ঈদুল আযহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
০৭ জুন ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট: ঈদুল-আজহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যে পশু জবাই করা হয়, তাকে ‘কুরবানি’ বলা হয়। কুরবানির শাব্দিক অর্থ ত্যাগ। ১০ জিলহজ ঈদুল-আজহা পালন করা হয়। পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত পরম আনন্দের একটি দিন। সারা বিশ্বের মুসলমান ঈদুল আজহায় মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও করুণা লাভে গৃহপালিত পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। মহান আল্লাহর কাছে হজরত ইবরাহিম আ:-এর পূর্ণ আত্মসমর্পণ ও হজরত ইসমাইল আ:-এর সুমহান ত্যাগের স্মৃতিবিজড়িত পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির মহিমা আমাদের অন্তর্লোকের সঙ্কীর্ণতা ধুয়ে দেয়। ইসলামের এ মহান চেতনা ধারণ করে ত্যাগ, ধৈর্য ও তিতিক্ষার ভেতর দিয়ে পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষায় আমরা ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনকে গৌরবান্বিত করে তুলতে পারি। কুরবানি সুন্নাতে ইবরাহিমি-কুরবানি ইবাদত হিসাবে যদিও আদম (আ.)-এর যুগ থেকে হয়ে আসছে; কিন্তু পরবর্তী সময়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর একটি ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে শুরু হয়েছে। কোনো কোনো বর্ণনা মতে, এ স্বপ্ন তিনি পরপর তিন রাত দেখেন। স্বপ্নে তিনি একমাত্র প্রিয়পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানি করতে আদেশপ্রাপ্ত হন। এ সময় ইসমাঈল (আ.)-এর বয়স ছিল তের বছর। কেউ কেউ বলেছেন, তিনি তখন বয়ঃপ্রাপ্ত হয়েছেন। ঈদুল-আজহার গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন-হাদিসে এ ব্যাপারে যথেষ্ট তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, কুরবানির পশুগুলোকে তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্তর্ভুক্ত করেছি। এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। ইসলামের এই ‘মহান নিদর্শন’, যা ‘সুন্নাতে ইব্রাহিম হিসাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে মদিনায় প্রতিবছর আদায় করেছেন এবং সাহাবিরাও নিয়মিতভাবে কুরবানি করেছেন। অতঃপর অবিরত ধারায় মুসলিম উম্মাহর সামর্থ্যবানদের মধ্যে এটি চালু আছে। আমাদের দেশে কোরবানির ঈদে নতুন করে সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়। গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন পাড়া বা গোষ্ঠীভিত্তিক সক্সঘবদ্ধ হওয়ার চিত্র লক্ষ করা যায়। ঈদুল আজহা এলেই তারা সব ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে যায়। নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডেও তাদের এ সক্সঘবদ্ধতার প্রভাব বিদ্যমান থাকে। নিজেদের আনন্দে অন্যান্যের শরিক করা ঈদুল আজহার শিক্ষা। কোরবানিকৃত পশুর গোশত তিন অংশে ভাগ করে এক অংশ নিজের জন্য সংরক্ষণ, দ্বিতীয় অংশ আত্মীয়-স্বজনকে প্রদান এবং তৃতীয় অংশ সমাজের অভাবগ্রস্ত ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া ইসলামের বিধান। আল্লাহতায়ালা কোরবানির পশুর গোশতের একটি অংশ দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষকে দান করার নির্দেশ দিয়েছেন। (আল কুরআন, সূরা হজ : ২৭, ২৮, ৩৬) শরিয়তের পরিভাষায়- আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে জিলহজ মাসের ১০, ১১, ১২ এই তিন দিনে আল্লাহর নামে নির্দিষ্ট নিয়মে হালাল পশু জবাই করা হলো কোরবানি। ত্যাগ, তিতিক্ষা ও প্রিয় বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করা কোরবানির তাৎপর্য।
সুত্র:এফএনএস ডটকম