গাজা যুদ্ধে তুরস্কের বাণিজ্য অবরোধের প্রভাব - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, দুপুর ২:১৩, ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

গাজা যুদ্ধে তুরস্কের বাণিজ্য অবরোধের প্রভাব

banglanewsus.com
প্রকাশিত মে ৮, ২০২৪
গাজা যুদ্ধে তুরস্কের বাণিজ্য অবরোধের প্রভাব

মাসুম খলিলী ::: গাজায় যুদ্ধ পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির মুখে তুরস্ক ইসরাইলের ওপর সর্বাত্মক বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করেছে। বলছে, ইসরাইলি সরকার গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত আমদানি ও রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তেলআবিব তুরস্কের ওপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তুরস্কের নিষেধাজ্ঞা জারির পর কয়েক দিন যেতে যেতে না যেতেই ইসরাইলের মন্ত্রিসভা রাফায় গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর স্থল অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ওআইসি ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু তা কার্যকর করতে সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোর উদ্যোগ এখনো দেখা যাচ্ছে না।
বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় চাপ

বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার দাবি তুরস্কে অনেক আগেই উত্থাপিত হয়। এ ব্যাপারে বিলম্বে নেয়া সিদ্ধান্তে ইসরাইল যেমন চাপে পড়বে তেমনি চাপে পড়বে আঙ্কারাও। গত বছর তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যে ব্যবসায়িক চুক্তি ছিল প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের। ইসরাইল সরকার গাজায় নিরবচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত মানবিক সাহায্য প্রবাহের অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত তুরস্ক কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করবে বলে উল্লেখ করেছে। এর আগে অবরোধের প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশের সময় ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাটজ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোগানের বিরুদ্ধে ‘স্বৈরশাসকের’ মতো আচরণ করার অভিযোগ করেন। কাটজ বলেন, এরদোগান তুর্কিয়ে জনগণ এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি উপেক্ষা করছেন। তিনি অবিলম্বে তুরস্কের সাথে বাণিজ্যের বিকল্প তৈরি, স্থানীয় উৎপাদন এবং অন্যান্য দেশ থেকে আমদানির জন্য ইসরাইলি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

গত মাসে, তুরস্ক ঘোষণা করে যে তারা ইসরাইলে অ্যালুমিনিয়াম, ইস্পাত, নির্মাণ পণ্য ও রাসায়নিক সারসহ ৫৪ ধরনের পণ্য রফতানি সীমাবদ্ধ করছে। ইসরাইল তার নিজস্ব বাণিজ্য বাধা ঘোষণা করে প্রতিক্রিয়া জানায়। এরপর তুরস্ক প্রথমবারের মতো একটি দেশের ওপর এত ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করেছে। তুরস্কের সব বন্দর ও বাণিজ্য এলাকা ইসরাইলের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর এক ধাপ পরে; তুর্কিয়ে আকাশসীমা, দারদানেলিস এবং বসফরাস প্রণালীও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই পদক্ষেপগুলো এই অঞ্চলে ইসরাইলি উপস্থিতির জন্য একটি ঐতিহাসিক প্রশ্নের সূচনা করবে এবং একটি নতুন ‘অস্তিত্বগত সঙ্কট’ সৃষ্টি করবে।

ইসরাইল হুথি অবরোধের কারণে ইতোমধ্যেই লোহিত সাগর থেকে সরবরাহ সমস্যায় ভুগছে। ইসরাইলি জাহাজে হামলার কারণে এই জায়গাটি তেলআবিব ব্যবহার করতে পারে না। অন্য দেশের পতাকা নিয়ে তার জাহাজগুলো পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশের সহযোগিতায় তারা এই ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে চাইছে। তুরস্কের এই উদ্যোগ অন্য দেশের কাছে উদাহরণ হয়ে ইসরাইলের সব ‘ভূমি বাণিজ্য করিডোর’ বন্ধ করা হলে তা রাফা গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা হতে পারত। মুসলিম বিশ্বের বাইরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিক্ষোভ বাড়ছে, অনেক দেশের প্রতিক্রিয়া ক্রমেই বাড়ছে। এর বাইরে, কলাম্বিয়াসহ বেশ কিছু দেশ ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এ অবস্থায় বাণিজ্য করিডোর বন্ধ করা এবং সবশেষে তুরস্কের ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের জন্য অনেক বড় চাপ তৈরি করছে। মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে এমন চাপ দিতে পারলে তা জায়নবাদীদের পতনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে।

