নিউজ ডেস্ক: সব কারখানায় ১৫ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতিতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিধান রেখে বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত জানান। পরে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রম আইন সংশোধন বিল পাস না হওয়া পর্যন্ত অংশীজনদের কিংবা যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা শ্রমিক অধিকারের কথা বলে, তাদের কথা শোনা হবে। কারণ, আমরা দেখব, আমাদের দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুযায়ী যে শ্রমিক অধিকার রক্ষা করা হয়, তার সঙ্গে অংশীজনদের পরামর্শের কোনো পার্থক্য আছে কি না।’
সভায় আইএলওর পরামর্শ কী ছিল, জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘তাদের একটি পরামর্শ হচ্ছে, থ্রেশহোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতির হার) কমিয়ে আনা। আমরা আগে এই থ্রেশহোল্ড ২০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু সেটা যে কারখানায় তিন হাজার বা তার চেয়ে বেশি শ্রমিক আছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়ার কথা। কিন্তু এখন সব কারখানার জন্য এই ১৫ শতাংশ থ্রেশহোল্ড রাখা হয়েছে।’ অর্থাৎ ১৫ শতাংশ শ্রমিকেরা রাজি হলেই তারা একটি ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে পারবে। আইএলওর এ পরামর্শ মেনে নিয়ে তা সংশোধিত শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইএলও সারা বিশ্বের শ্রমিকদের একটি সংগঠন। সেখানে সব সময় শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে তাদের সব সময় বক্তব্য থাকে। সেই সব বক্তব্য তাঁরা (মন্ত্রী) শুনছেন এবং বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন। তাদের সঙ্গে দর–কষাকষির মধ্যে নেই।
আনিসুল হক বলেন, আইনটি সংশোধনের প্রাথমিক পর্যায়ে সারা বিশ্বে শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার উত্তম চর্চাগুলো (বেস্ট প্র্যাকটিসেস) অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ চেষ্টায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার একটি অবদান আছে। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও সুরক্ষার জন্য যার যার কথা শোনার, সেটা তাঁরা শুনবেন। আগামী ১২ মে আইনটি সম্পূর্ণ করার জন্য একটি সভার আয়োজন করা হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পরিচালনা পর্ষদে বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার নিয়ে কিছু দেশ ২০১৯ সালে নালিশ করেছিল। সেই নালিশের পরে বহুবার আইএলওর পরিচালনা পর্ষদকে বলেছেন, শ্রমিকদের অধিকার দেশে কেবল রক্ষাই হয়নি, শ্রমিকদের অধিকার আরও সুদৃঢ় হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের বিরুদ্ধে অহেতুক যে নালিশ করা হয়েছে, সেটা শেষ হওয়া উচিত।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।