আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের সমর্থনে রবিবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপিসহ কয়েকটি সমমনা দল ও জোট।
বিরোধী দলগুলো একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তফসিল বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে তেজগাঁও, ফকিরাপুল, জিগাতলা, বাড্ডা, মালিবাগ, গুলশান, বনানী, গ্রিন রোড, ধানমণ্ডি, রমনা ও মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
অন্যদিকে, রবিবারও তালাবদ্ধ বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের দুই পাশের সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল।
গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণ অধিকার পরিষদ, ১২ দলীয় জোট এলডিপি, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, গণফোরাম-এনপিপি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটও বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, নাইটিঙ্গেল ক্রসিং, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও মতিঝিল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
এসব মিছিল-সমাবেশ থেকে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সরকারের বিরুদ্ধে একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টার অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য বিরোধী দল আজ সকাল ৬টায় সারাদেশে হরতাল পালন করে।
গত ৭ জানুয়ারি ইসি দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ার পর বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে এই প্রথম হরতাল পালন করা হচ্ছে।
গত ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ঘোষণা করেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গণতন্ত্র মঞ্চ বিজয়নগর থেকে একটি মিছিল বের করে, যা সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তব্যে জোট নেতারা অভিযোগ করেন, দেশ ও জনগণকে বিপদে ফেলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি ‘প্রহসনমূলক’ নির্বাচন করতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে দেশের অধিকাংশ বিরোধী দল এখন ঐক্যবদ্ধ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো প্রতিপক্ষ ছাড়াই ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আরেকটি একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে দেশ শুধু অর্থনৈতিক সংকটই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ভয়ানক কূটনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হবে।’
সাকি বলেন, সরকার যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষকে বিপদে ফেলছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জোটের শরিক জাতীয় পার্টিও বলছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
সাকি আরও বলেন, ‘ভোট কারচুপিকে নির্বাচন হিসেবে প্রচারণা চালানোটা আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জাজনক। আমরা জনগণ এভাবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হতে দেব না। সেজন্য আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং আমরা বিজয়ী হব।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সব মানুষ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপরও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন। এমনকি তাদের (আওয়ামী লীগ নেতাদের) প্রতারণামূলক বক্তব্য শুনে শয়তানও লজ্জিত হয়।’
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।