। এখানে কিছু খাবার দোকান আছে। কম পয়সায় দুপুরের খাবার সেরে নেয়া যায়।বাহিরের পর্যটকরা সাথে প্যাকেট লাঞ্চ নিয়ে যেতে পারেন।দিনে দিনে
পানতুমাইয়ে পর্যটকের আনাগুনা বাড়লেও সরকারি
কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনা পানতুমাই ঘিরে। পানতুমাই সম্ভাবনাময়ি আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র। তাই পর্যটন কর্পোরেশন ও স্থানীয় প্রশাসন কে এ ব্যাপারে উদ্যোগি হওয়া দরকার।বিশেষ করে সিলেট থেকে গোয়াইনঘাট যাওয়ার রাস্তা অনতিবিলম্বে
সংস্কার করা খুব জরুরী। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। পানতুমাই সত্যি একটি মনোলোভা অপরূপ গ্রাম।যা দেখলে নয়ন জুড়িয়ে যায়, দূর হয়ে যায় সকল ক্লান্তি। তাই সময় করে একবার ঘুরে আসুন বাংলাদেশের সুন্দর সবুজ গ্রাম পানতুমাই।