বাংলাদেশে ক্ষুধার্তের যন্ত্রণা
কিছুদিন আগে পত্রিকার পাতায় দেখলাম জাহেদা খাতুন বা এই ধরনের একটি নাম, দুইশো টাকা নিয়ে হন্যে হয়ে ছুটছেন বাজারের এ মাথা থেকে ঐ মাথা পর্যন্ত।
তেল, নুন, ফুলকপি, লাউ কিছুই না নিয়ে বাড়ি ফিরলেন, টাকার অভাবে সবজি কিনতে পারেননি তিনি। দুই হাজার তেইশ সালে সবজি খাওয়া হয়নি তার। দুঃস্থ মহিলা! একটু শুটকি মাছেরঝোল দিয়ে দিনে মাত্র একবার ভাত খান জাহেদা খাতুন।
সেদিন ফোনে একজন বললো, তিন বছর হলোখাশির মাংস কিনতে পারেনি। রমজানে একবার গরুর মাংস কিনতে পেরেছেন। মুরগির মাংস কষ্ট করে কিনতে হচ্ছে, বাচ্চারা এছাড়া কিছু খায় না বলে। আর মাছ বাজারে মাছের দাম সীমাহীন। তাই মাছ বাজারে উঁকি দিতেও ভয় পান তিনি।
এর মধ্যে বড় কোনো অসুখ হলে, জমানো সব টাকা শেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশে হার্টের বা কিডনি রোগের ট্রিটমেন্ট করতে গেলে অনেক মানুষকে নিঃস্ব হতে হয়। তবু নেতাদের মুখে বড় বড় কথা শোনা যায়।
অথচ বাংলাদেশে অবৈধ টাকা কামাচ্ছেন প্রতিদিন বহুলোক। এরা শত শত কোটি টাকার মালিক হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ধনী এবং গরিবের মধ্যে বৈষম্য বেড়ে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত প্রতিদিন বাজারের উত্তাপে নাজেহাল হচ্ছে। এটা হয়তো বাড়তেই থাকবে। দ্রব্যমূল্যের দাম না কমলে গরিবের কষ্টের সীমা থাকবে না।
আইনের শাসন এবং গণতন্ত্র না থাকলে দুর্নীতিবাজ কেউ ভয় পায় না। জবাবদিহিতা না থাকলে এরা ভবিষ্যতে আরও বেশি টাকাওয়ালা হবে , আর বেশির ভাগ মানুষ অহোরাত্র খাদ্যের অভাবে কষ্ট করতে থাকবে। তবু এরা বোঝে না, ক্ষুধার কষ্টের চেয়ে বড় কষ্ট আর কিছু নেই। এরমধ্যে লোডশেডিং আর প্রচন্ড গরমে বাংলাদেশে সবাইকে সহ্য করতে হচ্ছে নরক যন্ত্রণা।
দেওয়ান নাসের রাজা
নিউইয়র্ক
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।