ডলার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে ব্যবসার নিভু নিভু অবস্থা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৩:৩৬, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

ডলার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে ব্যবসার নিভু নিভু অবস্থা

newsup
প্রকাশিত এপ্রিল ৪, ২০২৪
ডলার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে ব্যবসার নিভু নিভু অবস্থা

ডেস্ক নিউজঃ চলমান ডলার সংকট, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ব্যবসা এখন নিভু নিভু হয়ে জ্বলছে। এছাড়া ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যা বিনিয়োগের জন্য সহায়ক নয় বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪৪তম সভায় এই দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এনবিআর ও এফবিসিসিআইয়ের যৌথ উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ের ভোগান্তি ও সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে তা সমাধানের দাবি তোলা হয়েছে। সমাধান দিতে না পারলে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের এক্সিট পলিসি (ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া) করে দেওয়ার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

অনুষ্ঠানে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা ব্যবসা এবং বিনিয়োগের পরিপন্থি। অগ্রিম আয়কর সমন্বয়ের অভাবে করপোরেট করহার ১২ শতাংশে থাকছে না। সেটা বেড়ে প্রায় ৩০ শতাংশে চলে যাচ্ছে। এআইটি নেওয়া বন্ধ করা অথবা রিটার্ন সমন্বয়ের দাবি জানান তিনি।

আমদানি-রপ্তানির সব ক্ষেত্রে জরিমানার মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জরিমানা করলে কর্মকর্তাদের পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়। এতে স্বেচ্ছাচারিতা বৃদ্ধি পায়। তাই এই পুরস্কার থেকে সরে আসার পরামর্শ দেন তিনি।

বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ডলার সংকট, গ্যাস বিদ্যুতের সংকটের কারণে ব্যবসা এখন নিভু নিভু হয়ে জ্বলছে। ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য এক্সিট পলিসি দিন।

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন ইএফডি মেশিনের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের বিভিন্ন মার্কেটে ইএফডি বসানো হয়েছে। ডিসকাউন্টে বিক্রি করলেও মূল টাকার উপরই ভ্যাট দিতে হচ্ছে।

রিহ্যাব সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন কমানো ও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করার প্রস্তাব করেছেন।

এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এনবিআরকে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক সংক্রান্ত ৩৮১টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের ওপর থেকে করের বোঝা কমানো, আমদানিকৃত কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্যসহ শিল্প উপকরণের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর (এআইটি), আগাম কর (এটি) প্রভৃতি প্রত্যাহার, ব্যাংক ঋণের সুদহার হ্রাসসহ আমদানি পণ্যের যথাযথ শুল্কায়ন এবং পণ্য খালাসের জটিলতা দূর করতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন বাস্তবায়নের প্রস্তাব তুলে ধরেন মাহবুবুল আলম। পাশাপাশি কর হার কমিয়ে আয়কর ও মূসকের আওতা সম্প্রসারণ করে রাজস্ব আয় বাড়ানো, সক্ষম ব্যক্তিদের করের আওতায় আনার মাধ্যমে ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি এবং রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে স্থানীয় বাজার থেকে সংগৃহীত পণ্য, কাঁচামাল ও সেবা ক্রয়কে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বর্তমান সরকার বেসরকারি খাতকে সঙ্গে নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো আগামী জাতীয় বাজেটে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান জানান, দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করতে রপ্তানি বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

ব্যবসায়ীরা কর ন্যায়পাল নিয়োগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, কর ন্যায়পাল নিয়োগের বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকার ও ব্যবসায়ী সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় বাজেটকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে খাতভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং যৌক্তিক প্রস্তাবনাগুলো বাজেটে তুলে ধরতে কাজ করছে এনবিআর। ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনো অসন্তোষ থাকলে সেগুলো সমাধানে এনবিআর কাজ করবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।