যেতে পারেন নিকোলা টেসলা মিউজিয়াম

Daily Ajker Sylhet

newsup

২২ জুলা ২০২৩, ১২:১৪ অপরাহ্ণ


ডেস্ক রিপোর্ট:গন্তব্য নিকোলা টেসলা জাদুঘর। গাড়িতে যেতে সময় লাগার কথা মাত্র পাঁচ থেকে সাত মিনিট। কিন্তু সার্ব ড্রাইভার আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, বলা মুশকিল। এ গলি থেকে ও গলি, এই মোড় থেকে ওই মোড়, সামনে গিয়ে আবার ইউটার্ন, এসব করতে করতে লেগে গেল পাক্কা ২৫ মিনিট।
এক দিনে বেলগ্রেড শহরের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘোরার কর্মসূচি নিয়ে বের হয়েছি। সকাল থেকে চলছে ঘোরাঘুরি, দেখছি একটির পর আরেকটি ঐতিহ্যবাহী স্থান বা স্থাপনা। মধ্য সকালের নাশতার পর আমরা যাব সার্বিয়ার রয়েল প্যালেসে। নাশতার এই সময়টাকে আমি কাজে লাগাতে চাই। নিকোলা টেসলা জাদুঘরটায় একচক্কর মেরে আসতে চাই। আমাদের সঙ্গে থাকা সার্বিয়ান টিমের সবাই ব্যস্ত। আর আমার সঙ্গীদের মনোযোগ নাশতার টেবিলে, কাউকে পেলাম না। ড্রাইভারকে নিয়ে একাই বের হলাম। ড্রাইভার ইংরেজি জানেন না। কাজেই বকবকানির বালাই নেই। গুগল ম্যাপে লোকেশন ঠিক করে তিনি স্টিয়ারিং চালানো শুরু করলেন।
গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াই। মাঝারি ধরনের মেটে রঙের ভবন; যা বেলগ্রেড শহরের ঠিক মধ্যখানে। বেলগ্রেডের অন্যতম প্রধান জাদুঘর এটি। যার নির্মাণকাল ১৯২৯ সাল। ব্যতিক্রমী মূল্যবান সংগ্রহশালা হিসেবে রয়েছে এর বিশেষ খ্যাতি।

হাতে সময় কম। কম সময়ে দেখতে হবে পুরো জাদুঘর। কাজেই গবেষণার উপায় নেই। হাঁটতে হবে পায়ে জোর লাগিয়ে। এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি মূল নথি, বই এবং জার্নাল রয়েছে এই জাদুঘরে। ঐতিহাসিক প্রযুক্তিগত পণ্যের সমাহারে যে কেউ অবাক হবেন। ফটোপ্রেমীদের জন্য রয়েছে সেই সময়ের ফটোগ্রাফ, প্রযুক্তিগত বস্তু, ফটোগ্রাফের যন্ত্রপাতি। বিখ্যাত সব ছবির পরিকল্পনা আর নানা অঙ্কনের ফটো প্লেটও আছে এখানে। বিজ্ঞান-ইতিহাসের গবেষক ও উদ্ভাবকদের জন্য এটি তথ্যভান্ডার। তাই বেলগ্রেড ভ্রমণকারীরা নিকোলা টেসলা মিউজিয়াম ঘুরে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।
মিউজিয়ামের এই রুম থেকে ওই রুম, এ বারান্দা থেকে ওই বারান্দা ঘুরে বেড়াই। ঘুরে বেড়ানো বললে ভুল হবে, দৌড়ে বেড়াই। সঙ্গে কেউ থাকলে ভালো হতো? না, একাই যথেষ্ট। একা ঘুরতে গেলে নিজের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারি আমরা। শুনতে অদ্ভুত মনে হতে পারে, বাস্তবতা হলো ব্যস্ত জীবনে ক্রমশ নিজের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আসছে আমাদের। যার জন্য একটা সময় গ্রাস করে অবসাদ। কাজেকর্মে উৎসাহ হারাতে থাকার পেছনে এটা গুরুতর একটি কারণ। এই সমস্যা কাটাতে মাঝেমধ্যে একাই বেরিয়ে পড়া উচিত। একা ঘুরতে গেলে নিজের মতো করে সময় কাটানো যায়। একা চলতে হয়, ঘুরতে হয়। কেনাকাটা, খাবারদাবারও সারতে হয় একা একাই।
আত্মবিশ্বাসটা বাড়ে। অনুকূল-প্রতিকূল সব পরিস্থিতি একা সামলানোর চেষ্টা থাকে। যাতে করে নিজের সম্পর্কে ভরসার পাঠটাও রপ্ত হয়। সংস্কৃতি, খাবার, পোশাক, গানবাজনা কত কিছু জানাও সহজ হয় একলা ভ্রমণে। দলবেঁধে গেলে মনে হয় ঘোড়ার গাড়িকে টেনে সামনে নিতে হয়। সময় খরচ হয় বেশি, বাড়ে ঝক্কিঝামেলাও। এই ট্যুরে বসে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাই।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।