আরো ফ্রট খুলতে পারে
ফক্স নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে তুরস্কের লড়াইয়ের এই পদক্ষেপটি মাত্র একটি ফ্রন্ট। তুরস্ক আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা মামলায় হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইসরাইলি সংবাদপত্র মারিভ বলেছে, মিষ্টি এবং টিনজাত খাবার থেকে শুরু করে শাকসবজি এবং ফল পর্যন্ত আপনি যা কিছু ভাবতে পারেন তা তুরস্ক থেকে আসে। আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো তুরস্কে সমবেত হয়। টয়োটা করোলা তুরস্কে একত্রিত হয়েছে আর এখন বলা হচ্ছে যে, তাদের পক্ষে ইসরাইলে গাড়ি পাঠানো সম্ভব নয়। গাজায় এখন সম্পূর্ণ গণহত্যা চলছে। ইসরাইল আক্ষরিক অর্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্রদের সমর্থনপুষ্ট হয়ে ‘মুসলিম গণহত্যা’ চালাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে, তা গাজা ছাড়িয়ে যেতে এবং ভূগোলজুড়ে এর মর্মান্তিক পরিণতি সৃষ্টি হতে পারে।

কামাল থেকে এরদোগান
তুরস্ক ছিল প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ যেটি কামাল আতাতুর্কের সময় ১৯৪৯ সালে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়। এরদোগানের সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরাইলের ফিলিস্তিনিদের হত্যার কারণে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়েছে।

৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে ইসরাইল গাজাকে টার্গেট করার পর, তুরস্ক সক্রিয়ভাবে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কূটনীতি অনুসরণ করে ইসরাইলকে সংযত করতে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। হামাসের অপারেশন আকসা তুফানে উদ্ভূত এই প্রক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যে তার বিদেশী নীতিকৌশল এবং পরিকল্পনার ব্যাপক পুনর্মূল্যায়ন করতে তুরস্ককে বাধ্য করে। ৭ অক্টোবরের আগে, দুটি প্রাথমিক ভূ-রাজনৈতিক আখ্যান ২০২৩ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর উদীয়মান বৈদেশিক নীতির রূপকল্পকে প্রভাবিত করেছিল। প্রথম আখ্যানটি ইয়েমেন থেকে তুরস্ক পর্যন্ত একটি বিস্তৃত ভৌগোলিক এলাকাজুড়ে স্বাভাবিকীকরণের উচ্চারিত প্রবণতাকে কেন্দ্র করে। এই কাঠামোর মধ্যে, ইয়েমেনি সঙ্ঘাতের সমাধানের লক্ষ্যে সৌদি আরব এবং হুথিদের মধ্যে আলোচনা, সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে একটি চুক্তির অগ্রগতি হয়েছে এবং তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় আখ্যানটি দ্রুত বিকশিত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক ল্যান্ডস্কেপে তুরস্ককে অবস্থান করার জন্য একটি ব্যাপক বৈদেশিক নীতিকৌশলকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, এই কৌশলটি নিরাপত্তা-চালিত নীতিগুলো থেকে দূরে সরে যেতে চেয়েছিল যা আরো সহযোগিতামূলক নিরাপত্তাপদ্ধতির দিকে বৈদেশিক সম্পর্ককে নিয়ে যেতে চাপ দেয়। ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর উভয় কৌশলই উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়, যা আঙ্কারাকে গাজা ও তার পরবর্তী আঞ্চলিক সঙ্কটের দিকে মনোযোগ দিতে বাধ্য করে। এর জন্য তুরস্কের বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকার ও কৌশলগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন হয়। পশ্চিমা এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর অস্পষ্ট অবস্থানের কারণে গাজায় যুদ্ধ থামাতে তুরস্কের প্রচেষ্টা সফল হয়নি। এই সময়ের মধ্যে, আঙ্কারা হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা গ্রহণ করে। তবে এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যায়নি। পরবর্তীকালে, সঙ্কট শুরুর এক মাস পর ওআইসির সম্মেলন ডাকা হয়। তবে এর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নিন্দা প্রকাশের মধ্যেই সীমিত ছিল।

এই পুরো সময়জুড়ে, আঙ্কারা ইসরাইলের ওপর চাপ প্রয়োগের লক্ষ্যে শক্তিশালী আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক চ্যানেল স্থাপনের চেষ্টা করে। গাজার কন্টাক্ট গ্রুপ ইসরাইলকে সংযত করা এবং যুদ্ধবিরতির জন্য সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে পশ্চিমা রাজধানীগুলোকে একত্রিত করার প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেয়। এই সমন্বিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি স্বল্পস্থায়ী হয়।
সঙ্কটের শুরুতে তুরস্কের গ্যারান্টার রাষ্ট্র হওয়ার প্রস্তাব সত্ত্বেও, এটি পশ্চিমা শক্তি বা আঞ্চলিক দেশগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। আঙ্কারা প্রস্তাবিত গ্যারান্টার প্রক্রিয়ার অপারেশনাল ফ্রেমওয়ার্ক, অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এবং সামরিক বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করার জন্য কাজ করে। সঙ্কট বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ইসরাইলের প্রতি তুরস্কের অবস্থান আরো কঠোর হয়।

