দুদককে কার্যকর ও বেগবান হতে হবে
২৭ ফেব্রু ২০২৪, ০২:৪০ অপরাহ্ণ

সম্পাদকীয়: কখনো কখনো সমালোচিত হলেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে অনেক দুর্নীতিবাজকে ধরতে সক্ষম হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটি আরও স্বাধীন ও কার্যকর হবে, এটাই সবার প্রত্যাশা। তবে দুর্নীতিবিরোধী এ সংস্থাটির কার্যক্রম কমে গেছে। জানা গেছে, দুর্নীতিবাজদের দমনে দুদক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। সংস্থাটিতে গত বছর দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে ১৫ হাজার ৪৩৭টি। এর মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশই যাচাই-বাছাই কমিটি অনুসন্ধানের জন্য আমলে নেয়নি। অনুসন্ধান শেষে মামলা করা হয়েছে ৪০৪টি। এ পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে তুলেছে যে,দুর্নীতি দমনে সরকার জিরো টলারেন্স নীতির কথা বললেও তা কার্যকর হচ্ছে না। বিষয়টি দুঃখজনক। অবশ্য দুদকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসাবে দুদক দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন নানা সোর্স থেকে দুদক কার্যালয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। সেগুলো নিয়ম অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়ায় পর্যবেক্ষণ,যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে জমা অনেক অভিযোগ তফশিলভুক্ত না থাকায় অনুসন্ধানের জন্য আমলে নেওয়া যায় না। এটা সত্য, দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার চেয়ে অভিযোগ জমা পড়ে বেশি। আবার সংস্থাটিতে এমন অভিযোগও জমা পড়ে যেগুলো দুদকের এখতিয়ারভুক্ত নয়। দুদক সূত্রই বলছে, যেসব মানুষ অভিযোগ জমা দেন, তারা সংস্থাটির তফশিলভুক্ত অপরাধের বিষয়ে সচেতন নন। অনেকে অভিযোগ লেখার ক্ষেত্রেও ভুল করেন। অনেক অভিযোগের কোনো ভিত্তিই থাকে না। তাই সবারই জানা উচিত, কমিশন আইনে তফশিলভুক্ত অপরাধের মধ্যে রয়েছে-সরকারি দায়িত্ব পালনকালে সরকারি কর্মচারী, ব্যাংকারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত যে কোনো ব্যক্তির উৎকোচ-উপঢৌকন নেওয়া। সরকারি কর্মচারীদের নামে-বেনামে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, সরকারি অর্থসম্পদ আত্মসাৎ ও ক্ষতিসাধন, সরকারি কর্মচারীর উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করা। কোনো অপরাধীকে শাস্তি থেকে রক্ষার চেষ্টা, কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনকল্পে সরকারি কর্মচারী কর্তৃক আইন অমান্য করা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর অধীনে সংঘটিত অপরাধ, সরকারি কর্মচারী কর্তৃক জালিয়াতি ও প্রতারণা। দুদকে অভিযোগ দায়েরের আগে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন।