ব্রেন টিউমারের যত লক্ষণ - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৩:৩৮, ১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

ব্রেন টিউমারের যত লক্ষণ

banglanewsus.com
প্রকাশিত জুলাই ২৭, ২০২৪
ব্রেন টিউমারের যত লক্ষণ

ব্রেন টিউমার মস্তিষ্কের জটিল রোগের একটি। ব্রেন টিউমার হতে পারে যেকোনো বয়সী মানুষের। শিশুদের ব্রেন টিউমার হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত হলে এবং সময়মতো ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা নিলে এ রোগ ভালো হয়। ব্রেন টিউমারের লক্ষণসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোমেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সবুজ। ব্রেন টিউমার নিয়ে ডা. মো. শহীদুল্লাহ সবুজ বলেন, মানুষের দেহে কোষগুলো নির্দিষ্ট নিয়মে বিভাজিত হয়। ব্রেন টিউমার হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে মস্তিষ্কের কোষে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিভাজন দেখা যায়। মস্তিষ্কে রয়েছে দুটি আলাদা প্রকোষ্ঠ। ওপরের অংশ ও নিচের অংশে বিভক্ত এই দুটি প্রকোষ্ঠ-টেনটোরিয়াম নামক একটি পর্দা দ্বারা আলাদা থাকে। দুই প্রকোষ্ঠের যেকোনোটিতে টিউমার হতে পারে। পূর্ণ বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে ওপরের প্রকোষ্ঠে টিউমারে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। আর শিশুদের ক্ষেত্রে নিচের প্রকোষ্ঠে টিউমার বেশি দেখা যায়।
লক্ষণ ও উপসর্গ
তীব্র মাথাব্যথা
রঙ চিনতে অসুবিধা হওয়া
চোখে ঝাপসা বা ঘোলা দেখা
কখনো কখনো রোগী অন্ধও হয়ে যেতে পারে
হাঁটার সময় মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া
শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া
কথা বলায় অস্পষ্টতা
কখনো শরীরে খিঁচুনি হতে পারে। ব্রেন টিউমারের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত একজন নিউরোমেডিসিন বা নিউরোসার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে হবে। ব্রেনের সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই ব্রেন টিউমার নির্ণয়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট। স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা দেখার জন্য ইলেকট্রোএনকেফালোগ্রাফি বা ইইজি টেস্ট করা হয়। স্নায়ুতন্ত্রের পরিবহনক্ষমতা জানতে ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি টেস্টের প্রয়োজন হয়। সিটি গাইডেড এফএনএসি হলো যেকোনো টিউমার বা ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ে অত্যন্ত নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা। এ ছাড়া স্টেরিওস্কোপিক বায়োপসি টেস্টে নির্ভুল রোগ নির্ণয়ের জন্য আক্রান্ত কোষের কিছু অংশ কেটে বের করে বিশেষ স্টেইনের মাধ্যমে মাইক্রোস্কোপের নিচে পরীক্ষা করা হয়। ব্রেন টিউমার নির্ণয়ে অত্যন্ত আধুনিক ও কার্যকর আরেকটি পদ্ধতি নিউরো নেভিগেশন অ্যাসিস্ট্যাড সার্জারি।
ধরন: টিউমার প্রধানত দুই প্রকার। একটি হচ্ছে ম্যালিগন্যান্ট বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমার এবং অন্যটি বিনাইন টিউমার। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমারকে আবার প্রাইমারি টিউমার এবং সেকেন্ডারি বা মেটাস্ট্যাসিস টিউমার এ দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা: ব্রেন টিউমারের সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মানব শরীরে কিছু টিউমার সাপ্রেসর জিন থাকে, যা টিউমার হওয়ার প্রক্রিয়াকে প্রতিরোধ করে। কোনো কারণে এ জিনগুলো যদি ঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে ব্রেন টিউমার হতে পারে। ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা নির্ভর করে এর অবস্থান, ধরন, তীব্রতা ও আকারের ওপর। প্রয়োজন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে কখনো সার্জারির মাধ্যমে টিউমার অপসারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে ব্রেন টিউমারের অস্ত্রোপচার করা হয়। এন্ডোস্কপি আরেকটি অত্যাধুনিক অস্ত্রোপচার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে খুলি না কেটে নাকের ছিদ্র দিয়ে পিটুইটারি টিউমারের অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার বা সার্জারির মাধ্যমে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্রেন টিউমার সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব। তবে তা নির্ভর করে টিউমারের ধরন ও অবস্থানের ওপর। কিছু ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপিরও প্রয়োজন হতে পারে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসা কার্যক্রম তুলনামূলক সহজ হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।