প্রাথমিকভাবে, তুরস্ক তার রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে, জ্বালানি আলোচনা স্থগিত করে এবং হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার পশ্চিমা প্রবণতার বিরোধিতা করে আন্তর্জাতিকভাবে তার অবস্থান দৃঢ় করে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইস্তাম্বুলে হামাসের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে আরো একধাপ এগিয়ে এ বিষয়ে তুর্কিয়ের অবস্থান স্পষ্ট করেন। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ছিল যুদ্ধবিরতির ভিত্তি স্থাপন করা এবং ক্ষমতাধর মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করা। গাজা শাসনকারী প্রতিরোধ সংগঠন হামাস পুরো প্রক্রিয়া এবং সর্বশেষ সিদ্ধান্তকে সাহসী এবং ফিলিস্তিনি অধিকারের সমর্থনকারী বলে প্রশংসা করেছে। হামাস বলেছে, তুরস্কের বাণিজ্য অবরোধ ফিলিস্তিনি অধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রতি তুর্কিয়ে জনগণের দীর্ঘকালীন সমর্থনের সাহসী প্রতিফলন।

ইসরাইলি লবির তৎপরতা
তুরস্কের নতুন পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় হয়ে উঠেছে আইপ্যাক বা ইসরাইলি লবি। এই লবির সদস্য ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্র্যাসিস-এর অনাবাসী সিনিয়র ফেলো সিনান সিদ্দি বলেছেন, আমেরিকান কংগ্রেসকে অবশ্যই তুরস্ককে নিরস্ত করতে এবং ‘সন্ত্রাসীদের’ (পড়–ন হামাসকে) ভরণপোষণ দেয় এমন একটি ভণ্ডামিপূর্ণ বয়কট সম্প্রসারিত করে অন্য দেশগুলোকে তার নেতৃত্ব অনুসরণ করা থেকে বিরত রাখতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। ইতোমধ্যেই, বেশ কয়েকজন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যও গাজা সঙ্ঘাত উদ্দীপ্ত করতে তুরস্কের আরো প্রচেষ্টা প্রতিরোধে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

আঙ্কারার বয়কট ঘোষণার পর, ইসরাইল লবি বলছে, তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কংগ্রেস সিস্টেমিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে এরদোগানের সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি আইনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের সুপারিশ করতে পারে। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ইরানের পক্ষে তুরস্কের নিষেধাজ্ঞা ফাঁকি দেয়ার জন্য পূর্বে প্রয়োগ করা অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষের অধীনে তুর্কিয়ে ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে। তুরস্ক যদি রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চালু করে, তাহলে ট্রেজারি কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাভারসারিজ থ্রু স্যাংশনস অ্যাক্ট (কাটসা)-এর অধীনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরও এরদোগানের মূল্যবান জ্বালানি প্রকল্পে সহযোগিতা স্থগিত করতে পারে। অবশেষে, আঙ্কারা তার অবস্থান পরিবর্তন না করা পর্যন্ত বাইডেন প্রশাসন ৭০টি এফ-১৬ ফাইটার এবং আধুনিকীকরণ কিট সরবরাহ করতে বিলম্ব করতে পারে। এর আগে বাণিজ্য অবরোধের প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতিতে আঙ্কারার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেবে বলে উল্লেখ করা হয়। একই সাথে ইসরাইলের সাথে বাণিজ্য চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক ফোরামে আবেদন করবে বলেও জানানো হয়।

তুরস্কের বাণিজ্য অবরোধ পদক্ষেপের বিষয়ে ওইসিডি প্রধান ম্যাথিয়াস কোরম্যানের কাছে অভিযোগ দেন ইসরাইলের অর্থনীতিমন্ত্রী নীর বারকাত। ওইসিডি প্রধানের সাথে একটি বৈঠকে, বারকাত অভিযোগ করেন যে এরদোগান একজন ‘সাম্প্রদায়িক স্বৈরশাসক’ এবং এই সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে সমুদ্র বাণিজ্য আইন লঙ্ঘন করে এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহের ধারাবাহিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

এরদোগান বলেছেন, আমরা আমাদের অঞ্চলে শত্রুতা বা সঙ্ঘাতের পেছনে দৌড়াই না। আমরা আমাদের ভূগোলে সঙ্ঘাত, রক্ত বা অশ্রু দেখতে চাই না। আমরা এখন জানি যে আমরা সঠিক কাজ করেছি। এরদোগান যে পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটি সফল করার জন্য অন্য আরব-অনারব মুসলিম দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে ইরান ও তার প্রতিরোধ অক্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সৌদি আরব ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে চাপ না দিলে গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকানো কঠিন হতে পারে। এতে ব্যর্থ হলে যাদের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা হুমকির শিকার হবে তাদের মধ্যে সামনের সারিতে থাকবে মিসর, জর্দান, সিরিয়া, লেবানন ও সৌদি আরব।

mrkmmb@gmail.com

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।