স্নাতক ৫৪ বছরে শেষ - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৮:৩৮, ৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

স্নাতক ৫৪ বছরে শেষ

newsup
প্রকাশিত মে ৩১, ২০২৩
স্নাতক ৫৪ বছরে শেষ

কানাডা প্রতিনিধি: বিবিসির প্রতিবেদন মতে, পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন আর্থার রস। অবশেষে ৫৪ বছর পর ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া (ইউবিসি) থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন তিনি। বর্তমানে তার বয়স ৭১ বছর।

এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি শেষ করতে সবচেয়ে বেশি সময় নেয়ার নতুন রেকর্ড গড়েছেন রস। গত বৃহস্পতিবার (২৫মে) ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্নাতকের সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন রস। এ সময় তিনি বলেন, তিনি সম্ভবত ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সবচেয়ে ‘ধীরগতির ছাত্র।’

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের (জিডব্লিউআর) তথ্য অনুযায়ী, এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘসময় নিয়ে স্নাতক শেষ করার রেকর্ড রয়েছে রবার্ট এফপি ক্রনিনের ঝুলিতে। তিনি ১৯৪৮ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞানে স্নাতক শুরু করেন এবং ২০০০ সালে তা সম্পন্ন করেন তিনি। এখন তার চেয়েও দুই বছর বেশি সময় নিয়ে স্নাতক শেষ করার রেকর্ড গড়লেন আর্থার রস।

তবে রস বলেছেন, তিনি বিশ্বরেকর্ডের শিরোপা নেয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। শ্রেণিকক্ষে অর্জন করা জ্ঞানই তার প্রকৃত পুরস্কার।তিনি বলেন, ‘আমি কেবল জ্ঞান অর্জন করতে চেয়েছি। কারণ আমি একজন কৌতূহলী মানুষ।শেখার সেই আকাঙ্ক্ষাই তাকে এত বছর পর ডিগ্রি শেষ করতে অনুপ্রাণিত করেছে।’

১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মতো ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ভর্তি হন আর্থার রস। তখন তিনি কেবল হাই স্কুলের পাঠ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। বিশেষ কোনও কিছুতে মনোনিবেশ করেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই ক্যাম্পাসের থিয়েটার ক্লাবের সাথে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেখানে নিজের মধ্যে অভিনয়ের প্রতি এক ধরনের আবেগ দেখতে পান তিনি।

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় দুই বছর পার করার পর আর্থার রস তার স্নাতক ডিগ্রির বিষয় পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য তিনি মন্ট্রিলে চলে যান এবং সেখানকার ন্যাশনাল থিয়েটার স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। সেখানে তার পড়াশোনা শেষ করেন এবং সার্টিফিকেটও পান। এর পরপরই তিনি বুঝতে পারেন যে, অভিনয়কে ক্যারিয়ার হিসাবে নিতে চান না তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি ভালোভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তখন আমার মনে হয়েছে, আমার আইন স্কুলে পড়াশোনা করা এবং একজন আইনজীবী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, যারা জীবনে কী করতে চান তা বুঝতে পারেন না, এমন প্রত্যেকের শেষ অবলম্বন আইনী পেশা।

১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মতো ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ভর্তি হন আর্থার রস। অতিরিক্ত এক বছরের পড়াশোনা শেষ করতে ইউবিসিতে ফিরে যান। ওই সময় আইন স্কুলে আবেদন করার জন্য মোট তিন বছরের প্রয়োজন হয়। পরে তিনি টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন স্কুলে ভর্তির সুযোগ পান; যেখান থেকে তিনি জুরিস ডক্টর লাভ করেন।

‘এটা সবসময় আমার মনের মধ্যে ছিল যে, হয়ত কোনো একদিন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাব এবং সেই ডিগ্রি শেষ করার জন্য কাজ শুরু করব।’ আর্থার রস প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আরও জানতে অনুপ্রাণিত হয়ে ইতিহাসের ওপর পড়াশোনার সিদ্ধান্ত নেন।

আর্থার বলেন, ‘আপনার আগ্রহের যেকোনো বিষয়ে অধ্যয়নের সুযোগ গ্রহণ না করাটা অপচয়। এখানে সুযোগ আমার কাছে এসেছে এবং আমি তা উপভোগও করেছি।’

এত বছর পর রস যখন ইউবিসিতে ফিরে আসেন, তখন অনেক কিছু বদলেও গেছে। ক্যাম্পাসের পরিধি আরও বেড়েছে। তবে তার টিউশন ফি ফ্রি ছিল। অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ নাগরিক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার ফি মওকুফ করে দেয়া হয়। করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মতো অনলাইনে কিছু ক্লাস করেন আর্থার।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।